রাজীব গান্ধীর হত্যাকারী নলিনী মুক্তি পেতে পারেন

ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধী হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত নলিনী শ্রীহরণ সম্ভবত মুক্তি পেতে যাচ্ছেন। তাঁকে মুক্তি দেওয়ার জন্যএকটি আবেদন করা হয়েছিল।সে আবেদনে সাড়া দিতে পারে তামিলনাড়ু রাজ্য সরকার। ১৯ বছর ধরে নলিনী কারাভোগ করছেন।
মুক্তি চেয়ে নলিনীর আবেদন নিয়ে চলতি সপ্তাহের শুরুর দিকে বৈঠকে বসেছিল রাজ্য সরকারের গঠন করা একটি বোর্ড। নলিনীর আবেদন বিবেচনা করার জন্য ২০০৮ সালে মাদ্রাজ হাইকোর্টের দেওয়া একটি নির্দেশের ভিত্তিতে ওই বোর্ড গঠন করা হয়েছিল। ভেলোর জেলার কালেক্টর সি রাজেন্দ্রের নেতৃত্বে বোর্ডে আছেন জেলা বিচারক কালাইয়ারাজন, আঞ্চলিক কারা কর্মকর্তা কৃষ্ণমা নামাগিরি এবং একাডেমি অব প্রিজনস অ্যান্ড কারেকশনাল অ্যাকটিভিটিজের প্রভাষক জুলি।
বোর্ডের সদস্যদের সঙ্গে তিন ঘণ্টা স্থায়ী ওই বৈঠকে নলিনী প্রায় ১০ মিনিট ধরে তাঁর বিষয়টি তুলে ধরেন। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে কালেক্টর সি রাজেন্দ্র সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, বোর্ডের সদস্যরা আবার বৈঠকে বসে প্রতিবেদন তৈরি করবেন। যদিও এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে রাজ্য সরকার। তিনি বলেন, কয়েক দিনের মধ্যেই রাজ্যসরকারের কাছে প্রতিবেদন পেশ করা হবে।
রাজেন্দ্র বলেন, ‘কারা নীতিমালা অনুযায়ী সাজার মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই কোনো বন্দীকে মুক্তি দেওয়ার জন্য কিছু শর্ত আছে। সেসব বিষয় নিয়েও আমরা আলোচনা করেছি।’
নলিনীর মুক্তি পাওয়ার সম্ভাবনার বিষয়ে জানতে চাইলে তাঁর আইনজীবী এস দোরাইস্বামী বলেন, ‘প্রতিবেদন তৈরি এবং তা সরকারের কাছে পাঠাতে কয়েক দিন সময় লেগে যাবে। এর পর সরকারই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে। বিষয়টি খুব সহজ নয়, অনেক সময় লেগে যাবে।’
তবে নলিনীর মুক্তির বিরোধিতা করে জনতা পার্টির প্রেসিডেন্ট সুব্রামনিয়াম স্বামী জানিয়েছেন, শুধু একটি উপদেষ্টা বোর্ডই এ বিষয়টি ফয়সালা করতে পারে না। তিনি বলেন, ‘অনেক ধাপ পেরিয়ে তাঁকে মুক্তি পেতে হবে। আর রাজীব গান্ধীর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে প্রতি ধাপেই আমি বিরোধিতা করব।’
১৯৯১ সালের ২১ মে চেন্নাইয়ের কাছে শ্রীপেরুমবুদুর শহরে এক জনসভায় বোমা বিস্ফোরণে নিহত হন রাজীব গান্ধী। ওই বছরের ১৪ জুন নলিনীকে গ্রেপ্তার করা হয়। ১৯৯৮ সালে একটি বিশেষ আদালত নলিনীসহ ২৫ জনকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেয়। পরে নলিনী ক্ষমা প্রার্থনা করলে ২০০০ সালের এপ্রিলে তাঁকে মৃত্যুদণ্ডের পরিবর্তে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

No comments

Powered by Blogger.