সালাহ উদ্দিন তাহলে কোথায়? এমনকি গৃহবধূও এখন নিখোঁজের তালিকায়

শুধু সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে দলের কর্মসূচি ঘোষণার একপর‌্যায়ে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমদ সেই যে নিখোঁজ হলেন, ২৯ দিন পার হয়ে গেলেও তাঁর হদিস পাওয়া গেল না। মঙ্গলবার তাঁর স্ত্রী দ্বিতীয় দফা প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎ চেয়েছেন। স্মারকলিপি দিয়েছেন। তাঁর অভিযোগ, ডিএমপি একটি কমিটি গঠন করলেও কোনো উদ্যোগ নেই। প্রত্যক্ষদর্শী ব্যক্তিরা বলছেন, তাঁকে ধরে নিয়ে যাওয়ার সময় আশপাশে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একাধিক গাড়ি ছিল। তা ছাড়া এর আগে তাঁর দুই গাড়িচালক ও ব্যক্তিগত সহকারীকে ডিবি গ্রেপ্তার করেছে। পুলিশ যে হন্যে হয়ে সালাহ উদ্দিনকে খুঁজছিল, তাতে সন্দেহ নেই।
বুধবার প্রথম আলোয় আরেকটি খবর নাগরিকদের চরম উদ্বেগের কারণ হয়ে উঠেছে। রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার এক গ্রামের এক ব্যক্তিকে শুধু নয়, তাঁর স্ত্রী ও তাঁদের গৃহকর্মী নারীকেও র‌্যাবের পরিচয়ে সাদাপোশাকের কিছু লোক উঠিয়ে নিয়ে গেছে। তিন মাস ধরে তাঁরা নিখোঁজ। পরিবারের পুরুষ সদস্যরা এখনো ভয়ে পালিয়ে থাকছেন। এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। র‌্যাব, থানা, পুলিশ নাকি কিছু জানে না। এমনকি থানা মামলাও নেয় না; বরং একটি বাসে পেট্রলবোমা হামলায় ছয়জন নিহত হওয়ার ঘটনায় নাকি র‌্যাব তাঁদের খুঁজছে বলে জানিয়েছে। এই অবস্থায় কে তাঁদের উঠিয়ে নিল, তা যদি র‌্যাবও না জানে, কে জানবে? প্রত্যন্ত কিছু গ্রামে অবস্থা এতটাই খারাপ যে গৃহবধূ ও গৃহকর্মী নারীরাও ‘নিখোঁজ’ তালিকা থেকে বাদ যান না।
এর আগে বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ইলিয়াস আলী ‘নিখোঁজ’ হয়েছেন। প্রায় তিন বছর পার হয়ে গেল। এসব ঘটনায় ‘কিছু জানি না’ বলে র‌্যাব বা পুলিশের দায় এড়ানোর কোনো সুযোগ নেই। দেশে ও বিদেশে এগুলো ‘গুম’-এর মতো অপরাধ হিসেবেই চিহ্নিত হচ্ছে। শত চেষ্টায়ও সরকার এর দায়িত্ব এড়াতে পারে না। কারণ, নাগরিকদের নিরাপত্তা দেওয়া সরকারের অন্যতম দায়িত্ব। ‘নিখোঁজ’ বলে গণতন্ত্রে কিছু থাকতে পারে না।

No comments

Powered by Blogger.