সীমান্তে ধরপাকড় অব্যাহত -‘বাংলাদেশী’ প্রশ্নে ভারত জুড়ে আইবি এখন রেড এলার্টে

বর্ধমান বিস্ফোরণের প্রেক্ষাপটে ভারত জুড়ে বাংলাদেশী বংশোদ্ভূতদের বিষয়ে সতর্ক থাকতে ভারত সরকার এবারে আইবিকে রেড এলার্টে রেখেছে। পুলিশ বলেছে, তারা সর্বত্র ‘বাংলাদেশী’ খুঁজতে নেমে পড়েছে। অন্যদিকে আনন্দবাজার পত্রিকা গতকাল বলেছে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের নির্দেশে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে বাড়তি হুঁশিয়ারি জারি রয়েছে। তাই উত্তর ২৪ পরগনা, নদিয়া, মুর্শিদাবাদ, মালদহ ও দক্ষিণ দিনাজপুর থেকে ‘পরের পর’ ধরা পড়ছে ‘বাংলাদেশী অনুপ্রবেশকারীরা’। গত সোমবার দুপুরে হিলি সীমান্তে ধরা হলো ১৭ জনকে। এছাড়া গত কয়েক দিনে হিলি সীমান্তে বিএসএফ ৭০ জন বাংলাদেশী অনুপ্রবেশকারীকে গ্রেপ্তার করেছে। আনন্দবাজার পত্রিকা আরও জানায়, বিএসএফের হিলি কমান্ডার সংগ্রাম বিসওয়াল বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে ধৃত অনুপ্রবেশকারীদের সঙ্গে সঙ্গে ওপারে ফেরত পাঠানোর নির্দেশ আছে। তবে, সন্দেহভাজনকে গ্রেপ্তার করে তদন্তের প্রক্রিয়া চলছে।’
গতকাল ভারতীয় ইংরেজি দৈনিক ডেকান হেরাল্ডে বাল চৌহান লিখেছেন, পুলিশ এখনও ওই বিস্ফোরণ যাতে বর্ধমানের স্থানীয় শোভন মণ্ডল এবং জামাআ’তুল মুজাহিদীনের কর্মী শাকিল আহমেদ নিহত হয়েছেন, তার নেপথ্যে কে বা কারা আছে তা এখনও শনাক্ত করতে পারেনি। তবে সন্দেহ করা হচ্ছে, এর সঙ্গে জেহাদি সংগঠন জেএমবি, পাকিস্তান ভিত্তিক হরকত আল জিহাদি আল ইসলামি (হুজি) এবং পাকিস্তান ভিত্তিক লস্করই তৈয়বা রয়েছে, বাংলাদেশে যাদের শাখা রয়েছে।  ডেকান হেরাল্ড আরও জানায়, পশ্চিমবঙ্গে সিআইডির একটি সূত্র বলেছে, ওই বাড়ির ভেতরের আইইডি কারখানায় সকেট বোমা বানানোর সময় বিস্ফারণ ঘটে। আর তার উপকরণ আনা হয়েছে বাংলাদেশ থেকে। আর এ আইইডি ব্যবহারের টার্গেটও ছিল বাংলাদেশ।
কর্ণাটক পুলিশ পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের কাছে সহায়তা চেয়েছে। কারণ তারা আশঙ্কা করছে যে, বেঙ্গালুরুতে আগে যে বিস্ফোরণ ঘটেছিল তার সঙ্গে ওই গোষ্ঠীর কোন যোগসূত্র আছে কিনা তা খতিয়ে দেখা দরকার। ২০১৩ সালের অক্টোবরে পাটনায় যে বিস্ফোরণ ঘটেছিল কথিত মতে তা বেঙ্গালুরুর এক নারী তাতে মদত দিয়েছিল। পরে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ওই সূত্রের ভাষায়, ‘আমরা পশ্চিমবঙ্গের কাছে তথ্য জানতে চেয়েছি কারণ কর্ণাটকের ওই বিস্ফোরণের সঙ্গে কোন সম্পর্ক আছে কিনা, কারণ এখানে অন্যান্য দেশের নাগরিকসহ বিপুল সংখ্যক বাংলাদেশী অভিবাসী বসবাস করেন।’
ওই সরকারি সূত্র আরও জানায়, তাদের অনেকেই জালজালিয়াতি করে রেশন কার্ড ও আধার কার্ড সংগ্রহ করেছেন। তাদের চিহ্নিত করা খুবই দুরূহু। যদিও বেঙ্গালুরুতে কত বাংলাদেশী রয়েছে তার কোন সঠিক পরিসংখ্যান নেই। তবে পুলিশ সূত্র বলেছে, এ সংখ্যা ৫ হাজার হতে পারে। তারা চরম দরিদ্রসীমার নিচে বস্তিতে বাসবাস করে। পুলিশ সম্প্রতি মারাঠা হালিবস্তি থেকে ৭৫ জন অবৈধ বাংলাদেশীকে গ্রেপ্তার করেছে। তাদের বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে।’
ডেকান হেরাল্ড রিপোর্ট আরও উল্লেখ করে, পুলিশের মতে কর্ণাটকে প্রায় ৫ হাজার বাংলাদেশী রয়েছে। তারা  চরম দরিদ্রের মধ্যে বস্তিতে বাস করেন। সরকারিভাবে ৩০ জন বাংলাদেশীকে শনাক্ত করা হয়েছে। তারা মেডিকেল কারণে  বেঙ্গালুরুতে এসে ভিসার মেয়াদ-অতিরিক্ত সময় ধরে আছেন।

No comments

Powered by Blogger.