আহমাদিনেজাদের বক্তব্য আক্রমণাত্মক: ওবামা

জাতিসংঘে ইরানের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আহমাদিনেজাদের বক্তব্যকে আক্রমণাত্মক ও ঘৃণ্য বলে অভিহিত করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুনও আহমাদিনেজাদের বক্তব্যের নিন্দা জানিয়েছেন।
গত বৃহস্পতিবার জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ভাষণে ৯/১১ হামলার জন্য যুক্তরাষ্ট্রকেই দায়ী করেন আহমাদিনেজাদ। তাঁর এই বক্তব্যের প্রতিবাদে অধিবেশন থেকে ওয়াকআউট করেন পশ্চিমা কূটনীতিকেরা।
গত শুক্রবার বিবিসির ফারসি ভাষার একটি অনুষ্ঠানে সাক্ষাৎকারে ওবামা বলেন, ‘আহমাদিনেজাদ যেখানে দাঁড়িয়ে এ বক্তব্য দিলেন, তার চেয়ে মাত্র কিছুটা উত্তরে গ্রাউন্ড জিরো। নাইন ইলেভেনের হামলায় হতাহতের বেশির ভাগই ঘটেছিল এখানে। অনেক প্রিয়জনকে হারিয়েছিল মানুষ। ওই ঘটনাকে এই যুগের ট্র্যাজেডির শুরু হিসেবেই দেখে সব ধর্ম ও সম্প্রদায়ের মানুষ। আর সেখানেই দাঁড়িয়ে তিনি এমন মন্তব্য করলেন, এটা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।’
ওবামার পর জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুনও আহমাদিনেজাদের বক্তব্যের নিন্দা করেছেন। গত শুক্রবার তিনি বলেন, ‘গতকাল (বৃহস্পতিবার) একটি প্রতিনিধিদলের নেতা ৯/১১ হামলা নিয়ে যে মন্তব্য করেছেন, আমি তার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।’
২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে বিশ্ব বাণিজ্য কেন্দ্র (ডব্লিউটিসি) ও সামরিক সদর দপ্তর পেন্টাগনে বিমান হামলায় নিহত হয়েছিল প্রায় তিন হাজার মানুষ। এই হামলার জন্য জঙ্গি সংগঠন আল-কায়েদাকেই দায়ী করে মার্কিন সরকার।
জাতিসংঘে ভাষণে আহমাদিনেজাদ বলেন, ‘মার্কিন সরকারের একটি অংশ এই হামলার পেছনে ইন্ধন জুগিয়েছিল। নাজুক অর্থনীতিকে পুনরুদ্ধার, মধ্যপ্রাচ্যের ওপর নিজেদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা ও ইহুদি রাষ্ট্রকে রক্ষার জন্য তারা এ হামলার ষড়যন্ত্র করে।’ ইহুদি রাষ্ট্র বলতে তিনি ইসরায়েলকে বুঝিয়েছেন।
তবে নিজের বক্তব্যে অনড় আহমাদিনেজাদ। আবারও ৯/১১ হামলার ঘটনা তদন্তে কমিটি গঠনের দাবি তুলে গত শুক্রবার তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি রায় দিইনি, কিন্তু আপনাদের কি মনে হয় না, জাতিসংঘের অধীনে একটি নিরপেক্ষ কমিটি গঠনের সময় এসেছে? আল-কায়েদা কী, কোথায় তাদের অস্তিত্ব এবং ঘটনার পেছনে কারা ইন্ধন জুগিয়েছে, কারা সমর্থন দিয়েছে? এসব প্রশ্নের উত্তর দিতে পারবে সেই কমিটি। বিষয়গুলো প্রকাশ্যে আসা দরকার।’
তবে আহমাদিনেজাদের বক্তব্যের নিন্দা জানালেও ইরানি জনগণ সম্পর্কে ওবামা বলেন, ৯/১১ নিয়ে ইরানের মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি তাদের প্রেসিডেন্টের থেকে ভিন্ন। ওবামা বলেন, তারাও মোমবাতি জ্বালিয়ে রাতভর প্রার্থনা করেছিল। এ থেকে আবারও এটা প্রমাণিত হয়, ইরানের নেতাদের সঙ্গে দেশের জনগণের চিন্তাচেতনায় ফারাক কত বিস্তৃত।
কাজ শেষ করেই আফাগানিস্তান ছাড়বে যুক্তরাষ্ট্র: বিবিসিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ওবামা জানান, হুট করে আফগানিস্তান ছাড়বে না মার্কিন সেনাবাহিনী, কাজ শেষ করে তবেই তারা ফিরবে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘আফগানরা নিজেদের নিরাপত্তার দায়িত্ব যত দিন না নিতে সক্ষম হবে, তত দিন আমাদের সেনাসদস্যরা সেখানে থাকবেন। এখন আমরা দেখছি, আফগান সেনা ও পুলিশ প্রশিক্ষিত হয়ে উঠছে। অবকাঠামো এবং মানুষের জীবনযাপনে অগ্রগতির উদ্দেশ্যে আমরা কার্যকর বেসামরিক পদক্ষেপ নিচ্ছি।

No comments

Powered by Blogger.