পরবর্তী ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কে?

আগামী ৭ মে ব্রিটেনের ১৮তম সাধারণ নির্বাচন। বৃহস্পতিবারের ওই নির্বাচনে কে হতে যাচ্ছেন পরবর্তী ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী? প্রতিদ্বন্দ্বিতার তালিকায় রয়েছেন অনেকে। কনজারভেটিভ ও লেবার পার্টির দ্বিদলীয় প্রভাব থেকে বেরিয়ে এখন উদ্ভব হয়েছে বহু দল ও গোষ্ঠীর। ধারণা করা হচ্ছে কোনো দলই একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে না। তখন জোট করতে হবে ছোট দলগুলোর সঙ্গে। নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী প্রধান প্রধান দল ও নেতার পরিচয় এখানে তুলে ধরা হল-
ডেভিড ক্যামেরন- কনজারভেটিভ পার্টি : ডেভিড ক্যামেরন (৪৮) ব্রিটেনের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী। ২০১০ সালে লেবার পার্টির গর্ডন ব্রাউনের পর সর্বকনিষ্ঠ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ব্রিটেনের হাল ধরেন তিনি। সেই নির্বাচনে তার দল কনজারভেটিভ পার্টি একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি। বাধ্য হয়ে তৃতীয় বৃহত্তম দল লিবারেল ডেমোক্রেটের সঙ্গে জোট করে। এটোন ও অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ক্যামেরনের বাবা ছিলেন স্টকব্রোকার ও মা ছিলেন একজন বিচারক। ক্ষমতায় আসার আগে ক্যামেরন প্রতিশ্র“তি দিয়েছিলেন ব্রিটেনের আমলাতান্ত্রিক জটিলতা কমিয়ে ‘কমিউনিটি ক্ষমতায়ন’ করবেন। কিন্তু অর্থনীতির হাল ধরতে ও মধ্যপ্রাচ্যের অস্থিরতায় ওই প্রতিশ্র“তি পূরণের ব্যর্থ হয়েছেন তিনি।
নাইজেল ফারাগ- ইউকিপ : ইউনাইটেড কিংডম ইন্ডিপেনডেন্স পার্টির (ইউকিপ) নেতা নাইজেল ফারাগ প্রচণ্ড অভিবাসনবিরোধী। ব্রিটেনকে ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বের করে এনে ইউরোপের সঙ্গে মুক্তবাণিজ্য গড়তে চান তিনি। স্কুল শেষ করে আর কলেজে পড়তে পারেননি ফারাগ। বাবার মতো স্টকব্রোকার ব্যবসা করেন। পরে রাজনীতিতে আসেন।
নাতালি বেনেত- গ্রিন পার্টি : ২০১২ সাল থেকে গ্রিন পার্টির নেতৃত্ব দিচ্ছেন সাংবাদিক নাতালি বেনেত। ‘দ্য ব্যাংকক পোস্ট’, ‘দ্য ইন্ডিপেনডেন্ট’ ও ‘টাইমস অব লন্ডন’ পত্রিকা প্রতিষ্ঠায় কাজ করেছেন তিনি। রাজনীতিতে আসার আগে তিনি ‘গার্ডিয়ান উইকলি’ সম্পাদনা করতেন। অস্ট্রেলিয়া বংশোদ্ভূত নাতালি (৪৯) একজন নারীবাদী কর্মী। ক্ষমতায় এলে ১০ লাখ কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন।
এড মিলিব্যান্ড- লেবার পার্টি : দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের নাজি হত্যাকাণ্ড থেকে পালিয়ে আসা শরণার্থী ইহুদিপুত্র এড মিলিব্যান্ড (৪৫)। ২০১০ সালে তার ভাই আন্তর্জাতিক উদ্ধার কমিটি ও সাহায্য সংস্থার বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডেভিডকে সামান্য ব্যবধানে হারিয়ে বামপন্থী লেবার পার্টির নেতৃত্বে আসেন মিলিব্যান্ড। তার স্ত্রী থরটন একজন পরিবেশবাদী আইনজীবী। মিলিব্যান্ড ব্রিটেনের ‘ক্রমবর্ধমান’ ধনী-গরিব ব্যবধান কমিয়ে আনা ও আবাসন খরচ সহনীয় করতে চান। স্বাস্থ্য খাতে বছরে অতিরিক্ত ৪০০ কোটি ডলার ব্যয়ের ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।
নিক ক্লেগ- লিবারেল ডেমোক্রেটস : ২০০৭ সাল থেকে লিবারেল ডেমোক্রেটসের নেতৃত্ব দিচ্ছেন নিক ক্লেগ (৪৮)। ১৯১৭ সালে রুশ বিপ্লবের সময় তার মা ইংল্যান্ডে এসেছিলেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ব্রিটেনের প্রথম জোট সরকারের (২০১০) ডেপুটি প্রধানমন্ত্রী হন ক্লেগ। কর্মজীবী পিতামাতার সন্তানদের বিনামূল্যে শিশুসেবা, নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও শ্রমিকদের কর কমিয়ে আনতে চায় তার দল। গত পাঁচ বছরে নিু আয়ের মানুষের কর কমিয়ে দেয়া হয়েছে।
লিনে উড- প্লেইড সিমরু : ওয়েলসের রাজনৈতিক দল প্লেইড সিমরুর প্রথম নারী নেতা লিনে উড (৪৩)। যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টে স্কটল্যান্ডের মতো ওয়েলসের ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে ২০১২ সাল থেকে দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন সাবেক বিশ্ববিদ্যালয় প্রভাষক উড।
নিকোলা স্টারজিয়ন- স্কটিশ ন্যাশনাল পার্টি : স্কটল্যান্ডের ফার্স্ট মিনিস্টার নিকোলা স্টারজিয়ন (৪৪) নেতৃত্বাধীন স্কটিশ ন্যাশনাল পার্টি লিবারেল ডেমোক্রেটসকে পেছনে ফেলে ব্রিটেনের তৃতীয় বৃহত্তম দল হিসেবে আবির্ভূত হতে যাচ্ছে বলে সর্বশেষ জরিপে আভাস পাওয়া গেছে। শ্রমজীবী পরিবার থেকে উঠে এসেছেন স্টারজিয়ন। তার বাবা ছিলেন ইলেকট্রিশিয়ান ও মা ছিলেন নার্স। গ্লাসগো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়ালেখা করেছেন স্টারজিয়ন।

No comments

Powered by Blogger.