ইয়েমেনে দুটি পশ্চিমা লক্ষ্যবস্তুতে সন্দেহভাজন জঙ্গি হামলা

ইয়েমেনের রাজধানী সানায় গতকাল বুধবার সন্দেহভাজন আল-কায়েদা জঙ্গিরা পশ্চিমা দুটি লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়েছে। ব্রিটিশ দূতাবাসের এক গাড়িতে রকেটচালিত গ্রেনেড হামলায় দূতাবাসের এক কর্মীসহ তিনজন আহত হয়েছেন। তবে এ ঘটনায় অল্পের জন্য বেঁচে গেছেন ব্রিটেনের উপরাষ্ট্রদূত ফিওন্না গিব। এ ছাড়া অস্ট্রিয়ার এক জ্বালানি প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তারক্ষীর গুলিতে একজন নিহত হয়েছেন। ইয়েমেনের সরকারি কর্মকর্তারা এ কথা জানান।
এদিকে আল-কায়েদা বিভিন্ন দূতাবাসে হামলার পরিকল্পনা করছে—এমন তথ্যের ভিত্তিতে ইয়েমেন কর্তৃপক্ষ সানায় অবস্থিত দূতাবাসগুলোতে নিরাপত্তা জোরদার করেছে। এর দুই দিন পরই ব্রিটিশ দূতাবাসে এ হামলার ঘটনা ঘটল।
পুলিশ জানায়, গ্রেনেড হামলায় ব্রিটিশ দূতাবাসের গাড়িটি বিধ্বস্ত হয়েছে। গাড়িটি সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থল থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। তবে এ ব্যাপারে পুলিশ কিছু জানায়নি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ব্রিটিশ দূতাবাস থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার দূরে এই গ্রেনেড হামলার ঘটনা ঘটে। গ্রেনেড সরাসরি গাড়িটিকে আঘাত করেছে।
সানায় অবস্থিত ব্রিটিশ দূতাবাসের এক কর্মকর্তা তাঁদের এক গাড়িতে হামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, এতে তাঁদের একজন কর্মী আহত হয়েছেন। এ ছাড়া তিনি বিস্তারিত কিছু জানাননি।
এদিকে ব্রিটেনের পররাষ্ট্র দপ্তরের এক বিবৃতিতে বলা হয়, স্থানীয় সময় গতকাল সকাল সোয়া আটটার দিকে এ হামলা হয়েছে। গাড়িটি তাদের দূতাবাসের পাঁচজন কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়ে দূতাবাসের দিকে যাচ্ছিল। এতে একজন সামান্য আহত হয়েছেন। তাঁকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া হামলায় কমপক্ষে দুজন পথচারী আহত হয়েছেন।
ব্রিটেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী উইলিয়াম হেগ বিবিসি রেডিওকে জানান, দূতাবাসের সব কর্মকর্তা-কর্মচারী বাসায় অবস্থান করছেন। তিনি আরও বলেন, ইয়েমেন খুব ভয়ংকর জায়গা। এখানে কাজ করা বেশ কঠিন।
সংবাদ সংস্থা এএফপির এক সাংবাদিক জানান, এ ঘটনার পর ব্রিটিশ দূতাবাসের আশপাশে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এ ছাড়া দূতাবাসে আসার রাস্তাও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
এর আগে গত ২৬ এপ্রিল এক আত্মঘাতী বোমা হামলাকারী ব্রিটিশ দূতাবাসের দুটি গাড়িতে হামলা চালায়। পরে আল-কায়েদার স্থানীয় এক গোষ্ঠী ওই হামলার কথা স্বীকার করে। এ কারণে সে সময় দূতাবাস দুই সপ্তাহ বন্ধ ছিল।
এদিকে সানার নিকটবর্তী হাদ্দাহ শহরে অস্ট্রীয় গ্যাস ও তেলের প্রতিষ্ঠান ওএমভির প্রধান এক নিরাপত্তারক্ষীর গুলিতে নিহত হয়েছেন। তিনি ফরাসি নাগরিক। নিরাপত্তা বাহিনী সূত্র এ কথা জানায়।
এই হত্যাকাণ্ডের পর নিরাপত্তা বাহিনী প্রতিষ্ঠানটি ঘিরে রেখেছে। তবে প্রতিষ্ঠানটি এ ব্যাপারে কিছুই জানায়নি। এর আগে গত জুলাইয়ে আল-কায়েদার জঙ্গিরা দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় সাবা প্রদেশে ওএমভির পরিচালিত একটি তেলক্ষেত্রে হামলা চালিয়েছিল।

No comments

Powered by Blogger.