বাকস্বাধীনতার অর্থ ধর্মানুভূতিতে আঘাত করা নয় by ড. মুনীর উদ্দিন আহমদ

হজরত মোহাম্মদকে (সা.) নিয়ে ব্যঙ্গাত্মক কার্টুন আঁকার প্রতিবাদে ফ্রান্সের ব্যঙ্গ ম্যাগাজিন শার্লি এবদোর কার্যালয় ও অন্যান্য স্থানে ইসলামপন্থী বন্দুকধারীদের গুলিতে নিহত হন সাংবাদিকসহ ১৭ জন। গণমাধ্যম ও বাকস্বাধীনতা সমুন্নত রাখার প্রত্যয় নিয়ে এ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে পশ্চিমা বিশ্বের লাখ লাখ মানুষ রাস্তায় নেমেছিল। ভীত নই লেখা পোস্টার ও অসির চেয়ে মসি বড় স্লোগান দিয়ে তারা বিভিন্ন শহরে মিছিল করেছে। সবচেয়ে দুর্ভাগ্যের ব্যাপার, নৃশংস হত্যাকাণ্ডের পর পত্রিকাটি হজরত মোহাম্মদকে (সা.) নিয়ে আবার ব্যঙ্গাÍক কার্টুন এঁকেছে। এদিকে নর্থ ক্যারোলাইনার চ্যাপল হিল শহরে একটি মুসলিম পরিবারের তিন সদস্যকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে কিছুদিন আগে। শুধু মুসলমান হওয়াই ছিল তাদের অপরাধ। কিন্তু এ মর্মান্তিক ঘটনাটি বলতে গেলে পশ্চিমা বিশ্বে তেমন কোনো প্রচারণা পায়নি। পাশ্চাত্যের গণমাধ্যম ও বাকস্বাধীনতা নিয়ে পশ্চিমারা বেশ গর্ববোধ করে। কিন্তু তা নিয়ে আমাদের অনেকেরই যে ভ্রান্ত ধারণা ও অন্ধ বিশ্বাস রয়েছে সেটা তুলে ধরাই আমার এ লেখার উদ্দেশ্য। অধ্যাপক আনামারি শিম্মেল ১৯২২ সালে জার্মানিতে জন্মগ্রহণ করেন এবং ২০০৩ সালে মৃত্যুবরণ করেন। ইসলামী মিসটিসিজম বা সংক্ষেপে ইসলামী মরমিবাদের ওপর তিনি ছিলেন বিশ্বের একজন অবিসংবাদিত সুপণ্ডিত। এ বিষয়ে তার রচিত দ্য মিসটিক্যাল ডাইমনেশন অব ইসলামকে বিশ্বের একটি নির্ভরযোগ্য রেফারেন্স বই হিসেবে গণ্য করা হয়। তার ৫০ বছরের পাণ্ডিত্যের স্বীকৃতিস্বরূপ ১৯৯৫ সালে তাকে জার্মান বুক পিস অ্যাওয়ার্ডের জন্য মনোনীত করা হয়। ড. শিম্মেলের এ মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কারপ্রাপ্তির ঘোষণা আসার পর জার্মানির অসংখ্য বুদ্ধিজীবী ক্ষোভ প্রকাশ করতে শুরু করেন। শত শত লেখক, শিক্ষক, প্রকাশক এবং পুস্তক বিক্রেতা ড. শিম্মেলকে এ সম্মানজনক পুরস্কার না দেয়ার জন্য জার্মান পুস্তক প্রকাশক অ্যাসোসিয়েশনের কাছে লিখিত আবেদন জানান। এমনকি জার্মানির কয়েকজন সংসদ সদস্য কঠোর প্রতিবাদের মাধ্যমে এ পুরস্কার দেয়ার বিষয়টিকে প্রহসন বলে অভিহিত করেন। জার্মানির প্রেসিডেন্ট সাধারণত এ পুরস্কার দিয়ে থাকেন। প্রেসিডেন্টকে এ পুরস্কার প্রদানে বিরত রাখার জন্য বিভিন্ন দিক থেকে প্রচণ্ড চাপের মধ্যে রাখা হয়।
শিক্ষা-সাহিত্য ও অন্যান্য বিষয়ে অনেক অসাধারণ প্রাপ্তি ও অর্জনের পরও জার্মান বুদ্ধিজীবীরা তার প্রতি ক্ষিপ্ত হলেন কেন? তিনি বলেছিলেন, সালমান রুশদির বই দ্য স্যাটানিক ভার্সেস লাখ লাখ মুসলমানের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করেছে। জার্মান বুদ্ধিজীবীরা তাদের লিখিত চিঠিতে উল্লেখ করেন, ড. শিম্মেল সালমান রুশদির বইয়ের সমালোচনা করে প্রতিক্রিয়াশীল ও ধর্মান্ধ মুসলমানদের নৈতিক সমর্থন দিয়েছেন। সালমান রুশদিকে মৃত্যুদণ্ড দেয়ার ঘোষণাকে ড. শিম্মেল কখনও সমর্থন না করা সত্ত্বেও তার প্রতি আক্রোশ ও ক্ষোভ বিন্দুমাত্র কমেনি। ভালো খবর হল, জার্মান প্রেসিডেন্ট এত কিছুর পরও ড. শিম্মেলকে পুরস্কার দিতে অসম্মতি প্রকাশ করেননি, বরং পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে তার সম্মানে বক্তৃতা প্রদানেরও ঘোষণা দেন। তিনি আন্দোলনকারীদের সভ্যতার মধ্যে সংঘাত সৃষ্টির তত্ত্বে বিশ্বাসী বলে আখ্যায়িত করেন। জার্মান প্রেসিডেন্ট তার বক্তব্যে মুসলিম সভ্যতাকে বোঝা এবং তাদের সঙ্গে সংলাপের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। পরে ড. শিম্মেলকে প্রশ্ন করা হয়, এটা কি সত্যি যে আপনি নিজেকে ৫০ ভাগ মুসলমান হিসেবে দাবি করেন? তিনি উত্তর দিয়েছিলেন, এটা বললে অবশ্যই কম বলা হবে। আমি মুসলিম সভ্যতাকে ভালোবাসি এবং সব সময় তার পক্ষে কথা বলি, বিশেষ করে বর্তমান বিশ্বের প্রেক্ষাপটে।
প্রিয় পাঠক, বিবেচনা করুন মুসলমানদের অনুভূতির পক্ষে কথা বলা বা তার পক্ষাবলম্বনে এগিয়ে আসা কি ড. শিম্মেলের গুরুতর অপরাধ ছিল? কেউ কারও ধর্মীয় অনুভূতিতে ইচ্ছাকৃত আঘাত হানলে ক্ষোভ প্রকাশ ও প্রতিবাদ করা কি অযৌক্তিক না অস্বাভাবিক? মুসলমানদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ এবং তাদের প্রিয় নবীর সহধর্মিণীদের কটাক্ষ করার কারণে মুসলমানরা শান্তিপূর্ণ ক্ষোভ প্রকাশ করলে তা বর্তমান বিশ্বে এত অগ্রহণযোগ্য বলে গণ্য হবে কেন? উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ইসলাম ধর্মের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ ও ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করা পাশ্চাত্যের দেশগুলোর অনেকের মধ্যেই ইদানীং এক ধরনের অপতৎপরতা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। এটা বুঝতে আমাদের কষ্ট হয়, পশ্চিমা দেশগুলো কেন বারবার বলে থাকে, মুসলমানরা সালমান রুশদির বিদ্বেষমূলক বই প্রকাশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে ভুল করেছে? মতপ্রকাশের স্বাধীনতা স্বীকার করলে ড. শিম্মেলের মতবাদকে তারা সম্মান দেখালেন না কেন? ড. শিম্মেলের মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে এমন ন্যক্কারজনকভাবে পদদলিত করা হল কেন? এটা কি পশ্চিমাদের দ্বৈতনীতি নয়? কিছুদিন আগে ফিলিপাইন যাওয়ার প্রাক্কালে বর্তমান পোপ ফ্রান্সিস বলেছিলেন, গণমাধ্যম ও বাকস্বাধীনতার অর্থ অন্য ধর্মের অনুভূতিতে আঘাত করা নয়। তিনি আরও বলেন, ঈশ্বরের নামে মানুষ হত্যা যেমন ভুল, উসকানিমূলক আচরণের মাধ্যমে অন্য ধর্মকে খাটো করাও তেমনি ভুল।
প্রকৃত অবস্থা বিচার সাপেক্ষে বলা যায়, অধিকাংশ পশ্চিমা নাগরিক তাদের আচরণের ন্যায্যতা প্রতিপাদনে তৎপর এই বলে যে, একমাত্র তারাই বাকস্বাধীনতায় বিশ্বাসী ও প্রবক্তা। কিন্তু আমাদের জিজ্ঞাসা, আপনারা কি আক্রমণাত্মক ও কষ্টদায়ক বক্তব্য বা ভাষণের প্রতিও নিরংকুুশ বাকস্বাধীনতায় বিশ্বাসী? তখন তারা গর্ব করে বুক ফুলিয়ে বলবেন, অবশ্যই আমরা শর্তবিহীন বাকস্বাধীনতায় বিশ্বাসী? কেউ খুশি হোক বা না হোক, যে কোনো ব্যক্তির যে কোনো মতপ্রকাশের পূর্ণ স্বাধীনতা রয়েছে। যদি তাদের আবার প্রশ্ন করা হয়, বর্তমান পশ্চিমা বিশ্বে যেভাবে দাবি করা হয় সেভাবে কি শর্তবিহীনভাবে এ বাকস্বাধীনতা প্র্যাকটিস বা প্রয়োগ করা যায়? নির্দ্বিধায় বলা হবে, অবশ্যই তা অক্ষরে অক্ষরে পালন করা হয়। সত্যি কথা হল, শুধু পাশ্চাত্যে নয়, বিশ্বের কোথাও নিরংকুশ কোনো বাকস্বাধীনতা নেই এবং তার প্রয়োগও হয় না। সংশয়বাদীরা এ বক্তব্যের স্বপক্ষে প্রমাণ চাইবেন। তাই তাদের সংশয় দূর করার জন্য কিছু উদাহরণ উপস্থাপন করা প্রয়োজন মনে করছি। যুক্তরাজ্যে ব্লাসফেমির (অশালীন ভাষায় সৃষ্টিকর্তা, ধর্ম ও ধর্মতত্ত্বের প্রতি কটাক্ষ করা) বিরুদ্ধে এখনও আইন প্রচলিত আছে। সালমান রুশদির স্যাটানিক ভার্সেসের ক্ষেত্রেও মুসলমানরা যুক্তরাজ্যে এ আইনের প্রয়োগ চেয়েছিল। কিন্তু মুসলমানরা আবিষ্কার করল, শুধু খ্রিস্টধর্মের জন্য ব্লাসফেমি আইন প্রযোজ্য, অন্য ধর্মের জন্য নয়। সুতরাং খ্রিস্টধর্মকে বাদ দিয়ে যে যত ইচ্ছা অন্য ধর্মের অবমাননা, আক্রমণ ও কটাক্ষ করার স্বাধীনতা ভোগ করবে। এ আইনের সুবাদে স্যাটানিক ভার্সেস নিষিদ্ধ হওয়া থেকে রক্ষা পেয়ে যায়। কিন্তু সালমান রুশদি ও তার স্যাটানিক ভার্সেস বইকে ব্যঙ্গ করে তৈরি করা পাকিস্তানি একটি চলচ্চিত্র যুক্তরাজ্যে নিষিদ্ধ করা হয়।
মার্কিন প্রচার মাধ্যমগুলোয় স্বেচ্ছাপ্রণোদিত সেন্সরশিপের দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, মুসলমানরা কেন পশ্চিমাদের বিরুদ্ধে দিন দিন ক্ষেপে যাচ্ছে এ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি কিছু চলচ্চিত্রের সম্প্রচার বন্ধ করে দেয়া হয়। একটি শক্তিশালী লবি-গ্রুপ এসব চলচ্চিত্রের সম্প্রচারকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ এবং জনসমক্ষে তাদের পরিচিতি উদঘাটনের ভয় দেখিয়েছিল। বিশ্বখ্যাত সাংবাদিক রবার্ট ফিস্ক রুটস অব মুসলিম অ্যাঙ্গার শীর্ষক একটি চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছিলেন। এ চলচ্চিত্রের বিরুদ্ধে প্রচারণার মূল কারণ ছিল ইসরাইল। কারণ এতে দেখানো হয়েছিল, পশ্চিমাদের বিরুদ্ধে মুসলমানদের অসন্তোষের পেছনে কাজ করছে মূলত ইসরাইলের অন্যায়, অত্যাচার, জুলুম, নির্যাতনের প্রতি পশ্চিমাদের শর্তবিহীন সমর্থন। রবার্ট ফিস্ক বস্তুনিষ্ঠ বিদেশী সংবাদ পরিবেশক হিসেবে ব্রিটিশ প্রেস অ্যাওয়ার্ড পুরস্কারে ভূষিত হন। নোয়াম চমস্কি যুক্তরাষ্ট্রের একজন নামজাদা বুদ্ধিজীবী। নিউইয়র্ক টাইমস তাকে জীবন্ত কিংবদন্তি বুদ্ধিজীবী হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। কিন্তু এমন একজন সুপণ্ডিতকে মার্কিন প্রচার মাধ্যম কখনও টকশোতে আমন্ত্রণ জানায় না কেন? কারণ তার অভিমত বা ব্যক্ত মতামত সব সময়ই মার্কিন অভিজাত সম্প্রদায়কে বিপর্যস্ত ও অস্থির করে তোলে। তাহলে নোয়াম চমস্কির মতো একজন নামজাদা বুদ্ধিজীবীর বাকস্বাধীনতা থাকল কোথায়?
১৯৯১ সালে জার্মান ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টির নেতা গুয়েন্টার ডেকার্ট আয়োজিত এক সেমিনারে একজন আমেরিকান বিশেষজ্ঞ বক্তা দাবি করেন, কনসেনট্রেশন ক্যাম্প আউসভিটজে গ্যাস প্রয়োগে ইহুদিদের হত্যার ঘটনা কখনোই সংঘটিত হয়নি। বর্ণবাদী ঘৃণা উসকে দেয় এমন একটি সেমিনার আয়োজন করার জন্য ডেকার্টকে অভিযুক্ত করার মাধ্যমে কঠোর শাস্তি দেয়া হয়। ১৯৯৪ সালের মার্চে ডেকার্টের আবার বিচার হয়। সেই বিচারে ডেকার্টকে আগের শাস্তি কমিয়ে এক বছরের জেল দেয়া হয়। অনেক বিচারক শাস্তি কমানোর জন্য সংশ্লিষ্ট বিচারকের কঠোর সমালোচনা করেন। ফেডারেল কোর্ট অব জাস্টিস হালকা শাস্তি বাতিল করে আবার ডেকার্টের বিচার শুরু করার আদেশ দেন। এত ঘন ঘন বিচারকাজের জন্য মানুষের মধ্যে প্রচণ্ড ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। এরপর আইনের ব্যাখ্যা এলো। ১৯৯৪ সালে সাংবিধানিক আদালত ঘোষণা দিলেন, হত্যাযজ্ঞ বা ধ্বংসযজ্ঞ অস্বীকার করার বাকস্বাধীনতা নিরাপদ নয়। পরবর্তী সময়ে জার্মান সংসদ হলোকস্ট বা হত্যাযজ্ঞকে অস্বীকার করার অপরাধে অপরাধীকে পাঁচ বছরের জেল দেয়ার বিধান পাস করে।
পশ্চিমা বিশ্বে চিন্তা বা বাকস্বাধীনতার অস্তিত্ব নেই এ কথা বলা আদৌ সঙ্গত হবে না। প্রকৃত অর্থে বিশ্বের যে কোনো দেশের বা যে কোনো জাতির চেয়ে পশ্চিমা দেশের নাগরিকরা বেশি বাকস্বাধীনতা ভোগ করে। সাংবিধানিকভাবেই ওসব দেশে প্রতিবাদ-বিক্ষোভ প্রদর্শন বা আন্দোলন করার অধিকার সমুন্নত রাখা হয়েছে- যদিও এসব প্রতিবাদ-বিক্ষোভ প্রদর্শনকে আজকাল খুব একটা ধর্তব্যের মধ্যে নেয়া হয় না। এক সময় ক্ষমতাধর রাজনীতিক ও নেতার অপর্কীতি বা দুর্নীতির খতিয়ান জনসমক্ষে উদ্ঘাটন করার ক্ষেত্রে পশ্চিমা দেশের প্রচার মাধ্যমগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে বা করেছিল। মার্কিন প্রেসিডেন্ট নিক্সনের ওয়াটার গেট কেলেংকারির ঘটনা ফাঁস করে দেয়ার ক্ষেত্রে ওয়াশিংটন পোস্টের ভূমিকার কথা কে না জানে। তবে সেই স্বাধীনতা শর্তবিহীন বা অসীম নয়। অনেকে প্রশ্ন করে থাকেন, বাকস্বাধীনতা থাকা উচিত কি-না? অবশ্যই থাকা আবশ্যক। তবে নিরংকুশ বাকস্বাধীনতা অনেক ক্ষেত্রেই গ্রহণযোগ্য নয়। আক্রমণাত্মক বা বিদ্বেষপূর্ণ বক্তব্য বহু ক্ষেত্রেই ব্যক্তি, গোষ্ঠী বা সমাজের জন্য ধ্বংসাত্মক পরিণতি ডেকে আনতে পারে। এ ধরনের বক্তব্য বা আচরণ সমাজে ঘৃণা, শত্র“তা ও বিভক্তির সৃষ্টি করে।
আরও একটি বিষয় লক্ষণীয়। আজকাল মুসলমানদের এক কথায় সন্ত্রাসী বা সন্ত্রাসের মদদদাতা হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। তবে আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, মুসলমানদেরও উপলব্ধি করার সময় এসেছে। পশ্চিমাদের কাছ থেকে মর্যাদাপূর্ণ ও যৌক্তিক আচরণ প্রত্যাশার আগে নিজেদের চিন্তাচেতনা, শিক্ষা-দীক্ষা, অর্থনৈতিক ও প্রযুক্তিগত উন্নয়নে তাদের সমপর্যায়ে পৌঁছাতে হবে। মুসলমানদের অবশ্যই বুঝতে হবে, বাকস্বাধীনতার অপব্যবহারের পাশাপাশি আরও একটি ধারণা পশ্চিমা ঐতিহ্যে প্রোথিত আছে। আর তা হল ডাবল স্ট্যান্ডার্ড বা দ্বৈতনীতি। বর্তমান বিশ্বে মুসলমানরা পশ্চিমাদের এ বাকস্বাধীনতার অপপ্রয়োগ ও নগ্ন দ্বৈতনীতির অসহায় শিকার।
ড. মুনীরউদ্দিন আহমদ : অধ্যাপক, ক্লিনিক্যাল ফার্মেসি অ্যান্ড ফার্মাকোলজি বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
drmuniruddin@gmail.com

No comments

Powered by Blogger.