রাজনীতি ও মনস্তত্ত্ব- জেনারেলের মন by জাহিদ হায়দার
মানুষের মন ব্যাখ্যাতীত। পৃথিবীর সাত শ কোটি মানুষের মন সাত শ কাটি রকমের। ‘আমার মনের সঙ্গে তোমার মনের অনেক মিল’, এই কথা বলে যাঁরা যুগল হয়ে যান, দেখা গেছে, একদিন তাঁদের মনে অনেক বেশি অমিল। মন চড়ে বেড়ায় ঝোড়ো মেঘের পিঠে। মন কখন চরিত্রের আচরণ বদলে দেবে, মনের বাহক তার সময়-ক্ষণ সব সময় বলতে পারেন না।
অনেক বছর আগে ঢাকার এক দেয়ালে পড়েছিলাম: ‘এরশাদের চরিত্র ফুলের মতো পবিত্র’। আমরা দেখেছিলাম, ওই দেয়াললিখন পড়ে মানুষ মানুষের মুখের দিকে তাকিয়ে, চোখে সন্দেহবাচক প্রশ্ন তুলে হাসত। কী কারণে হাসত আমি জানি না। জেনারেলকে তাঁর বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক যে ‘ক্যারেকটার সার্টিফিকেট’ দিয়েছিলেন, তাতে কি ‘ফুল’ শব্দটি ছিল? এই প্রয়োজনীয় তথ্যও আমার অজানা।
কেউ কর্নেলকে চিঠি লেখে না গার্সিয়া মার্কেজের একটি বই। জেনারেলেকে জানতে লিখেছিলেন গ্রাহাম গ্রিন। পরিসরের অভাবে এই লেখায় আমি বিখ্যাত বই দুটির বিষয়-কথা বলব না। এই লেখার শিরোনাম পড়ে পাঠক ভাবতে পারেন, একজন জেনারেলের মন বোঝা বা বিশ্লেষণ করা বেসামরিক নাগরিকের পক্ষে কি সম্ভব? কারও মন বুঝতে মনোবিজ্ঞানীরা ব্যক্তির সমগ্র জীবনপর্বের সব কথা শুনতে চান, বুঝতে চান।
এরশাদের শৈশব-কৈশোরের এবং সৈনিক জীবন শুরুর পর্ব-অধ্যায় আমি কতটুকু জানি? বেসামরিক জনগণ জেনারেলদের মনমানসিকতার সব ‘কুচকাওয়াজে’র গভীর অর্থও বোঝে না। রাস্তায় ট্যাঙ্ক নেমে এলে বুঝতে চেষ্টা করে, জেনারেল তাঁর কাঁধের উজ্জ্বল সোনালি তলোয়ার গণতন্ত্রের কথা বলে কত দিন ঘোরাবেন পাবলিকের মাথার ওপর। এরশাদ ক্যাপ্টেন, মেজর, কর্নেল ইত্যাদি পদ সাফল্যের সঙ্গে পার করে একদিন হয়েছিলেন জেনারেল এবং এই দেশের রাষ্ট্রপতি। একসময় কবিতা লিখতেন (কবি মোহাম্মদ রফিক জেনারেলের কবি হওয়া পছন্দ করেননি, লিখেছিলেন: সব শালা কবি হতে চায়)।
এরশাদের কার্যকলাপ ও মন এক পাল্লায় এবং এই দেশের অধিকাংশ বাঙালি মুসলমানের মন ও কার্যকলাপ আরেক পাল্লায় রাখলে দেখা যাবে, মাপ হবে সঠিক। (এই বাক্যে ‘কলাপ’ শব্দটি বড় ব্যঞ্জনা ধরে, ‘শতবরণের ভাব-উচ্ছ্বাস কলাপের মতো করেছ বিকাশ’—কবি রবীন্দ্রনাথ ময়ূরপুচ্ছ অর্থে লিখেছেন। আমাদের জেনারেলের মন কখন মেঘের উড়ালে, ডান-বাঁয়ে ছাতা ধরার স্বভাবে ভাব-উচ্ছ্বাসে নেচে ওঠে, ধরে শতবরণ, সে কথা তিনিও ভালোমতো জানেন না। বলেছেন: ‘সকালে বলি এক কথা, বিকেলে আর এক কথা।’ কী জেনুইন পোয়েট!)
লর্ড ক্লাইভ নামে একটি বই লিখেছিলেন লর্ড মেকলে। লেখক তাঁর বইয়ে বাঙালির চরিত্র ও আচার-আচরণ সম্পর্কে ভালো মন্তব্য করেননি। ‘মিথ্যাবাদী’, ‘ঠগ’, ‘প্রতারক’, ‘পরশ্রীকাতর’, ‘সুবিধাবাদী’, ‘ভণ্ড’ ইত্যাদি শব্দ ব্যবহার করে বাঙালি কী জিনিস মেকলে বলেছিলেন। মেকলেরাও ভালো ছিলেন না। মেকলের বলা বাঙালির মধ্যে সনাতন ধর্মের বাঙালিও ছিল।
আমাদের জেনারেল স্বপ্ন দেখতে ভালোবাসেন। কে না ভালোবাসে স্বপ্ন দেখতে! বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে তিনি স্বপ্ন দেখতেন শুক্রবার কোন মসজিদে নামাজ পড়বেন (অনেক দিন তিনি স্বপ্ন দেখে আর নামাজ পড়তে যান না। তিনি দামি পায়জামা-পাঞ্জাবি পরে এবং অনুমান করি সুগন্ধি আতর মেখে জুমা শুরু হওয়ার বেশ আগেই চলে যেতেন স্বপ্নে দেখা মসজিদে। কী ধর্মপ্রাণ মানুষ!
কেউ কেউ জেনারেলের স্বপ্ন-বয়ান বিশ্বাসও করতেন। এদের মধ্যে আনোয়ার জাহিদের থাকার কথা। তিনি বলেছিলেন, জেনারেল যদি তাঁকে রাস্তায় ঝাড়ু দিতে বলেন, তিনি দেবেন। তিনি বড় সাংবাদিক ছিলেন। জেনারেল একজন বাঙালি মুসলমান, তাঁর মনের মধ্যে আসলেই কি নির্দিষ্ট মসজিদে নামাজ পড়া নিয়ে লর্ড মেকলে বর্ণিত ‘ভণ্ডামি’ ছিল? কদিন আগে দেখলাম, ‘নারীরা তেঁতুল’—এই তত্ত্বের জনক শফী হুজুরের কাছে জেনারেল গেছেন। হেফাজতের সমাবেশকে তিনি সমর্থন করেন। ইসলামকে রাষ্ট্রধর্ম করেছিলেন এই জেনারেল।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া এরশাদকে দুর্নীতির কারণে জেলে পুরেছিলেন। বাংলাদেশ একসময় পাঁচবার দুর্নীতিতে ১ নম্বরও হয়েছিল; এখনো আমরা দুর্নীতি করতে বড় পারদর্শী।
বিভিন্ন দেশ লুণ্ঠন করে বিশ্ববীরের খ্যাতি পেয়েছিলেন আলেকজান্ডার। তিনি এই উপমহাদেশে এসে তাঁর লুণ্ঠনসঙ্গী সেলুকাসকে বলেছিলেন: ‘কী বিচিত্র এই দেশ, সেলুকাস!’ আমার ধারণা, আলেকজান্ডার উপমহাদেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের বৈচিত্র্য দেখে ওই মন্তব্য করেছিলেন। তাঁর কথাকে এখন ব্যবহার করা হয় আমাদের আচার-আচরণের বহুবিধ অসংগতির ধারা মিলিয়ে। জেনারেলকে কোন বিশেষণে রাখব?
আমার সঙ্গে অনেকে একমত হতে পারেন, না-ও পারেন; আমাদের জেনারেল শৈশবেই ভালো ডিগবাজি দেওয়া শিখেছিলেন। সেদিন আফ্রিকান এক ফুটবল খেলোয়াড়কে দেখলাম, গোল করে দু-তিনটি ডিগবাজি দিলেন। তাঁর সহখেলোয়াড়েরা তাঁকে জড়িয়ে ধরার জন্য করছিলেন ছোটাছুটি। আমাদের দেশের বড় দুটি রাজনৈতিক দলের সমর্থকেরা এরশাদের ডিগবাজি বড় ভালোবাসেন, কখন কোন দলের পক্ষে ও বিপক্ষে গোল করবেন এবং ডিগবাজি দেবেন সে বিষয়ে তিনি এবং তাঁকে দলে নেওয়া লোকজনও জানেন না। এরশাদকে নিজেদের অপসুবিধার জন্য প্রয়োজনীয় করে তুলেছে আমাদের দুই বড় রাজনৈতিক দল। দুই দলের নেতারা জেনারেলের সঙ্গ পেতে কত কিছু করেন!
জেনারেলের সৈনিক জীবন, রাজনৈতিক জীবন, কবিপ্রেমিক মন, ধর্মীয় মন, ডিগবাজির কসরত এবং বাঙালির মন ও কর্ম সম্পর্কে মেকলে বর্ণিত কথামালা—এ সবকিছু পাওয়া যাবে এই দেশের অনেক বাঙালির মধ্যে। এই জেনারেল আমাদের সব কর্ম-অপকর্মের সমষ্টি। জেনারেলকে যখনই দেখি, মনে হয় ভদ্রলোক আমাদের জাতির সার্থক প্রতিনিধি। তাঁকে অনুরোধ, তিনি যেন আত্মহত্যা না করেন। তাঁর কর্মকাণ্ড থেকে আমাদের যদি আরও কিছু শিক্ষা হয়, শিক্ষা মানুষকে সৎ করে, সুন্দর করে, তা হলে জেনারেলকে আগামী দিনের বাঙালিরা সূত্র (রেফারেন্স) হিসেবে ব্যবহার করবেন এবং বলবেন, জেনারেল এরশাদের জীবনকর্ম থেকে যা কিছু শিখেছ, তা করো না!
জাহিদ হায়দার: কবি, উন্নয়নকর্মী।
কেউ কর্নেলকে চিঠি লেখে না গার্সিয়া মার্কেজের একটি বই। জেনারেলেকে জানতে লিখেছিলেন গ্রাহাম গ্রিন। পরিসরের অভাবে এই লেখায় আমি বিখ্যাত বই দুটির বিষয়-কথা বলব না। এই লেখার শিরোনাম পড়ে পাঠক ভাবতে পারেন, একজন জেনারেলের মন বোঝা বা বিশ্লেষণ করা বেসামরিক নাগরিকের পক্ষে কি সম্ভব? কারও মন বুঝতে মনোবিজ্ঞানীরা ব্যক্তির সমগ্র জীবনপর্বের সব কথা শুনতে চান, বুঝতে চান।
এরশাদের শৈশব-কৈশোরের এবং সৈনিক জীবন শুরুর পর্ব-অধ্যায় আমি কতটুকু জানি? বেসামরিক জনগণ জেনারেলদের মনমানসিকতার সব ‘কুচকাওয়াজে’র গভীর অর্থও বোঝে না। রাস্তায় ট্যাঙ্ক নেমে এলে বুঝতে চেষ্টা করে, জেনারেল তাঁর কাঁধের উজ্জ্বল সোনালি তলোয়ার গণতন্ত্রের কথা বলে কত দিন ঘোরাবেন পাবলিকের মাথার ওপর। এরশাদ ক্যাপ্টেন, মেজর, কর্নেল ইত্যাদি পদ সাফল্যের সঙ্গে পার করে একদিন হয়েছিলেন জেনারেল এবং এই দেশের রাষ্ট্রপতি। একসময় কবিতা লিখতেন (কবি মোহাম্মদ রফিক জেনারেলের কবি হওয়া পছন্দ করেননি, লিখেছিলেন: সব শালা কবি হতে চায়)।
এরশাদের কার্যকলাপ ও মন এক পাল্লায় এবং এই দেশের অধিকাংশ বাঙালি মুসলমানের মন ও কার্যকলাপ আরেক পাল্লায় রাখলে দেখা যাবে, মাপ হবে সঠিক। (এই বাক্যে ‘কলাপ’ শব্দটি বড় ব্যঞ্জনা ধরে, ‘শতবরণের ভাব-উচ্ছ্বাস কলাপের মতো করেছ বিকাশ’—কবি রবীন্দ্রনাথ ময়ূরপুচ্ছ অর্থে লিখেছেন। আমাদের জেনারেলের মন কখন মেঘের উড়ালে, ডান-বাঁয়ে ছাতা ধরার স্বভাবে ভাব-উচ্ছ্বাসে নেচে ওঠে, ধরে শতবরণ, সে কথা তিনিও ভালোমতো জানেন না। বলেছেন: ‘সকালে বলি এক কথা, বিকেলে আর এক কথা।’ কী জেনুইন পোয়েট!)
লর্ড ক্লাইভ নামে একটি বই লিখেছিলেন লর্ড মেকলে। লেখক তাঁর বইয়ে বাঙালির চরিত্র ও আচার-আচরণ সম্পর্কে ভালো মন্তব্য করেননি। ‘মিথ্যাবাদী’, ‘ঠগ’, ‘প্রতারক’, ‘পরশ্রীকাতর’, ‘সুবিধাবাদী’, ‘ভণ্ড’ ইত্যাদি শব্দ ব্যবহার করে বাঙালি কী জিনিস মেকলে বলেছিলেন। মেকলেরাও ভালো ছিলেন না। মেকলের বলা বাঙালির মধ্যে সনাতন ধর্মের বাঙালিও ছিল।
আমাদের জেনারেল স্বপ্ন দেখতে ভালোবাসেন। কে না ভালোবাসে স্বপ্ন দেখতে! বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে তিনি স্বপ্ন দেখতেন শুক্রবার কোন মসজিদে নামাজ পড়বেন (অনেক দিন তিনি স্বপ্ন দেখে আর নামাজ পড়তে যান না। তিনি দামি পায়জামা-পাঞ্জাবি পরে এবং অনুমান করি সুগন্ধি আতর মেখে জুমা শুরু হওয়ার বেশ আগেই চলে যেতেন স্বপ্নে দেখা মসজিদে। কী ধর্মপ্রাণ মানুষ!
কেউ কেউ জেনারেলের স্বপ্ন-বয়ান বিশ্বাসও করতেন। এদের মধ্যে আনোয়ার জাহিদের থাকার কথা। তিনি বলেছিলেন, জেনারেল যদি তাঁকে রাস্তায় ঝাড়ু দিতে বলেন, তিনি দেবেন। তিনি বড় সাংবাদিক ছিলেন। জেনারেল একজন বাঙালি মুসলমান, তাঁর মনের মধ্যে আসলেই কি নির্দিষ্ট মসজিদে নামাজ পড়া নিয়ে লর্ড মেকলে বর্ণিত ‘ভণ্ডামি’ ছিল? কদিন আগে দেখলাম, ‘নারীরা তেঁতুল’—এই তত্ত্বের জনক শফী হুজুরের কাছে জেনারেল গেছেন। হেফাজতের সমাবেশকে তিনি সমর্থন করেন। ইসলামকে রাষ্ট্রধর্ম করেছিলেন এই জেনারেল।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া এরশাদকে দুর্নীতির কারণে জেলে পুরেছিলেন। বাংলাদেশ একসময় পাঁচবার দুর্নীতিতে ১ নম্বরও হয়েছিল; এখনো আমরা দুর্নীতি করতে বড় পারদর্শী।
বিভিন্ন দেশ লুণ্ঠন করে বিশ্ববীরের খ্যাতি পেয়েছিলেন আলেকজান্ডার। তিনি এই উপমহাদেশে এসে তাঁর লুণ্ঠনসঙ্গী সেলুকাসকে বলেছিলেন: ‘কী বিচিত্র এই দেশ, সেলুকাস!’ আমার ধারণা, আলেকজান্ডার উপমহাদেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের বৈচিত্র্য দেখে ওই মন্তব্য করেছিলেন। তাঁর কথাকে এখন ব্যবহার করা হয় আমাদের আচার-আচরণের বহুবিধ অসংগতির ধারা মিলিয়ে। জেনারেলকে কোন বিশেষণে রাখব?
আমার সঙ্গে অনেকে একমত হতে পারেন, না-ও পারেন; আমাদের জেনারেল শৈশবেই ভালো ডিগবাজি দেওয়া শিখেছিলেন। সেদিন আফ্রিকান এক ফুটবল খেলোয়াড়কে দেখলাম, গোল করে দু-তিনটি ডিগবাজি দিলেন। তাঁর সহখেলোয়াড়েরা তাঁকে জড়িয়ে ধরার জন্য করছিলেন ছোটাছুটি। আমাদের দেশের বড় দুটি রাজনৈতিক দলের সমর্থকেরা এরশাদের ডিগবাজি বড় ভালোবাসেন, কখন কোন দলের পক্ষে ও বিপক্ষে গোল করবেন এবং ডিগবাজি দেবেন সে বিষয়ে তিনি এবং তাঁকে দলে নেওয়া লোকজনও জানেন না। এরশাদকে নিজেদের অপসুবিধার জন্য প্রয়োজনীয় করে তুলেছে আমাদের দুই বড় রাজনৈতিক দল। দুই দলের নেতারা জেনারেলের সঙ্গ পেতে কত কিছু করেন!
জেনারেলের সৈনিক জীবন, রাজনৈতিক জীবন, কবিপ্রেমিক মন, ধর্মীয় মন, ডিগবাজির কসরত এবং বাঙালির মন ও কর্ম সম্পর্কে মেকলে বর্ণিত কথামালা—এ সবকিছু পাওয়া যাবে এই দেশের অনেক বাঙালির মধ্যে। এই জেনারেল আমাদের সব কর্ম-অপকর্মের সমষ্টি। জেনারেলকে যখনই দেখি, মনে হয় ভদ্রলোক আমাদের জাতির সার্থক প্রতিনিধি। তাঁকে অনুরোধ, তিনি যেন আত্মহত্যা না করেন। তাঁর কর্মকাণ্ড থেকে আমাদের যদি আরও কিছু শিক্ষা হয়, শিক্ষা মানুষকে সৎ করে, সুন্দর করে, তা হলে জেনারেলকে আগামী দিনের বাঙালিরা সূত্র (রেফারেন্স) হিসেবে ব্যবহার করবেন এবং বলবেন, জেনারেল এরশাদের জীবনকর্ম থেকে যা কিছু শিখেছ, তা করো না!
জাহিদ হায়দার: কবি, উন্নয়নকর্মী।
No comments