পুরস্কার মানব ইউনূসের ১২৬

প্রতিটি মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়। তবে কেউ কেউ স্বপ্নের চেয়েও বড়। প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস তেমনি একজন। নোবেল জয়ী একমাত্র বাংলাদেশীর খাতায় যোগ হলো আরও একটি আন্তর্জাতিক পুরস্কার। সৌদি আরবের পররাষ্ট্র বিষয়ক উপমন্ত্রী প্রিন্স আবদুল আজিজ বিন আবদুল্লাহর তত্ত্বাবধানে শতবার্ষিকী তহবিলের (সেন্টেনিয়াল ফান্ড, সিএফ) অধীনে ২য় বৈশ্বিক উদ্যোক্তা পুরস্কারে (গ্লোবাল ইন্ট্রেপ্রেনিউরশিপ অ্যাওয়ার্ড-২০১৪ বা জিইএ) ভূষিত হয়েছেন তিনি। পুরস্কার কমিটির মহাসচিব ও সিএফ প্রধান আবদুল আজিজ আল-মুতাইরি এ বছর জিইএ পুরস্কার জয়ী হিসেবে ড. ইউনূসের নাম ঘোষণা করেন। এরআগে কমপক্ষে একশ’ ২৫টি পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন তিনি। অর্থনৈতিক মুক্তির মাধ্যমে বৈশ্বয়িক শান্তি প্রতিষ্ঠায় মুহম্মদ ইউনূসের প্রচেষ্টা প্রশংসিত হয়েছে সারা দুনিয়ায়। একের পর এক তিনি জয় করে চলেছেন আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি। ছাড়িয়ে যাচ্ছেন পৃথিবীর আর সব খ্যাতিমান ব্যক্তিকেই। মুহম্মদ ইউনূসকে জিইএ খেতাবে ভূষিত করে আবদুল আজিজ আল-মতাইরি বলেন, উদ্যোক্তাদের সংস্কৃতির ওপর আলোকপাত করতে ড. ইউনূসের উল্লেখযোগ্য প্রচেষ্টার স্বীকৃতিস্বরূপ জিইএ অ্যাওয়ার্ড কমিটি এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। গত বছর সৌদি আরব, মিশর, জর্ডান ও ইয়েমেনের মোট ১৮ জন এ পুরস্কার জিতেছিলেন। ৬টি ভিন্ন ক্যাটাগরিতে এ বছর মোট ৪২টি দেশের ৬০০ প্রার্থীর নাম এসেছে। ক্যাটিাগরিগুলো হলো- সেরা কর্মপরিকল্পনা, সেরা বাস্তবায়নযোগ্য প্রকল্প ধারণা, সেরা পথপ্রদর্শনকারী প্রকল্প, সেরা বিজ্ঞ পরামর্শদাতা ও পথপ্রদর্শক, সেরা চলমান প্রকল্প ও নেতৃত্বদানকারী সেরা ব্যক্তিত্ব। আর ড. ইউনূস পুরস্কার জিতেছেন নেতৃত্ব দেয়া সেরা ব্যক্তিত্ব ক্যাটিগরিতে। অন্য ক্যাটিগরিতে পুরস্কার জয়ীদের নাম প্রকাশ করা হয়নি। আল মুতাইরি আরও বলেন, প্রিন্স আবদুল আজিজের পৃষ্ঠপোষকতায় বৈশ্বিকভাবে সফল উদ্যোক্তাদের সম্মানিত করা ও অগ্রসরমান প্রকল্পগুলোকে অনুপ্রাণিত করার উদ্দেশ্যে এ পুরস্কারই প্রথম। এর লক্ষ্য সৌদি আরবে ও আন্তর্জাতিকভাবে উল্লেখযোগ্য কর্মকাণ্ডের স্বীকৃতি দেয়া। পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠান ৩রা নভেম্বর হবে বলে তিনি জানান। এতে উপসাগরীয় রাষ্ট্রসহ বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক অর্থনীতিবিদ উপস্থিত থাকবেন। প্রাপকের হাতে পুরস্কার তুলে ধরবেন প্রিন্স আবদুল আজিজ। সব মিলিয়ে মোট ১০ লাখ সৌদি রিয়াল সমমানের পুরস্কার দেয়া হবে। আল মুতাইরি আরও জানান, প্রথম ওয়ার্ল্ড কনফারেন্স অন ইন্ট্রেপ্রেনিউরশিপ-এর শুরুর প্রাক্কালে ওই পুরস্কার দেয়া হবে। একই সময় আরও শুরু হচ্ছে উদ্যোক্তাদের পরামর্শমূলক ওয়ার্ল্ড গ্লোবাল উইকের তৃতীয় আসর। এ পুরস্কারের প্রবর্তন নতুন প্রজন্মের উচ্চাকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়ন ও তাদের ভবিষ্যৎ গড়তে প্রিন্স আবদুল আজিজের সহযোগিতা ও সৌদি নেতৃত্বের অব্যাহত প্রচেষ্টার প্রতিফলন। পুরস্কারের প্রতিটি শাখায় আন্তর্জাতিক জুরিবর্গের ভূমিকার কথা উল্লেখ করেন তিনি। সিএফ পুরস্কার কমিটির কর্মপরিকল্পনা অনুযায়ী অন্যান্য কমিটির মধ্যে আন্তর্জাতিক জুরিরা সমন্বয় করে কাজ করেছেন। তিনি আরও জানান, পুরস্কার বিজয়ী ব্যক্তি ও প্রকল্পগুলোর মূল্যায়ন করেছেন সৌদি আরব ও আন্তর্জাতিক জুরিদের সমন্বিত দল।

শান্তিতে নোবেল জয়ী ড. মুহম্মদ ইউনূস আরও যেসব আন্তর্জাতিক পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন তার মধ্যে রয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসনাল গোল্ড মেডেল, এশিয়ান আমেরিকান রিসার্চ লীডারশিপ এওয়ার্ড, বৃটেনের স্কল ফাউন্ডেশনের গ্লোবাল ট্রেজার এওয়ার্ড, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের লুথার কিং সেন্টারের স্যালুট টু গ্রেটনেস এওয়ার্ড, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ট্রান্সফরমেশনাল ফ্রিডম এওয়ার্ড, ইন্ধিরা গান্ধী পুরস্কার, সিডনি পিস প্রাইজ, মালয়েশিয়ার তুন আব্দুর রাজ্জাক এওয়ার্ড, ওয়ার্ল্ড ফুড প্রাইজ, ম্যাগসাইসাই পুরস্কার, মহাত্মা গান্ধী পুরস্কার, দ্যা মেডেল অব ইতালিয়ান প্রেসিডেন্সি অব দ্যা ইতালিয়ান সিনেট, দ্যা ইকোনমিস্টের পুরস্কার,  সিউল শান্তি পুরস্কার, মাদার তেরেসা এওয়ার্ড, ওয়ার্ল্ড এ্যাফেয়ার্স কাউন্সিল এওয়ার্ড, দ্যা ফুল ইমপ্যাক্ট এওয়ার্ড, বারাক ওবামা কতৃক প্রেসিডেন্সিয়াল মেডেল অব প্রিডম, পেরুর সর্বোচ্চ জাতীয় পুরস্কার।

No comments

Powered by Blogger.