ক্রিকেট অস্কারে টেন্ডুলকারের রাত

টেস্ট-ওয়ানডের প্রায় সব রেকর্ডই লুটিয়েছে তাঁর পায়ে। হাতে উঠেছে ক্রিকেট দুনিয়ার প্রায় সব পুরস্কারই। কিন্তু ‘আসল’ পুরস্কার যে অধরা থেকে যাচ্ছিল। এত দিন পর্যন্ত আইসিসির কোনো পুরস্কার ওঠেনি তাঁর হাতে।
অবশেষে সেই রাত এল—শচীন রমেশ টেন্ডুলকারের রাত। গতকাল বেঙ্গালুরুতে আইসিসি বর্ষসেরা পুরস্কারের রাতটা আক্ষরিক অর্থেই নিজের করে নিলেন এই গ্রেট। অনেকটা অনুমেয়ভাবেই সাধারণ মানুষের ভোটে জিতে নিলেন ‘পিপলস চয়েস অ্যাওয়ার্ড’। জুরিদের ভোটে জিতেছেন বর্ষসেরা ক্রিকেটারের পুরস্কার—স্যার গারফিল্ড সোবার্স ট্রফি।
দুই হাতে দুই ট্রফি নিয়ে টেন্ডুলকারের কণ্ঠে স্বভাববিরোধী উচ্ছ্বাস, ‘আজ রাতে এই দুটি ট্রফিই জেতা বিশেষ আনন্দের ব্যাপার।’
এ বছরের পুরস্কারের জন্য আগস্ট ২০০৯ থেকে আগস্ট ২০১০ পর্যন্ত সময়ের পারফরম্যান্স বিবেচনা করা হয়েছে। হাশিম আমলা, বীরেন্দর শেবাগ ও গ্রায়েম সোয়ানকে টপকে সপ্তম গারফিল্ড সোবার্স ট্রফিজয়ী টেন্ডুলকার এই সময়ে ১০ টেস্টে ৮১.৮৪ গড়ে ১০৬৪ রান করেছেন, ১৭ ওয়ানডেতে করেছেন ৯১৪ রান। সাবেক খেলোয়াড়, সাংবাদিক, ম্যাচ রেফারি ও এলিট প্যানেলের আম্পায়ারদের নিয়ে গঠিত ২৫ সদস্যের কমিটি করেছেন এই নির্বাচনের কাজ।
নির্বাচকদের বিবেচনায় টেন্ডুলকার অবশ্য বর্ষসেরা টেস্ট বা ওয়ানডে খেলোয়াড় হননি। বিবেচ্য সময়ে ৮৫.৪৬ গড়ে ১২৮২ রান করে বর্ষসেরা টেস্ট ক্রিকেটার হয়েছেন বীরেন্দর শেবাগ। গত বছর এই পুরস্কার জিতেছিলেন তাঁর ওপেনিং সঙ্গী গৌতম গম্ভীর। পুরস্কার নিতে গিয়ে শেবাগ বললেন গম্ভীরের পুরস্কার পাওয়াটাই তাঁকে অনুপ্রাণিত করেছে, ‘আমি গম্ভীরের সঙ্গে আলোচনা করছিলাম, এবার পুরস্কারটা আমি পেতে চাই।’
ওয়ানডে বর্ষসেরা পুরস্কারটা অবশ্য ভারতে থাকেনি। বিবেচ্য সময়ে ১৬টি ওয়ানডের মধ্যে দলকে ১০টি জেতানোর পথে ৭১.২৫ গড়ে মোট ৮৫৫ রান করে এ পুরস্কারটা পেয়েছেন দক্ষিণ আফ্রিকার হাশিম আমলা। তাঁর কাছে এই পুরস্কারটি বিশ্বকাপের আগে বিশ্বকাপ জয়ের জন্য একটা অনুপ্রেরণা।
এ বছরের ‘স্পিরিট অব ক্রিকেট’ পুরস্কারটা আবারও পেয়েছে নিউজিল্যান্ড দল। নিউজিল্যান্ডের প্রাপ্তি আছে আরও একটি—অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ব্রেন্ডন ম্যাককালামের ৫৬ বলে ১১৬ রানের ইনিংসটি পেয়েছে বর্ষসেরা টি-টোয়েন্টি পারফরম্যান্সের স্বীকৃতি।
বাংলাদেশ থেকে ড্যানিয়েল ভেট্টোরি এই দুই পুরস্কারের প্রতিক্রিয়ায় বললেন, ‘আমাদের দলের ও ব্রেন্ডন ম্যাককালামের এই পুরস্কারের সঙ্গে বাংলাদেশ থেকে সিরিজটা জিতে ফিরতে পারলে এটি হবে রোমাঞ্চকর।’
ওয়ানডে ও টেস্টের দুটি বর্ষসেরা দলও বেছে নিয়েছে ক্লাইভ লয়েডের নেতৃত্বাধীন নির্বাচক কমিটি। বর্ষসেরা টেস্ট দলটির নেতৃত্ব মহেন্দ্র সিং ধোনির হাতে; ওয়ানডে দলের অধিনায়ক রিকি পন্টিং। এএফপি, ক্রিকইনফো।
আইসিসি ক্রিকেট অ্যাওয়ার্ড ২০১০
বর্ষসেরা ক্রিকেটার: শচীন টেন্ডুলকার
বর্ষসেরা টেস্ট ক্রিকেটার: বীরেন্দর শেবাগ
বর্ষসেরা ওয়ানডে ক্রিকেটার: এবি ডি ভিলিয়ার্স
বর্ষসেরা উদীয়মান: স্টিভেন ফিন
বর্ষসেরা মহিলা ক্রিকেটার: শেলি নিটচকে
সহযোগী দেশগুলোর সেরা: রায়ান টেন ডসেট
বর্ষসেরা আম্পায়ার: আলিম দার
টি-টোয়েন্টি বর্ষসেরা পারফরম্যান্স: ব্রেন্ডন ম্যাককালাম (অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৫৬ বলে ১১৬*)
স্পিরিট অব দ্য ক্রিকেট: নিউজিল্যান্ড
পিপলস চয়েস অ্যাওয়ার্ড: শচীন টেন্ডুলকার
আইসিসির বর্ষসেরা দল
টেস্ট
শেবাগ, ক্যাটিচ, টেন্ডুলকার, আমলা, সাঙ্গাকারা, ক্যালিস, ধোনি (অধিনায়ক ও উইকেটরক্ষক), সোয়ান, অ্যান্ডারসন, স্টেইন ও বলিঞ্জার।
ওয়ানডে
টেন্ডুলকার, ওয়াটসন, হাসি, ডি ভিলিয়ার্স, কলিংউড, পন্টিং (অধিনায়ক), ধোনি (উইকেটরক্ষক), ভেট্টোরি, ব্রড, বলিঞ্জার ও রায়ান হ্যারিস।

No comments

Powered by Blogger.