রেকর্ড উৎপাদন বিদ্যুতে তবুও ভোগান্তি

বিদ্যুতের উৎপাদন বাড়ছে ক্রমে। বিদ্যুৎ বিভাগের পক্ষ থেকে বলা হয় শূন্য লোডশেডিংয়ের কথা। কিন্তু রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে দিনে কয়েক ঘণ্টার লোডশেডিং হচ্ছে প্রতিনিয়ত। যদিও বিদ্যুৎ বিভাগ কারিগরি ও যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে এই বিভ্রাট হচ্ছে বলে ব্যাখ্যা দিয়ে আসছে। এদিকে গতকাল বিদ্যুৎ বিভাগের পক্ষ থেকে দেখানো হয় দিনে সারা দেশে কোথাও লোডশেডিং নেই। কিন্তু দিনভর রাজধানীর বড় একটি অংশের গ্রাহকদের ছিল দীর্ঘ ভোগান্তি। কিছু এলাকায় টানা কয়েক ঘণ্টা বিদ্যুৎ ছিল না। রাজধানীর বাইরের বেশ কিছু এলাকায়ও এমন লোডশেডিংয়ের খবর পাওয়া গেছে। ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি ডিপিডিসি সূত্র জানিয়েছে, রাজধানীর ধানমন্ডি, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ, রমনা ও পুরানা পল্টন, পরিবাগ, কাওরান বাজার এলাকায় দুপুরের পর থেকে বিদ্যুৎ গ্রাহকরা ভোগান্তিতে ছিলেন। বেলা ১টার দিকে ডিপিডিসির আওতাধীন ধানমন্ডি এলাকায় দুটি ট্রান্সফরমার নষ্ট হয়ে যাওয়ায় আশপাশের এলাকা বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়ে। এছাড়া রামপুরা থেকে ধানমন্ডি পর্যন্ত উলন গ্রিডের একটি সার্কিট নষ্ট হয়ে যায়। এ কারণে রাজধানীর পুরানা পল্টন, রমনা, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ ও তার আশপাশের এলাকা এবং ধানমন্ডির বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুৎ বিভ্রাট সৃষ্টি হয়। কোন কোন এলাকায় টানা চার থেকে পাঁচ ঘণ্টা বিদ্যুৎ ছিল না। এছাড়া অন্য এলাকায় একটু পরপর বিদ্যুৎ আসা-যাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ বিষয়ে কাকরাইল জোনের উপ সহকারী প্রকৌশলী আবদুল কাদের বলেন, ধানমন্ডি গ্রিডের দুটি ও উলন গ্রিডের একটি সার্কিট ট্রিপ করায় পুরো ডিপিডিসি এলাকায় বিদ্যুৎ সমস্যা দেখা দেয়। রাতে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বিদ্যুৎ বিভ্রাট অব্যাহত ছিল। এদিকে রাজধানীর এসব এলাকার বাসিন্দারা দুপুরের পর থেকে ভোগান্তিতে পড়েন। কাওরান বাজার এলাকায় সকাল থেকে সন্ধ্যার পর পর্যন্ত অন্তত আট থেকে ১০ বার লোডশেডিং হয়। ওই এলাকার একটি বাণিজ্যিক ভবনের জেনারেটর অপারেটর আবদুর রহিম বলেন, সকাল থেকে আট থেকে ১০টার জেনারেটর চালু করেছি। এদিকে বিদ্যুৎবিভ্রাটের কারণে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালসহ আশপাশের এলাকার বিভিন্ন হাসপাতালের রোগীরা ভোগান্তিতে পড়েন। ডিপিডিসি সূত্র জানায়, ঢাকা মেডিক্যালে বিকল্প ব্যবস্থায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করলেও সেখানেও কয়েক দফায় লোডশেডিং হয়েছে।
এদিকে রংপুর থেকে স্টাফ রিপোর্টার জানান, সিটি এলাকাসহ আশপাশের এলাকায় দিনে অন্তত তিন থেকে চারবার লোডশেডিং হয়। অনেক সময় রাতেও বিদ্যুৎ থাকে না। গাইবান্ধা থেকে উত্তরাঞ্চল প্রতিনিধি জানান, দিন-রাতে ১০ থেকে ১২ বার ওই এলাকায় লোডশেডিং হয়।
এদিকে চট্টগ্রাম থেকে স্টাফ রিপোর্টার জানান, রেকর্ড পরিমাণ বিদ্যুৎ উৎপাদন হলেও লোডশেডিং বন্ধ হয়নি। পিডিবির কর্মকর্তারা একে লোডশেডিং না বলে কারিগরি ক্রটি বলে দাবি করে আসছেন। বিভিন্ন এলাকার গ্রাহকরা অভিযোগ করেছেন, দিনে অন্তত তিন থেকে চার ঘণ্টা লোডশেডিং হয় ওইসব এলাকায়।
বিদ্যুৎ বিভাগের লোড ডেসপাচ সেন্টারের তথ্য অনুযায়ী গতকাল সারা দেশে কোন লোডশেডিং ছিল না। আগের দিন দেশে রেকর্ড পরিমাণ বিদ্যুৎ উৎপাদন হয় ৭৬৬৮ মেগাওয়াট। এদিকে গতকাল সর্বোচ্চ চাহিদা দেখানো হয় ৭৭০০ মেগাওয়াট। এ দিন কোন লোডশেডিং ছিল না বলেও বিদ্যুৎ বিভাগের পক্ষ থেকে জানানো হয়।

No comments

Powered by Blogger.