সন্ত্রাসী হামলা রোধে ব্রিটেনের নতুন নিরাপত্তাব্যবস্থা গ্রহণ

সন্ত্রাসী হামলা রোধে ব্রিটিশ সরকার নতুন করে নিরাপত্তাব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। ব্রিটেনে প্রবেশকারী যাত্রীদের বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ভাগ করে বাড়তি তল্লাশির ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে সে দেশের বিমানবন্দরগুলোতে নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদারের সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ ছাড়া ইয়েমেন ও ব্রিটেনের মধ্যে সরাসরি বিমান যোগাযোগ স্থগিত করা হয়েছে।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী গর্ডন ব্রাউন গত বুধবার হাউস অব কমন্সে এসব নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, ব্রিটেন সন্ত্রাসী হামলার ঝুঁকিতে রয়েছে। সন্ত্রাসীদের হাত থেকে ব্রিটেনের নাগরিকদের রক্ষায় এসব পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। খবর বিবিসি ও এএফপির।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বলেন, সন্দেহভাজন সন্ত্রাসীদের তালিকা করা হবে। ওই তালিকার কাউকে ব্রিটেনে ঢুকতে দেওয়া হবে না। এ ছাড়া তুলনামূলক কম সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের আরেকটি তালিকা করা হবে। এ তালিকার ব্যক্তিদের বাড়তি তল্লাশির মাধ্যমে ব্রিটেনে ঢুকতে দেওয়া হবে।
বড়দিনে যুক্তরাষ্ট্রগামী বিমানে সন্ত্রাসী হামলার ব্যর্থ চেষ্টার পর বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বিমানবন্দরে নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেন ইতিমধ্যে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে।
বড়দিনে সন্ত্রাসী হামলার ব্যর্থ চেষ্টার পর ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী সে দেশের বিমানবন্দরের নিরাপত্তাব্যবস্থা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখার নির্দেশ দিয়েছিলেন। সেসব পরীক্ষা-নিরীক্ষার ফলাফল এবং গোয়েন্দাদের তথ্যের ভিত্তিতে গর্ডন ব্রাউন বলেছেন, সে দেশের সীমান্ত নিরাপত্তার স্বার্থে আরও কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হবে। সেই সঙ্গে বিমানবন্দরের নিরাপত্তাব্যবস্থাও জোরদার করা হবে।
ব্রাউন বলেন, সন্দেহভাজন সন্ত্রাসীদের বর্তমানে যে তালিকা রয়েছে, সেটি আরও বাড়ানো হবে। ব্রিটেনের জন্য হুমকি, এমন সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের এ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে। তিনি বলেন, ‘ব্রিটেনে নিষিদ্ধ’ এমন ব্যক্তিদের শনাক্ত করা হবে এবং সন্দেহভাজন সন্ত্রাসী হিসেবে তাদের ব্রিটেনে ঢুকতে দেওয়া হবে না। আর যেসব ব্যক্তি গোয়েন্দাদের নজরে রয়েছে, কিন্তু ব্রিটেনের জন্য তেমন হুমকি নয়, তাদের দ্বিতীয় ক্যাটাগরিতে অন্তর্ভুক্ত করা হবে; তাদের ক্ষেত্রে ‘বিশেষ নিরাপত্তাব্যবস্থা’ নেওয়া হবে। এসব ব্যক্তির ব্রিটেনের উদ্দেশে যাত্রা শুরুর আগে অতিরিক্ত নিরাপত্তা তল্লাশি করা হবে।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইয়েমেনের বিমান কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। তারা ব্রিটেনে সরাসরি বিমান যোগাযোগ স্থগিত করতে রাজি হয়েছে। নিরাপত্তাব্যবস্থার উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত দুই দেশের মধ্যে সরাসরি বিমান যোগাযোগ বন্ধ থাকবে। তিনি বলেন, ‘আমি আশা করি, শিগগিরই আবার দুই দেশের মধ্যে বিমান যোগাযোগ চালু হবে। তবে আমাকে সবার আগে ব্রিটেনের নাগরিকদের নিরাপত্তার বিষয়টি দেখতে হবে।’
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ বছরের শেষ নাগাদ ব্রিটেনের সব বিমানবন্দর ও নৌবন্দরে ইলেকট্রনিক পদ্ধতির নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ পদ্ধতির মাধ্যমে বিদেশি যাত্রীদের টিকিট কেনার সময় তাদের দেওয়া সব তথ্য যাচাই-বাছাই করা হবে।
সন্ত্রাসী হামলার হুমকি মোকাবিলায় বিশ্বের সব দেশের সহযোগিতা চেয়েছেন গর্ডন ব্রাউন। সন্দেহভাজন ব্যক্তিরা সরাসরি অথবা ভায়া হয়ে ব্রিটেনের উদ্দেশে যাত্রাকালে সংশ্লিষ্ট দেশের বিমানবন্দরে তাদের তল্লাশির আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী নতুন একটি গোয়েন্দা দল গঠনের ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি বলেন, এ গোয়েন্দা দলের সদস্যদের কাজ হবে নিরাপত্তার জন্য হুমকি এমন ব্যক্তিদের আগেভাগে চিহ্নিত করা এবং ব্রিটেনে আসার আগেই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া।

No comments

Powered by Blogger.