আস্থা না রেখে উপায় কী? by বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীরউত্তম

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
মতিঝিলের ফুটপাথে আজ ২৭ দিন। এই ২৭ দিনরাত্রি যে অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি, ২৭ বছরেও তার কানাকড়ি করতে পারিনি। মন ভালো না, তাই লেখার ইচ্ছা ছিল না। সাধারণত এক দিন আগেই লেখা শেষ করি। কিন্তু এ লেখার ক্ষেত্রে তা করিনি। বেশ ক’বার ভেবেছি, এ সপ্তাহ থাক। আবার মনটা বড় খুশ খুশ করেছে, ফুটপাথে যতজন কথা বলে, তাদের অর্ধেকই লেখার কথা বলে। তাই ভারাক্রান্ত মন নিয়েই আজ লিখছি। একদিকে মন খারাপ। আমিনুল হক বাদশা আমাদের এক সুহৃদ ক’দিন আগে লন্ডনে মারা গেছেন। এখন যারা আসমানে পা দিয়ে হাঁটেন, স্বাধীনতার সময় তাদের অনেকের জন্ম হয়নি। কিন্তু সেই সময় কুষ্টিয়ার আমিনুল হক বাদশা এবং মোহাম্মদ হানিফ ছিলেন সূর্যের কাছাকাছি, মানে বঙ্গবন্ধুর পাশাপাশি। ওই সময় বঙ্গবন্ধুর পাশে থাকাদের তো নিচে তাকানোর কথা ছিল না।
কিন্তু না, আমিনুল হক বাদশা ও মোহাম্মদ হানিফ ছিলেন প্রকৃত দরদি মানুষ। তাদের মধুর ব্যবহারে কেউ রুষ্ট হয়নি, বরং হৃষ্ট হয়েছেন। আস্তে আস্তে সব প্রিয়জন চলে যাচ্ছেন। তাই মনটা খারাপ না হয়ে পারে না। মনটা আরো খারাপ, সে দিন মতিঝিলে সোনালী ব্যাংকের সামনে বোমাবাজ হিসেবে একটি যুবক নিহত হয়। যেখানে যুবকটি নিহত হয়েছে তার ৪০০-৫০০ গজ পশ্চিমে আমার অবস্থান। হলফ করে বলতে পারি, সারা দেশে যেখানে যাই হোক, সে দিন মতিঝিলে যে যুবক মারা গেছে বা যাকে মেরে ফেলা হয়েছে সে নিরপরাধ নিষ্কলুষ। সে কোনো বোমাবাজি করেনি, রাস্তার একজন সাধারণ মানুষ ছিল। সে দিন মতিঝিলের সোনালী ব্যাংক, বাংলাদেশ ব্যাংক বা তার উত্তরে আব্দুস সালামের করিম অ্যান্ড সন্স পেট্রল পাম্পের সামনে কয়েকবার বোমা পড়েছে। সালামের পাম্পের সামনে সিএনজিতে আসা কয়েকজন এবং সোনালী ব্যাংকের সামনে মোটরসাইকেল আরোহীরা বোমা মেরেছে। যে যুবকটি নিহত হয়েছে বোমার শব্দে সে ছুটে গিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের পুলিশ ফাঁড়িতে আশ্রয় নিয়েছিল। পুলিশরা তাকে আশ্রয় না দিয়ে বাইরে ছুড়ে ফেলে দেয়ায় রাস্তার মানুষ বোমাবাজ বলে তাকে পিটিয়ে মেরেছে। এতে কেউ যদি মনে করে দেশে বোমাবাজদের বিরুদ্ধে ‘গণপ্রতিরোধ’ গড়ে উঠেছে, তাহলে তিনি বা তারা ভুল করবেন। যে দেশে দিনদুপুরে গুণ্ডারা কাউকে খুন করলে হাজার মানুষ নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করে, সে দেশে বোমাবাজদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে ওঠার প্রত্যাশা করা সমীচীন হবে না।
পবিত্র কুরআনে সূরা মায়েদার ৩২ আয়াতে স্পষ্ট করে বলা হয়েছে, যারা হত্যা করে বা সমাজে ফ্যাসাদ সৃষ্টি করে তাদের ব্যতিরেকে অন্য কাউকে হত্যা করলে সে যেন সারা মানব জাতিকে হত্যা করল।’ আমরা এখানে কী বলব, সে দিন শাপলা চত্বরে যে নিহত হয়েছে, তাকে নিয়ে, যুবকটি যদি সত্যিই নির্দোষ হয়, তাহলে তার হত্যাকাণ্ড নিয়ে সরকার অথবা দেশের কাউকেই কি জবাব দিতে হবে না? মহান স্রষ্টা দয়াময় প্রভু একদিন হজরত মুসা আ:কে মাটির পাত্র বানাতে বলেছিলেন। তিনি মাটির পাত্র বানাতে জানতেন না, তবু অনেক কষ্টে বানিয়ে ছিলেন। দয়াময় প্রভু যখন সেই পাত্র ভেঙে ফেলতে বলেছিলেন, তখন তার কষ্ট হচ্ছিল। আল্লাহ তখন বলেছিলেন, তোমার মাটির পাত্র ভাঙতেই যদি কষ্ট হয়, আমি কত আদর সোহাগ করে মানুষ বানিয়েছি, তাদের হত্যা করলে আমার কষ্ট হয় না?’ মানুষ হয়ে এভাবে মানুষ হত্যা করতে দেখে দেখে মনটা বড় ভারী হয়ে আছে। তাই এমন বেদনাবিধুর ভারী মন নিয়ে লেখা যায় না। আর যেখানে আছি, সেখানে লেখার খুব একটা পরিবেশ নেই।
সে দিন সকাল সকাল দুই যুবলীগ কর্মী এসেছিল। বড় স্বতঃস্ফূর্ত ছিল তারা। যুবলীগ কর্মী হয়েও তারা আমায় প্রচণ্ড ভালোবাসে। বঙ্গবন্ধুর পরেই নাকি তাদের হৃদয়ে আমার স্থান। একপর্যায়ে কি এক পত্রিকায় তাদের ছবি দেখাল। এক বোমাবাজকে দু’জনে মারছে। আমি যেই বললাম, এ যে প্রকৃত বোমাবাজ, তা তোমরা জানলে বা বুঝলে কী করে? আর এ যে সরকারের নিযুক্ত লোক নয়, তারই বা প্রমাণ কী?’ ছেলে দু’টি আঁৎকে উঠেছিল। তারা এসব স্বপ্নেও ভাবেনি।
পরে যখন বললাম, তোমরা মারছ এই ছবি না হয়ে তোমরা কেউ একে বুকে আগলে রক্ষা করছ, এমন ছবি হলে বেশি খুশি হতাম। নিশ্চয়ই অন্যায়কারীকে রাস্তাঘাটে সাধারণ মানুষ ধরবে, মারবে, আঘাত করবে। কিন্তু বড়রা, দায়িত্বশীলরা? দায়িত্বশীলরা তাকে বুকে আগলে রক্ষা করবে। অপরাধী প্রমাণিত হলে তার দণ্ড হবে, তার আগে নয়। কিন্তু যে সমাজে অপরাধীরও নিরাপদ আশ্রয় নেই, সে সমাজকে সভ্য সমাজ বলা চলে না। যুবলীগের কর্মী দু’জন আমার কথা শুনে বলেছিল, এমন কথা তো আগে শুনিনি। এবার যখন শুনলাম, অবশ্যই মনে রাখব। তাদের কথা শুনে আমার অন্তরাত্মা ময়ূরের মতো নেচে উঠেছিল। শেখ ফজলুল হক মনি ভাইর সাথে যুবলীগ তো আমিও করেছিলাম। সেই যুবলীগের কর্মীরা খারাপ হলে সে দায় তো আমার ওপরও কিছু পড়ে। এই দুইজন যুবলীগ কর্মী যদি মানুষের মতো মানুষ হয়, তাদের বিবেক যদি জাগ্রত হয়, তাহলে আমার এই ফুটপাথে অবস্থান সার্থক হবে। সারা দেশ দিয়ে কী হবে? জীবনে একজন বিপথগামীকেও যদি পথে আনতে পারি, তাহলেই আমার জীবন সফল। ১৯ তারিখ শাপলা চত্বরে পুলিশরা তাকে বাইরে ফেলে না দিলে হয়তো সে নিহত হতো না। তাই তার নিহত হওয়ার দায় বা গুনাহ প্রথম গিয়ে পড়বে ওই পুলিশ ফাঁড়ির লোকজনদের ওপর। তারপর অন্যদের ওপর। গরম রক্তের কারণে হয়তো এখন মানবিক গুণগুলো তারা তলিয়ে দেখবে না। কিন্তু কারো ছেলে যখন পানিতে ডুবে কিংবা গাড়িচাপা পড়ে মরবে, তখন অবশ্যই সে বুঝবে, একজন আশ্রয়প্রার্থীকে আশ্রয় না দেয়ার মূল্য কী?
ফুটপাথে পড়ে আছি, পত্রিকা ছাড়া খবরাখবরের আর তেমন কোনো মাধ্যম নেই। এই সপ্তাহে নিকট-প্রতিবেশী পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এসেছিলেন। যখন তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তির সবকিছু ছিল হওয়ার পথে তখন তিনি ড: মনমোহন সিংয়ের সাথে আসেননি। এখন এসে আস্থা রাখার আহ্বান জানিয়ে গেলেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দ্রুত অগ্রসর একজন সাময়িক সফল নেতা। যারা তার বয়োজ্যেষ্ঠ, তারা প্রায় সবাই পেছনে পড়ে গেছেন। সোমেন মিত্র, অমিত পাঁজা, সুব্রত মুখার্জী এ ধরনের যত নাম আসবে, তাদের প্রায় সবাই। তার নিখাদ দৃঢ়তা তাকে সফলতার উচ্চশিখরে পৌঁছে দিয়েছে। ছিটমহল এবং তিস্তার পানি- বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অবশ্য এসব ক্ষেত্রে কার্যকরী ভূমিকা রাখার তার খুব একটা সুযোগ নেই। কিন্তু তবু নিকট-প্রতিবেশী হিসেবে নিশ্চয় তিনি তার শুভ ভূমিকা রাখতে পারেন। বাংলা ভাষাভাষী পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে মহান ২১ ফেব্র“য়ারি তাকে বাংলাদেশে আমন্ত্রণ করা তার জীবনের শ্রেষ্ঠ সম্মান হতে পারে। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় লক্ষ মানুষের হৃদয়ের ২১ ফেব্র“য়ারি বর্তমান রাজনৈতিক হানাহানির জন্য খুব একটা দেখতে পেলেন না। আজ থেকে ছয়-সাত বছর আগে পলাশী ব্যারাকের মোড় থেকে স্ত্রী, পুত্র, কন্যা নিয়ে শহীদ মিনারের পাদদেশে পৌঁছতে আমার তিন ঘণ্টা লেগেছিল। আর এবার রাতে শহীদ মিনারে কেউ ছিল না। এসব যে সরকারের কঠোরতার ফল, সেটা যদি তারা না বোঝে তাহলে বুঝাব কী করে?
হালকা কথায় ‘বিশ্বরেকর্ড সৃষ্টিকারী’ আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভোজসভায় বিশ্বজয়ী এক ভারী হালকা কথা বলেছেন, ‘পানি এলে ইলিশ যাবে।’ অসাধারণ যথার্থ কথা। একেই বলে দর কষাকষি! কী আছে আমাদের দর কষাকষির? কয়েক বছর আগে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে পৃথিবীর বহু দেশের পক্ষে সীমান্তে অস্ত্র চালান করতে গিয়ে ১০ ট্রাক অস্ত্র ধরা পড়ে বেগম খালেদা জিয়ার সর্বনাশ, জননেত্রী শেখ হাসিনার পৌষ মাস। মিজোরাম, নাগাল্যান্ড, মনিপুর ওই সব অশান্ত প্রদেশে অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ করে জননেত্রী শেখ হাসিনা সরকার ভারতের যে কী সমর্থন পেয়েছেন, তা তো ৫ জানুয়ারির নির্বাচনী নকশা দেখলেই বুঝা যায়। তারা কি জানেন না, দুই শতাংশ ভোটও হয়নি, তবু তারা প্রকাশ্য গোপনে যেভাবেই হোক সমর্থন দিয়ে গেছেন। ভারতের কাছে বাংলাদেশের ভোট হলেই কী আর না হলেই কী? তাদের সীমান্ত দিয়ে অবাধে অস্ত্র না ঢুকলেই হলো। এ ক্ষেত্রে বেগম খালেদা জিয়ার চেয়ে জননেত্রী শেখ হাসিনা অনেক প্রিয় বা বিশ্বস্ত। এমন আরো কিছু যদি আমাদের হাতে থাকত, তাহলে কি ভারত কথা শুনত না? ঘাড়ের নামই তো গর্দান। আজ প্রায় ৩০ বছর মিয়ানমার থেকে আমাদের পেটের ভেতর দিয়ে কলকাতা পর্যন্ত গ্যাস লাইন করার একটা চেষ্টা চলছে। এই হয়, এই হয় না। যদি হতো, তাহলে কেমন হতো? সে প্রস্তাব দেখেছি। আমাদের পশ্চিমাঞ্চলে গ্যাসের ঘাটতি আছে। সে প্রস্তাবে এটাও ছিল, পূর্বাঞ্চলে কোনো স্থান থেকে ভারত-মিয়ানমার পাইপ লাইনে আমরা গ্যাস তুলে দিয়ে পশ্চিমাঞ্চলে নামিয়ে নিতে পারব অথবা আমাদের বুকের ওপর দিয়ে লাইন টানার মাশুল হিসেবে আমাদের প্রয়োজন মতো গ্যাস এমনিতেই নিতে পারব। মনে হয়, কমিশন মিলেনি, তাই কাজ হয়নি। কয়েক বছরের মধ্যেই আমাদের বুক এফোঁড় ওফোঁড় করে বিশ্বরোড চলে যাবে। কিন্তু গত ৩০ বছর আগরতলা যাওয়া এবং চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছার জন্য ভারত হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ করে রাস্তা করতে চেয়েছে। তবে আমাদের বিজ্ঞ নেতারা রাজি হননি। এক সময় তো বিএনপির বিজ্ঞ অর্থমন্ত্রী বলেই বসেছিলেন, ভারতের পণ্যবাহী গাড়ি ছয় মাস চললে আমাদের রাস্তা ভেঙে চুরমার হয়ে যাবে। তার মানে আমাদের রাস্তাঘাট ভারতের চেয়ে নিম্নমানের।
অথচ এখন পণ্যবাহী যেসব গাড়ি চলছে তার ৯০-৯৫ ভাগই ভারতীয়। আর তাদের সে প্রস্তাবে আমাদের তৈরি রাস্তার ওপর দিয়েই গাড়ি চলার কথা ছিল না, রাস্তাগুলো আরো মজবুত করে নির্মাণ করে দেয়ার কথা ছিল। প্রশ্ন আসতেই পারে- আমাদের ছোট দেশ, রাস্তা নির্মাণে বেশ কিছু ভূমি নষ্ট হবে। তাতে আমাদের ফসল উৎপাদন কম হবে, সেটার দায় কে নেবে? এ ব্যাপারেও তাদের একটি প্রস্তাব ছিল। একই জায়গা দিয়ে পাইপ লাইন ও রাস্তা যাবে এবং যে জমি নষ্ট হবে তার ৫০ বছর উৎপাদিত ফসল অথবা উৎপাদিত ফসলের মূল্য তারা বাংলাদেশকে দেবে। রাস্তা এবং পাইপ লাইন রক্ষণাবেক্ষণের ভার বাংলাদেশের ওপর থাকবে। এর জন্য তারা ব্যয়ভার বহন করবে। কিন্তু না, এ সমস্ত কোন কিছুই হয়নি। অথচ মাঝেমধ্যে বিনা শুল্কে কলকাতা অথবা ডায়মন্ড হারবার থেকে ভৈরব আশুগঞ্জে ভারতের মালবাহী জাহাজ আসছে। সেখান থেকে জিনিসপত্র নামিয়ে দিলে ত্রিপুরায় যায়, কিন্তু রাস্তার কোনো ক্ষতি হয় না। সবই হচ্ছে শুধু দেশের সম্মান ও অর্থনীতি ক্ষতি করে।
একেবারে নিকট-প্রতিবেশী বাংলা ভাষাভাষী পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী আমাদের মাঝে এসেছিলেন। একটি মহান দিনে তিনি আমাদের সাথে একাকার হয়ে যেতে চেয়েছিলেন। কতটা পেরেছেন, তা তিনিই জানেন। গণভবনে এখন আর, বাংলা ও বাঙালীর হৃদয়ের স্পর্শ পাওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। মানুষ বড় ভারাক্রান্ত, পীড়িত। মনমোহন সিংয়ের সাথে তিনি এলে আমরা তিস্তার ৫১ শতাংশ পানি পেতাম, এখন তিনি আমাদের তিস্তার পানি দেয়ার জন্য ১৪ কলস কাঁদলেও ৩০ শতাংশ দিতে পারবেন কি না, সন্দেহ। অনেক বছর ভারতে নির্বাসিত ছিলাম। দুঃসময়ের দিনগুলোতে ভারতের অনেক মহান নেতার সাথে পরিচয় হয়েছে। কিন্তু দুর্ভাগ্য, তখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পাদপ্রদীপের তলে ছিলেন না। নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ভালো করে জানি না, চিনি না। তাই তেমন ভালোমন্দও বলতে পারছি না। তবু আশা করি, তিনি যে তার প্রতি আস্থা রাখতে বলেছেন, সেটা অপাত্রে রাখা হবে না।

No comments

Powered by Blogger.