ক্ষমতায় টিকে থাকতে তত্পর হয়েছেন জারদারি

প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিজের অবস্থান টিকিয়ে রাখতে নতুন করে উদ্যোগী হয়েছেন আসিফ আলী জারদারি। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল চষে বেড়াচ্ছেন, জ্বালাময়ী বক্তব্য দিচ্ছেন এবং দেশের প্রধান কর্মকর্তা হিসেবে নিজের কর্তৃত্ব প্রদর্শন করছেন।
প্রেসিডেন্ট জারদারির ক্ষেত্রে বিষয়টা ঠিক মানানসই হচ্ছে না। কেন না মাঝে মধ্যে বিদেশ সফরে যাওয়া ছাড়া তিনি সচরাচর প্রেসিডেন্ট প্রাসাদ ছেড়ে বের হন না। আর গণমাধ্যমে তাঁকে নিয়ে ঝড় বয়ে গেলেও তিনি চুপচাপ থাকেন। এ জন্যই গত বছরের শেষ দিক থেকে অনেকেই ভাবতে শুরু করেছিলেন যে ক্ষমতার ওপর নিয়ন্ত্রণ হারাচ্ছেন জারদারি। তবে এখন মনে হচ্ছে, জারদারি সম্ভত ক্ষমতায় টিকে যাচ্ছেন।
আফগানিস্তানে নতুন যুদ্ধ-কৌশলকে সফল করতে পাকিস্তানের ওপর অনেকটা নির্ভর করছে মার্কিন প্রশাসন। পাকিস্তানের পশ্চিমাঞ্চলীয় পাহাড়ি অঞ্চল জঙ্গিদের নিরাপদ আস্তানা। জঙ্গিদের ওই এলাকা থেকে নির্মূল করতে পাকিস্তানকে চাপ দিয়ে আসছে ওবামা প্রশাসন।
যুক্তরাষ্ট্রের অনেক নীতিকেই হয়তো সমর্থন করেন জারদারি। কিন্তু রাজনৈতিক বিরোধী পক্ষের কারণে সেগুলোর পক্ষেও অবস্থান নেওয়ার ক্ষমতা তাঁর খুবই সীমিত। এ জন্য তাঁর কাছ থেকে বেশি কিছু আশা করে না মার্কিন প্রশাসন। আর তাই পাকিস্তানের ক্ষমতাধর সেনাবাহিনীর সঙ্গে সম্পর্কের ওপর অনেকটা নির্ভর করছে ওয়াশিংটন, যা তারা কয়েক দশক ধরেই করছে।
গত ২৭ ডিসেম্বর সিন্ধু প্রদেশ দিয়ে দেশজুড়ে সফর শুরু করেন জারদারি। এরপর তিনি যান পশ্চিমাঞ্চলীয় বেলুচিস্তান প্রদেশে। আর এ সপ্তাহে যাবেন পাঞ্জাবে। সেখানে থেকে উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশের রাজধানী পেশোওয়ার যাবেন বলে জানিয়েছেন জারদারির মুখপাত্র।
তৃণমূল পর্যায়ে দলকে সংগঠিত করে এবং বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে গণমাধ্যমে সরব উপস্থিতি দিয়ে জারদারি হয়তো রাজনৈতিকভাবে কিছুটা লাভবান হতে পারেন। বিশ্লেষকদের অনেকে বলছেন, বিরোধীদের দমাতে এবং ক্ষমতা বাঁচিয়ে রাখতে তিনি শেষ চেষ্টা হিসেবেই এ কাজ শুরু করেছেন।
বিশ্লেষক হাসান আসকারি বলেন, জারদারি বুঝতে পেরেছেন, বিচার বিভাগ বা সেনাবাহিনী যদি তাঁকে ক্ষমতা থেকে সরাতে চায় তাহলে তারা সেটা পারে। কাজেই টিকে থাকতে হলে লড়াই করতে হবে। তিনি সেটাই করতে চাইছেন।

No comments

Powered by Blogger.