ইয়েমেনে ১৭ বিক্ষোভকারী নিহত, আহত ৪০০

ইয়েমেনের তায়েজ প্রদেশে গতকাল সোমবার সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলি চালিয়েছে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী। এ সময় বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে কাঁদানে গ্যাস ও পাথর ছোড়া হয়। এতে ১৭ জন নিহত ও ৪০০ জনেরও বেশি লোক আহত হয়। এদিকে যুক্তরাষ্ট্র ইয়েমেনের প্রেসিডেন্ট আলী অবদুল্লাহ সালেহর প্রতি সমর্থন প্রত্যাহার করে নিচ্ছে বলে জানা গেছে।
গত রোববার তায়েজ প্রদেশে বিক্ষোভকারীদের ওপর পুলিশের গুলিবর্ষণের ঘটনার প্রতিবাদে গতকাল ওই বিক্ষোভের আয়োজন করা হয়। রোববারের ঘটনায় একজন নিহত ও কমপক্ষে ৩০০ লোক আহত হয়।
একজন প্রত্যক্ষদর্শী বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানান, ‘হঠাৎ করেই বিক্ষোভকারীরা প্রদেশের প্রশাসনিক ভবনের চার পাশে জমায়েত হতে থাকে। এরপর তারা গভর্নরের কার্যালয়ের দিকে মিছিল নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় নিরাপত্তা বাহিনী তাদের লক্ষ্য করে গুলি ও কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে। এ সময় সাদা পোশাকধারী পুলিশ সদস্যরা বিক্ষোভকারীদের ওপর পাথরও নিক্ষেপ করেন।’
তায়েজের কেন্দ্রস্থলে একটি অস্থায়ী হাসপাতালের চিকিৎসক সাদেক আল-শুজা জানান, ১৭ জনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। এ ছাড়া আহত ব্যক্তিদের মধ্যে নয়জন গুলিতে, পাথরের আঘাতে ৫০ জন ও কাঁদানে গ্যাসের কারণে ৩৫০ জন আহত হয়েছে। তবে তায়েজের গভর্নর কোনো লোকের প্রাণহানির খবর অস্বীকার করেছেন।
তিউনিসিয়ার পর মিসরে গণবিক্ষোভে সরকার পতনের ঘটনায় অনুপ্রাণিত হয়ে ইয়েমেনেও সরকারবিরোধী বিক্ষোভ শুরু হয়। তবে ৩২ বছর ধরে দেশটির ক্ষমতায় থাকা প্রেসিডেন্ট সালেহ গত রোববার বিক্ষোভকারীদের প্রতি রাস্তায় বিক্ষোভ বন্ধ করার আহ্বান জানান।
সালেহ তায়েজ প্রদেশের সমর্থকদের উদ্দেশে বলেন, ‘ক্ষমতার পালা পরিবর্তনের ক্ষেত্রে আমরা আলোচনার জন্য প্রস্তুত। তবে শান্তিপূর্ণ ও সাংবিধানিক কাঠামোর মধ্যেই এটা হতে হবে।’
গত ফেব্রুয়ারির গোড়ার দিকে সানা বিশ্ববিদ্যালয়ের আশপাশে হাজার হাজার মানুষ সালেহর পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করে। তবে দুই সপ্তাহ ধরে সালেহর সমর্থকেরাও রাস্তায় নেমেছে। তবে আল-কায়েদার বিরুদ্ধে যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘদিনের মিত্র সালেহ ওয়াশিংটনের সমর্থন হারাতে যাচ্ছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্র ও ইয়েমেনের কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে নিউইয়র্ক টাইমস-এর একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রেসিডেন্ট আলী অবদুল্লাহ সালেহর প্রতি সমর্থন প্রত্যাহার করতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। একই সঙ্গে সালেহর প্রস্থানের পথ সুগম করতে আলোচনায় সহযোগিতাও দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। এ ছাড়া সালেহর প্রস্থানের জন্য এক সপ্তাহ আগেই আলোচনার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলে প্রতিবেদনে জানানো হয়।

No comments

Powered by Blogger.