হাঙ্গেরির বিষাক্ত বর্জ্য পরিষ্কারে সময় লাগবে এক বছর

হাঙ্গেরির পশ্চিমাঞ্চলে ছড়িয়ে পড়া বিষাক্ত বর্জ্য পরিষ্কার করতে এক বছর সময় লাগতে পারে। এ জন্য কোটি কোটি ডলার ব্যয় করতে হবে। দেশটির পরিবেশমন্ত্রী জোলতান ইলেস এ কথা জানিয়েছেন।
এদিকে এসব বর্জ্য দানিউবসহ কয়েকটি নদীতে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। পাশাপাশি বর্জ্য অপসারণের কাজ চলছে। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা থেকে স্থানীয় বাসিন্দাদের সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। সেখানে নিরাপত্তা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য ও জরুরি বিভাগের দল মোতায়েন করা হয়েছে। তিনটি এলাকায় জরুরি অবস্থা বলবৎ রয়েছে।
গত সোমবার ডেভেসসার এলাকার আজকাই টিমফোল্ডজিয়ার নামের অ্যালুমিনিয়াম উৎপাদন কারখানার বর্জ্য সংরক্ষণাগারের বাঁধ ভেঙে যায়। এতে তিনটি এলাকায় সাতটি গ্রাম প্লাবিত হয়। এ ঘটনায় দুই শিশুসহ চারজনের মৃত্যু হয়। অসুস্থ হয় অন্তত ১২০ জন। এ ছাড়া ছয়জন নিখোঁজ রয়েছেন। মঙ্গলবার কয়েকটি এলাকায় জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়।
হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবান মৃত ব্যক্তিদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে এ ঘটনায় দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সান্ডোর পিন্টার রাজধানী বুদাপেস্টে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, সংরক্ষণাগারের বাঁধ মেরামত করা হয়েছে। আপাতত কোনো ঝুঁকি নেই।
দেশটির ডিজাস্টার রিলিফ সার্ভিসের মুখপাত্র টিমেয়া পেট্রোসজি জানান, এই বর্জ্য যাতে নদীতে পৌঁছাতে না পারে, এ জন্য কাজ চলছে। বর্জ্যগুলোকে নিষ্ক্রিয় করা হচ্ছে।
গতকাল এই কাজের ভালো অগ্রগতি হয়েছে। তিনি জানান, ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার সড়ক ও বাড়িঘর খুব ভালোভাবে ধুয়েমুছে পরিষ্কার করা হচ্ছে। এই কাজে গতকাল বুধবার ৫০০ লোককে নিযুক্ত করা হয়েছে। কোলোন্টার এলাকায় ক্ষতিগ্রস্ত একটি সেতুও গতকাল পুনঃস্থাপন করা হয়েছে। তবে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা থেকে সরিয়ে নেওয়া লোকজন শিগগিরই বাড়ি ফিরতে পারছেন না।
পেট্রোসজি জানান, এসব এলাকার খাওয়ার পানি সরবরাহের ব্যবস্থা ঠিক রয়েছে। তবে সতর্কতার কারণে ওই পানি ব্যবহার না করতে সবাইকে বলা হয়েছে। এ ছাড়া বাড়িতে উৎপাদিত কোনো খাবার গ্রহণ না করতে স্থানীয় অধিবাসীদের নিষেধ করা হয়েছে।
হাঙ্গেরির পশ্চিমাঞ্চলের পানি ব্যবস্থাপনা কোম্পানির উপপ্রধান সান্ডের টোথ আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, চার-পাঁচ দিনের মধ্যে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে না পারলে বিষাক্ত বর্জ্য ইউরোপের দ্বিতীয় দীর্ঘতম নদী দানিউবে ঢুকে পড়তে পারে।
পরিবেশবাদী সংগঠন গ্রিন পিস ওই কারখানার ব্যবস্থাপকদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছে। গ্রিন পিস দাবি করে, স্যাটেলাইটের মাধ্যমে নেওয়া ছবিতে দেখা গেছে, সংরক্ষণাগারের বাঁধ ভেঙে যাওয়ার আগে সেখানে বড় ধরনের ফাটল ছিল। সময়মতো তা মেরামত করা হয়নি।

No comments

Powered by Blogger.