কুৎসিত লড়াই দেখে হৃদয় ভেঙে যাচ্ছে : কেজরিওয়াল

আম আদমি দলের অভ্যন্তরে ‘কুৎসিত লড়াই’ দেখে ‘গভীর আহত’ হয়েছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী কেজরিওয়াল। নিজ দলের অন্তর্গত কোন্দলে তার হৃদয় ভেঙে যাচ্ছে। মঙ্গলবার এক টুইটার বার্তায় কেজরিওয়াল এমন মন্তব্য করেন। টাইমস অব ইন্ডিয়া জানায়, এএপির অন্তর্গত কোন্দল হওয়ার পর ভেঙে পড়েছেন কেজরিওয়াল। টুইটারে তিনি লিখেছেন, ‘দলে যা চলছে, তাতে আমি গভীরভাবে আহত ও ব্যথিত। দিল্লি জনগণ আমাদের ওপর যে আস্থা রেখেছে তার সঙ্গে প্রতারণা হচ্ছে।’
উল্লেখ্য, দিল্লি মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ্র কেজরিওয়ালকে আম আদমি পার্টি (এএপি) থেকে সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা চলছে। এএপি নেতা সঞ্জয় সিং নয়াদিল্লিতে সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন। এর মধ্যেই দলটিতে বড় ধরনের বিভক্তির আশংকা দেখা দিয়েছে।
সম্প্রতি এএপির রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ সংক্রান্ত কমিটির সদস্য যোগেন্দ্র যাদব ও প্রশান্ত ভূষাণ দলের কার্যক্রমের সমালোচনা করেন এবং পুনর্গঠনের আহ্বান জানান। এ বিষয়ে দলের ভেতরে দুটি পক্ষের ভেতর চিঠি চালাচালির বিষয়টি ফাঁস হয়ে যায়। একই সঙ্গে গোপনে ফোন রেকর্ডে ভূষাণের এএপি-বিরোধী অবস্থান প্রকাশিত হয়েছে। এরপরই যোগেন্দ্র যাদব ও প্রশান্ত ভূষাণকে দল থেকে বহিষ্কারের গুঞ্জন ওঠে। এএপির দিল্লি সচিব দিলীপ পান্ডের লেখা একটি চিঠিতে দলকে দুর্বল করতে যোগেন্দ্র যাদব, প্রশান্ত ভূষাণ ও শান্তি ভূষাণ কাজ করে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ তোলা হয়। এতে বলা হয়, তারা কেজরিওয়ালের পরিবর্তে যাদবকে প্রধান করার চেষ্টা করছেন। গত ফেব্র“য়ারিতে অনুষ্ঠিত দিল্লির বিধানসভা নির্বাচনে ৭০টি আসনের মধ্যে ৬৭টি পেয়েছে এএপি।
‘বিদ্রোহী ত্রয়ীর উচ্ছেদে’ আজ বৈঠক : অভিযোগ, পাল্টা অভিযোগ আর কিছু ফাঁস হয়ে চিঠি, এ নিয়েই ব্যতিব্যস্ত আম আদমি পার্টি। পরিস্থিতি এতটাই জটিল যে তড়িঘড়ি আজ বুধবার এএপির জাতীয় এক্সিকিউট কমিটির বৈঠক বসতে চলেছে। এই বৈঠকে দলের অন্যতম দুই প্রতিষ্ঠাতা সদস্য নেতা যোগেন্দ্র যাদব ও প্রশান্ত ভূষাণের ভূমিকা নিয়ে আলোচনা হবে। এই বৈঠকে দলের রাজনীতিবিষয়ক কমিটি থেকে যোগেন্দ্র যাদব ও প্রশান্ত ভূষণকে ছেঁটে ফেলতে প্রস্তুত কেজরির অনুগামীরা। সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকায় এই কমিটি থেকে দলের এই দুই সদস্যকে সরিয়ে দিতে বিশেষ বেগ পেতে হবে না তাদের। দলের মধ্যে বেকায়দায় পড়েছেন, এমন পরিস্থিতি টের পেয়ে ইতিমধ্যে ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে গিয়েছেন যোগেন্দ্র যাদব। সোমবার সন্ধ্যায় একটি টেলিভিশন চ্যানেলে দেয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন কেজরিওয়ালই এএপির শীর্ষ নেতা। তাকে জাতীয় আহ্বায়কের পদ থেকে সরিয়ে দেয়ার কোনো প্রশ্নই ওঠে না।
এএপির আহ্বায়কের পদ থেকে কেজরিওয়ালের পদত্যাগ
ভারতের আম আদমি পার্টির (এএপি) আহ্বায়কের পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন অরবিন্দ কেজরিওয়াল। বুধবার টাইমস অব ইন্ডিয়ার খবরে এ কথা জানানো হয়। দলটির ২১ সদস্যবিশিষ্ট জাতীয় কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠক হওয়ার কথা। এর ঠিক আগ মুহূর্তে কেজরিওয়াল দলীয় প্রধানের পদ থেকে পদত্যাগ করলেন।
বিরাট জয় নিয়ে দিল্লি বিধানসভার ক্ষমতায় আসার এক মাস না পেরোতেই এএপিতে গৃহবিবাদ শুরু হয়ে গেছে। দলের দুই প্রতিষ্ঠাতা সদস্য রবীন্দ্র যাদব ও প্রশান্ত ভূষণ এএপির প্রধান অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে দলীয় প্রধানের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার চক্রান্ত করেছিলেন বলে অভিযোগ উঠেছে। বৈঠকে দলটির দুই ভিন্নমতাবলম্বী নেতা প্রশান্ত ভূষণ ও যোগেন্দ্র যাদবের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। অসমর্থিত সূত্রে জানা গেছে, এ দুজনকে দলটির কার্যনির্বাহী কমিটি থেকে বাদ দেওয়া হতে পারে। এমনকি দল থেকেও বাদ পড়তে পারেন তাঁরা। দুই নেতার কথিত ষড়যন্ত্র, এ-সংক্রান্ত চিঠি উদ্ধার এবং একে অন্যের বিরুদ্ধে বিষোদ্‌গারে এএপির অন্তর্দ্বন্দ্ব স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। আজকের বৈঠকে কেজরিওয়াল থাকবেন না। তিনি চিকিৎসার উদ্দেশে ১০ দিনের জন্য বেঙ্গালুরু যাচ্ছেন।

No comments

Powered by Blogger.