বেলুচিস্তানের বহু এলাকা প্লাবিত

পাকিস্তানে দ্বিতীয় দফা বন্যায় বেলুচিস্তানের বহু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। স্মরণকালের ভয়াবহ এই বন্যায় সিন্ধু অঞ্চলের প্রায় ৩৬ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং ছয় লাখের বেশি মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েছে।
ত্রাণকাজে অংশ নেওয়া যেসব দাতব্য সংস্থার কর্মীর সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ও জঙ্গিদের সঙ্গে যোগাযোগ আছে, তাদের গ্রেপ্তারের হুমকি দিয়েছে পাকিস্তান। জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুন পাকিস্তানের জন্য এ পর্যন্ত প্রায় ৫০ কোটি ডলার জরুরি ত্রাণসহায়তা সংগ্রহ হওয়ায় বিশ্ববাসীকে সতর্ক অভিনন্দন জানিয়ে বলেছেন, দেশটি দীর্ঘমেয়াদি সংকটে পড়তে পারে। এদিকে, পাকিস্তানি আমেরিকানরা ত্রাণসহায়তা কার্যক্রম বাড়াতে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সিন্ধু এলাকার অনেক নতুন এলাকা গত শুক্রবার বন্যায় প্লাবিত হয়েছে। সেখানে এক হাজার ৪৪৭টি ত্রাণশিবিরে ছয় লাখেরও বেশি মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। জাতিসংঘ বলেছে, লাখ লাখ মানুষকে ত্রাণ দিতে আরও সহযোগিতা দরকার। গারি খেরু থেকে নেমে আসা পানির প্রবাহের কারণে সিন্ধু প্রদেশের শাদাতকোট, কাবু সাইদ খান, মেরো খান ও সাজোয়াল শহর বন্যার হুমকিতে রয়েছে। বন্যা পূর্বাভাস বিভাগ সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, সিন্ধু নদের পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে এবং দু-এক দিনের মধ্যে ওই নদীর কোত্রি ব্যারেজ হুমকিগ্রস্ত হতে পারে।
সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ও জঙ্গিদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষাকারী দাতব্য সংস্থাগুলোর বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছে পাকিস্তান। এসব সংস্থা ত্রাণ কাজে অংশ নেওয়ার কারণে উগ্রপন্থীদের বিরুদ্ধে লড়াই বাধাগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কায় তাদের গ্রেপ্তারের হুমকি দিয়েছে দেশটি। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রেহমান মালিক বলেছেন, বন্যাকবলিত এলাকায় নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠনগুলোর যাওয়ার অনুমতি নেই। তাদের কেউ সেখানে গেলে গ্রেপ্তার করা হবে।
জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুন প্রায় ৫০ কোটি ডলার জরুরি ত্রাণসহায়তা সংগ্রহ হওয়ায় বিশ্ববাসীকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। তবে তিনি সতর্ক করে দিয়ে বলেন, দেশটি দীর্ঘমেয়াদি সংকটে পড়তে পারে। জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে গত শুক্রবার প্রকাশিত দাতাদের তথ্য সংগ্রহকারী ডাটাবেজ দ্য ফাইন্যানশিয়াল ট্র্যাকিং সার্ভিস (এফটিএস) জানায়, যুক্তরাষ্ট্র, সৌদি আরব ও ব্রিটেনের নেতৃত্বে এ পর্যন্ত প্রায় ৫০ কোটি ডলার ত্রাণসহায়তা পাওয়া গেছে। এ ছাড়া আরও সাড়ে ৩২ কোটি ডলার সহায়তার অঙ্গীকার পাওয়া গেছে।
এদিকে, পাকিস্তানি আমেরিকানরা ত্রাণসহায়তা কার্যক্রম বাড়াতে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। দ্য কাউন্সিল অন পাকিস্তান রিলেশন্সের নির্বাহী পরিচালক মাহেরা রহমান বলেন, পর্যাপ্ত ত্রাণসহায়তা দিয়ে পাকিস্তানিদের আমেরিকাবিরোধী মনোভাব দূর করার এটাই উপযুক্ত সময়।

No comments

Powered by Blogger.