পুলিশের সহায়তায় মাদক পাচার -জড়িত ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রাপ্য

পুলিশই যদি মাদক পাচারকারীর নিরাপত্তা দেয়, তাহলে মানুষ ভরসা রাখবে কার ওপর? অথচ তেমনটাই ঘটে চলেছে। গত বৃহস্পতিবারের প্রথম আলোর প্রতিবেদন জানাচ্ছে, মাদক পাচারকারীদের রক্ষাকবচ টোকেন প্রদান করে তাদের মাদকের নিরাপত্তা দিচ্ছে স্বয়ং পুলিশ। সাংকেতিক চিহ্নসংবলিত কাগজের টুকরার টোকেন সঙ্গে থাকলে মাদক পাচারকারীকে আর পুলিশের হয়রানির মুখে পড়তে হয় না। নিরাপদে তারা মাদকের চালান গন্তব্যে পৌঁছে দিতে পারে। যেখানে পুলিশ জনগণের জানমালের নিরাপত্তা বিধানের জন্য কাজ করার কথা, সেখানে তারা জীবন ধ্বংসকারী মাদকের চালান নিরাপদ করার কাজে সহায়তা করে চলেছে। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক। মাদক পাচারকারী চক্রের সঙ্গে একটি সুশৃঙ্খল সরকারি বাহিনীর এরূপ সখ্য দেশের ভবিষ্যতের জন্য একটি অশনিসংকেত।
আমরা দীর্ঘদিন ধরে মাদকের ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে সচেতনতার কাজ চালিয়ে আসছি এবং মাদকের বিস্তার রোধে সরকারি বিভিন্ন সংস্থার সমন্বিত তৎপরতার ওপর জোর দিয়ে যাচ্ছি। মাদকের বিরুদ্ধে সামাজিক উদ্বুদ্ধকরণের পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকার ওপর আমরা গুরুত্বারোপ করেছি। আমরা জানি, পুলিশ আন্তরিক হলে মাদকের পাচার ও ব্যবসা প্রায় পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া সম্ভব। পক্ষান্তরে, পুলিশ-সদস্যরা যদি মাদক পাচারকারীদের কাছ থেকে সুবিধা নিয়ে অবাধে মাদক পাচারের নিশ্চয়তা দেন, তবে সমাজের জন্য এর চেয়ে গুরুতর অনিষ্টের আর কী হতে পারে?
টোকেনের মাধ্যমে মাদকের নিরাপত্তা দেওয়ার প্রক্রিয়াটি বেশ জটিল এবং এটি ঠিকমতো কাজ করার জন্য এর সঙ্গে বহু পুলিশ জড়িত থাকা প্রয়োজন। নিচ থেকে উচ্চপর্যায়ের পুলিশের সহায়তা ছাড়া এটি ঠিকমতো চলার কথা নয়। যাঁরা এ ধরনের অপকীর্তির সঙ্গে যুক্ত আছেন, তাঁদের খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। যে পুলিশ-সদস্যরা এ কাজের সঙ্গে যুক্ত, তাঁরা তাঁদের অঙ্গীকার ভঙ্গ করেছেন এবং তাঁরা আর পুলিশ হিসেবে দায়িত্ব পালনের অধিকার রাখেন না।

No comments

Powered by Blogger.