রিয়ালের ছয়ে রোনালদোর চার

দুঃসময়ে মানুষ কাতর হয়ে পড়ে। কিন্তু ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো তা হন না। চরম গোল-খরায় যখন ভুগছিলেন, রোনালদো হাসিমুখে বলেছেন—গোল নিয়ে একদমই ভাবনা নেই তাঁর। মানুষ তাদের সুন্দরতম সময়েও একসঙ্গে বসে দুঃখ-ব্যথা ভাগাভাগি করতে ভালোবাসে। আর রোনালদো সুখের সময়ে রোমন্থন করেন শুধু সুখস্মৃতিই।
পরশু রেসিং সান্তান্দারের বিপক্ষে রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে চার গোল করার পর একটি সুখের স্মৃতিই মনে পড়ে গেছে রোনালদোর। এর আগে কখনো চার গোল করেছেন কি না—এমন প্রশ্নের উত্তরে রোনালদো বললেন, ‘সর্বশেষ আমি এক ম্যাচে চার গোল করেছি ছোটদের লিগে।’
পর্তুগালের রাস্তায় ফুটবল খেলতে খেলতেই নিজের ফুটবল-প্রতিভা চিনিয়েছিলেন রোনালদো। ম্যাদেইরার রাস্তা থেকে পরে নাম লিখিয়েছিলেন অ্যানদোরিনহা ক্লাবের যুবদলে। বছর পনেরো আগে সর্বশেষ সেখানেই পেয়েছিলেন চার গোল করার আনন্দ।
এরপর পর্তুগাল লিগ, ইংলিশ লিগ মাতিয়ে এসেছেন স্পেনের ফুটবলে। মাতিয়ে যাচ্ছেন স্পেনের ফুটবল, মুগ্ধতায় ভরিয়ে দিচ্ছেন রিয়াল মাদ্রিদ সমর্থকদের। তবে শীর্ষ পর্যায়ের ফুটবলে চার গোল পেলেন এই প্রথম। প্রথম পাওয়া এই অর্জনের আনন্দে উদ্বেল রোনালদো, ‘আমি খুব খুশি। এর আগে চার গোল করিনি তো!’
বেশ কিছুদিন ধরেই বইছে রোনালদোর ভুবনে শুধুই আনন্দবাতাস। স্প্যানিশ লিগে সর্বশেষ তিন ম্যাচে ৮ গোল করে ফেললেন। তবে মৌসুমের শুরুটা এমন আনন্দের ছিল না পর্তুগিজ উইঙ্গারের। লিগের প্রথম ৫ ম্যাচে গোল পেয়েছিলেন মাত্র ১টি। তবে এখন ৯ গোল নিয়ে স্প্যানিশ লিগের গোলদাতার তালিকায় সবার ওপরেই আছেন ২০০৮ সালের ফিফা বর্ষসেরা খেলোয়াড়।
মৌসুমের শুরুতেই শুধু নয়, বিশ্বকাপ এবং বিশ্বকাপের আগের প্রায় ছয়টা মাসও খুব বাজে কেটেছে রোনালদোর। বিশ্বকাপে খেলতে যাওয়ার আগে পর্তুগাল দলকে নিয়ে সবচেয়ে বড় আলোচনার বিষয় ছিল রোনালদোর গোল-খরা। তাঁর সেই গোল-খরা কাটল বিশ্বকাপে পর্তুগালের দ্বিতীয় ম্যাচে, উত্তর কোরিয়ার বিপক্ষে। প্রায় ৬ মাস পর গোল পেয়ে রোনালদো সেদিন ছিলেন আনন্দে আত্মহারা। তবে স্পেনের কাছে হেরে বিশ্বকাপের দ্বিতীয় রাউন্ড থেকেই বিদায় নিতে হয়েছিল তাঁর দলকে।
ওসব এখন অতীত। রোনালদোর সাম্প্রতিক দুর্দান্ত পারফরম্যান্স ব্যর্থ অতীত মুছে আলো ঝলমল বর্তমানেরই যেন জয়গান গাইছে।

No comments

Powered by Blogger.