২১ বছরে লঞ্চডুবিতে প্রাণহানি সাত হাজার

১৯৯৪ সাল থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত ২১ বছরে ছোট-বড় মিলিয়ে ৬৫৬টি লঞ্চ দুর্ঘটনায় প্রায় সাত হাজার মানুষের প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। লঞ্চ দুর্ঘটনা প্রতিরোধে সংশ্লিষ্ট সকল মহলকে দায়িত্বশীল হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বিশিষ্টজনেরা। একই সঙ্গে বিভিন্ন সময় সংঘটিত দুর্ঘটনার সঠিক কারণ উদঘাটনপূর্বক প্রকৃত অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছেন তারা।
বুধবার দুপুরে রাজধানীর পুরানা পল্টনের মুক্তি ভবনের প্রগতি সম্মেলন কক্ষে এক অনুষ্ঠানে তারা সরকারসহ সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি এই আহ্বান জানান।
নৌ, সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটি (এনসিপিএসআরআর) এবং বাংলাদেশ যাত্রী অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ ‘কালবৈশাখী মৌসুম চলমান-ঈদ মৌসুম আসন্ন, লঞ্চ দুর্ঘটনা রোধ না হলে নৌপথ হবে বিপন্ন’ শীর্ষক পরামর্শমূলক এই মতবিনিময় সভার আয়োজন করে। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন এনসিপিএসআরআর আহ্বায়ক আশীষ কুমার দে।
যাত্রী অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের সভাপতি তুসার রেহমানের সঞ্চালনায় আলোচনায় অংশ নেন- বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) সাবেক অধ্যাপক ড. আব্দুর রহিম, গণতন্ত্রী পার্টির সভাপতি ম-লীর সদস্য নুরুর রহমান সেলিম, জল পরিবেশ ইনস্টিটিউটের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী ম. ইনামুল হক, সাবেক সাংসদ এডভোকেট তাসনীম রানা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
মূল প্রবন্ধে বলা হয়, ১৯৯৪ সাল থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত ২১ বছরে ছোট-বড় মিলিয়ে ৬৫৬টি লঞ্চ দুর্ঘটনায় নিহতের প্রকৃত সংখ্যা প্রায় সাত হাজার। তবে, এসব দুর্ঘটনায় দৃশ্যমান নিহতের সংখ্যা পাঁচ হাজার ৩৯৭ এবং নিখোঁজ এক হাজার ৩২১ জন।
নিজের গবেষণার বরাত দিয়ে আশীষ কুমার দে উল্লেখ করেন, দুর্ঘটনা পরবর্তী সময় নিখোঁজদের স্বজনেরা বিভিন্ন স্থানে দীর্ঘ অনুসন্ধান চালিয়েও কাউকে জীবিত কিংবা মৃত উদ্ধার করতে পারেননি। ফলে বিষয়টি স্পষ্ট যে, ওইসব হতভাগার নিশ্চিত সলিল-সমাধি বা মৃত্যু হয়েছে। এই হিসেবে, গত ২১ বছরে লঞ্চ দুর্ঘটনায় নিহতের সংখ্যা ছয় হাজার ৭১৮ (প্রায় সাত হাজার)।
দুর্ঘটনা পরবর্তী পক্ষপাতদুষ্ট তদন্ত প্রতিবেদনের মাধ্যমে প্রকৃত অপরাধীদের রক্ষার প্রবণতাও দুর্ঘটনা পুনরাবৃত্তির অন্যতম কারণ হিসেবে উল্লেখ করেন তিনি। নিরাপদ নৌ চলাচল নিশ্চিতকরণে দুর্ঘটনার জন্য দায়ী উপরোক্ত কারণসমূহ গুরুত্বের সঙ্গে আমলে নেয়া অপরিহার্য বলে প্রবন্ধে উল্লেখ করা হয়।

No comments

Powered by Blogger.