প্রধানমন্ত্রী ইংলাক পতন বিক্ষোভে থাইল্যান্ডে সরকারের অচলাবস্থা
থাইল্যান্ডে প্রধানমন্ত্রী ইংলাক সিনাওয়াত্রার সরকার পতনের দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত রয়েছে। সোমবার বিক্ষোভকারীরা দুটি মন্ত্রণালয় অবরুদ্ধ করলেও মঙ্গলবার এ তালিকায় যুক্ত হয়েছে আরও তিনটি মন্ত্রণালয়। মঙ্গলবার বিক্ষোভকারীরা পর্যটন, পরিবহন ও কৃষি মন্ত্রণালয় ঘিরে ফেলেছে বিক্ষোভকারীরা। এর আগের দিন অর্থ ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অবরুদ্ধ করে বিক্ষোভকারীরা। বিক্ষোভকারীদের অনেকে অর্থমন্ত্রণালয়ে প্রবেশ করে সেখানে অবস্থ?ান নেন। এদিকে. প্রধান প্রধান মন্ত্রণালয়গুলো ঘিরে সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারীদের অবস্থানের প্রেক্ষাপটে প্রধানমন্ত্রী ইংলাক সিনাওয়াত্রা মঙ্গলবার বিক্ষোভকারীদের প্রতি চলমান বিশৃংখল পরিস্থিতি অবসানের আহ্বান জানিয়েছেন। এদিকে প্রধানমন্ত্রী পার্লামেন্টে তার বিরুদ্ধে এক অনাস্থা বিতর্ক মোকাবেলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছে। ইংলাক সিনাওয়াত্রা ও তার ভাই ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী থাকসিন সিনাওয়াত্রার বিরুদ্ধে হাজার হাজার মানুষ রাজপথে বিক্ষোভ করছে। ২০১০ সালের পর এই বিক্ষোভকে সবচেয়ে বড় হিসেবে দেখা হচ্ছে।
২০১০ সালে বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে পরিচালিত সামরিক অভিযানে ৯০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়। রাজনৈতিকভাবে অস্থিতিশীলতাপূর্ণ দেশটিতে নতুন করে গোলযোগ সৃষ্টি হওয়ায় আন্তর্জাতিক অঙ্গনে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। দেশটিতে নতুন করে অশান্তি বিরাজ করবে বলে আশংকা করা হচ্ছে। মঙ্গলবার সকালে পার্লামেন্টে পৌঁছে ইংলাক সিনাওয়াত্রা সাংবাদিকদের বলেন, ‘সবাইকেই আইন মেনে চলা উচিত এবং আইনের শাসনের পরিবর্তে ‘মব রুল’ বা উন্মত্ত জনতার নৈরাজ্য সৃষ্টি করা উচিত নয়।’ এ সময় তিনি কর্তৃপক্ষের সম্পূর্ণভাবে সহিংসতা অবলম্বন না করার প্রতিশ্র“তি পুনর্ব্যক্ত করেন। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত পার্লামেন্ট সদস্যরা গত সপ্তাহে বিরোধী দলের উত্থাপিত একটি অনাস্থা প্রস্তাবের ওপর বিতর্ক শুরু করেছেন। এদিকে, পর্যটন মন্ত্রী সোমসাক পুরিসি সাক বলেছেন, আমাদের (মন্ত্রণালয়) ছাড়তে হবে কেননা বিক্ষোভকারীরা সব ধরনের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেবে। এএফপির খবরে বলা হয়েছে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদেরও কার্যালয় ছাড়তে এক ঘণ্টা সময় দিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা। বিক্ষোভকারীদের দাবি,
ইংলাক সিনাওয়াত্রার ওপর তার ভাই ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী থাকসিন সিনাওয়াত্রার নিয়ন্ত্রণ রয়েছে। সোমবার কর্মকর্তাদের কারফিউ ও রাস্তা চলাচল সাময়িক নিষিদ্ধ করার নির্দেশ দিয়েছেন। তবে ইংলাক সিনাওয়াত্রা বলেছেন, বিক্ষোভ দমনে তিনি সহিংসতার পথ বেছে নেবেন না। পদত্যাগের দাবি নাকচ করে দিয়ে তিনি বলেছেন, রাজনৈতিক সংকট সমাধানের জন্য সমঝোতায় আসা ও আলোচনা করা উচিত। গত মাসে বিতর্কিত সাধারণ ক্ষমা বিল আনার পর থেকেই শুরু হয় সরকারবিরোধী আন্দোলন। বিলটি পার্লামেন্টের নিুকক্ষে পাস হলেও বিক্ষোভকারীদের বিরোধের মুখে উচ্চকক্ষ সিনেটে প্রত্যাখ্যাত হয়। বিক্ষোভকারীরা বলেছে, ওই বিলের মাধ্যমে দুর্নীতির দায়ে জেলে না খেটেই থাইল্যান্ডে ফিরে আসবেন থাকসিন। ২০০৬ সালে সেনা অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর স্বেচ্ছায় নির্বাসনে রয়েছেন থাকসিন। ডেমোক্রেটিক পার্টির আইনজীবী সুথেপ থাউগসুবানের নেতৃত্বাধীন বিক্ষোভকারীরা সারারাত ধরে অর্থ ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বাইরে শিবির গেড়ে অবস্থান নেন।
No comments