অনিক ডান চোখে দেখতে পাবে না!

(ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে গুরুতর আহত অনিক ও তার মা। ছবিটি ২১ জানুয়ারি তোলা। ছবি: আবদুস সালাম।) বোমার আঘাতে গুরুতর আহত এসএসসি পরীক্ষার্থী মিনহাজুল ইসলাম অনিক ডান চোখে কখনোই দেখতে পাবে না। চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে টেলিফোনে আজ রোববার রাত সোয়া নয়টার দিকে এমনটাই জানালেন অনিকের বাবা মিজানুর রহমান। উন্নত চিকিৎসার জন্য ছেলেকে নিয়ে তিনি এখন ভারতের চেন্নাইতে আছেন। ২২ জানুয়ারি অনিককে চেন্নাই নেওয়া হয়। সেখানে শংকর নেত্রালয়ে তার চিকিৎসা চলছে। চিকিৎসার দায়িত্ব নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। চেন্নাই যাওয়ার আগে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে অনিকের বাবা দেখা করেন। এ সময় অনিকের চিকিৎসার জন্য প্রধানমন্ত্রী পাঁচ লাখ টাকা দেন। শংকর নেত্রালয়ে অনিককে ভর্তি করা হয়নি। মিজানুর রহমান একটি বাসা ভাড়া নিয়েছেন। সেখান থেকেই অনিককে প্রতিদিন হাসপাতালে আনা-নেওয়া করা হচ্ছে। সেখানে চিকিৎসার কোনো ত্রুটি হচ্ছে না। সরকারের বছরপূর্তিতে আওয়ামী লীগের ‘গণতন্ত্র রক্ষা’ দিবস ও বিএনপি জোটের ‘গণতন্ত্র হত্যা’ দিবস পালনকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক কমর্সূচির দিন ৫ জানুয়ারি বিকেল সাড়ে চারটার দিকে ফেনী শহরের খেজুর চত্বরে দুর্বৃত্তদের ছোড়া বোমার আঘাতে আহত হয় অনিক। অনিকের বাবা টেলিফোনে জানান, বাঙালি চিকিৎসক শহীদ আলম তাঁকে আলাদাভাবে ডেকে নিয়ে বলেছেন, অনিক ডান চোখে আর কোনো দিন দেখতে পাবে না। বাম চোখে অল্প দেখছে। এখন এই চোখটাকে ভালো করতে যা যা করা দরকার, তাই করতে হবে। আগামী ২ ফেব্রুয়ারি অনিকের এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার কথা। কিন্তু এখন তা অনিশ্চিত। চেন্নাই যাওয়ার আগে অনিক রাজধানীর আগারগাঁওয়‌ে জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিল। এর আগে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নেয় অনিক। অনিকের বাবা জানান, অনিক চোখের ওপর কপালেও গুরুতর আঘাত পায়। তাই চিকিৎসকেরা কপালের আঘাতের জায়গাটি পরীক্ষা করে দেখবেন। তারপর অনিকের চোখে অস্ত্রোপচার হবে। এ ছাড়া চিকিৎসকেরা অনিক যাতে কোনোভাবেই মানসিক আঘাত না পায়, সেদিকে নজর রাখতে বলেছেন। মিজানুর রহমান বলেন, ‘ছেলে শুধু পরীক্ষার কথা বলে। বলছে, চিকিৎসা না করিয়েই দেশে গিয়ে পরীক্ষা দেবে। কোনোভাবে ওকে ভুলিয়ে-ভালিয়ে রাখা হচ্ছে। পরীক্ষা শুরুর আগে চিকিৎসা শেষ করে দেশে ফিরতে পারব কি না, জানি না। প্রধানমন্ত্রী, শিক্ষামন্ত্রী যদি আমার ছেলের কথা বিবেচনা করে তার পরীক্ষার জন্য বিশেষ কোনো ব্যবস্থা নিতেন এ চাওয়া ছাড়া এখন আমার আর কোনো চাওয়া নেই।’

No comments

Powered by Blogger.