আসল মোমেনা ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য দেননি: কাদের মোল্লার স্ত্রী

জামায়াতের সহকারি সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল কাদের মোল্লার মামলায় সাক্ষী নিয়ে জালিয়াতির অভিযোগ করেছেন কাদের মোল্লার স্ত্রী।
প্রকৃত মোমেনা বেগম ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য দেননি বলেও জানিয়েছেন তিনি। সোমবার সকালে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি ভবন মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি করেন কাদের মোল্লার স্ত্রী সানোয়ারা বেগম।

তিনি বলেন, একমাত্র সাক্ষী (মোমেনা বেগম) সাক্ষ্যের ভিত্তিতে আমার স্বামীকে মৃত্যুদন্ড দেওয়া হয়েছে। সেই মোমেনা বেগম আদৌও আদালতে সাক্ষী দিতে আসেন নি। ক্যামেরা ট্রায়ালের নামে গোপন বিচারে ভূয়া একজন মহিলাকে মোমেনা বেগম সাজিয়ে আদালতে বক্তব্য দেওয়ানো হয়েছে। কিন্তু পরবর্তীতে জল্লাদখানায় সংরক্ষিত প্রকৃত মোমেনা বেগমের ছবি দেখে আমাদের আইনজীবীরা নিশ্চিত করেছেন আদালতে সাক্ষ্য দেওয়া মোমেনা বেগম প্রকৃত মোমেনা বেগম ছিলেন না। অথচ এই রকম একজন ভুয়া সাক্ষীর তিন জায়গায় প্রদত্ত তিন রকমের বক্তব্যে পরে শুধুমাত্র তার সাক্ষ্যের ভিত্তিতেই আমার স্বামীকে মৃত্যুদণ্ড প্রদান করা হয়েছে। আমরা মনে করি তা নজিরবিহীন এবং এটি একটি ভুল রায়। আমরা মনে করি সংবিধান প্রদত্ত রিভিউ এর সুযোগ পেলে সুপ্রিম কোর্টে এই বিষয়গুলো তুলে ধরার মাধ্যমে আব্দুল কাদের মোল্লার মৃত্যুদণ্ডের রায় পাল্টে যাওয়া সম্ভব।
লিখিত বক্তব্যে সানোয়ারা বেগম আরও বলেন, এমতবস্থায় আমরা সরকার, সুপ্রিম কোর্ট, দেশের সকল আইনজীবী মানবাধিকার সংগঠন সমূহসহ বিশ্ব সম্প্রদায়ের কাছে অনুরোধ জনাচ্ছি যে, যে বিচার প্রক্রিয়া এবং সাক্ষী নিয়ে এতো বড় জালিয়াতির অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছে একজন নির্দোষ মানুষের জীবন বাচানোর স্বার্থে একটি স্বাধীন এবং নিরপেক্ষ তদন্ত সংস্থার মাধ্যমে এই ভয়াবহ জালিয়াতির বিষয়ে তদন্ত করে মামলার সঠিক এবং পুর্নবিচার করা হোক।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন কাদের মোল্লার ছেলে হাসান জামিল, মেয়ে আমানাতুন পারভীন, আইনজীবী ফরিদ উদ্দিন খান প্রমুখ।
কাদের মোল্লার স্ত্রী বলেন, উপমহাদেশের ইতিহাসে বিচারিক আদালতে মৃত্যুদণ্ড না দেওয়া স্বত্ত্বেও সুপ্রিম কোর্টের মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার এটাই একমাত্র ঘটনা। এখন সংবিধান অনুসারে তাঁর আপিল রিভিউ করার অধিকার রয়েছে। যেহেতু একজন বিচারপতি মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার বিরোধীতা করেছেন, তাই রিভিউ করা খুব গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু আমরা জানতে পেরেছি সরকার তড়িঘড়ি করে তাঁর মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের চেষ্টা করছে। রিভিউ করার অধিকার না দিয়ে এবং জেল কোডের বিধান অনুসরণ না করে দ্রুত ফাঁসি দেওয়ার যে চেষ্টা চলছে তা সর্বজনীন মানবাধিকারের পরিপন্থী।

No comments

Powered by Blogger.