‘এল গ্রুপো ডি লা মুয়েত্রে’!

‘গ্রুপ অব ডেথ’—বিশ্বকাপ ফুটবলের প্রতিটি ড্রয়ের পরই এই কথাটা আপনি শুনবেনই শুনবেন। মানেটাও সবার জানা। এমন একটা গ্রুপ, যাতে সহজ বলে কোনো ম্যাচ নেই। চারটি দলই খুব শক্তিশালী। কাগজে-কলমে অবশ্য এটি হওয়ার উপায় নেই। বিশ্বকাপের ড্রয়ের আগে র্যাঙ্কিং ও অতীত রেকর্ড বিবেচনায় নিয়ে দলগুলোকে চারটি আলাদা ভাগে ভাগ করে ফেলা হয় তো এটি এড়াতেই। তারপরও কোনো না-কোনো গ্রুপকে তো একটু কঠিনতর মনে হয়ই। কোনো একটা গ্রুপকে ‘গ্রুপ অব ডেথ’ তকমা না দিয়ে ফুটবলামোদীরাও বোধহয় শান্তি পান না।
এবারই যেমন ‘জি’ গ্রুপকে ডাকা হচ্ছে এই নামে। পাঁচবারের চ্যাম্পিয়ন ব্রাজিলের (র্যাঙ্কিং ২) সঙ্গে যেটিতে আছে পর্তুগাল (৫), আইভরিকোস্ট (১৬) ও উত্তর কোরিয়া (৮৬)। মনে করে দেখুন তো, গত বিশ্বকাপে কোনটিকে বলা হয়েছিল ‘গ্রুপ অব ডেথ’, এর আগের বিশ্বকাপে? শুরুটা না হয় ১৯৯৮ থেকেই করা যাক। সেবারই প্রথম বিশ্বকাপে ৩২ দল এবং গ্রুপ অব ডেথ বলা হয়েছিল ‘ডি’ গ্রুপটিকে, যেটিতে ছিল স্পেন, নাইজেরিয়া, প্যারাগুয়ে ও বুলগেরিয়া। ২০০২ বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনা, ইংল্যান্ড, সুইডেন ও নাইজেরিয়ার ‘এফ’ গ্রুপ পেয়েছিল এই ‘মর্যাদা’। ২০০৬ বিশ্বকাপের ড্রয়ের পর ফুটবলবোদ্ধারা মনস্থির করতে না পারায় একটির বদলে ‘গ্রুপ অব ডেথ’ হয়ে গিয়েছিল দুটি। আর্জেন্টিনা, নেদারল্যান্ড, আইভরিকোস্ট এবং সার্বিয়া ও মন্টেনেগ্রোর ‘সি’ গ্রুপ এবং ইতালি, চেক প্রজাতন্ত্র, ঘানা ও যুক্তরাষ্ট্রের ‘ই’ গ্রুপ।
এই তিনটি বিশ্বকাপে গ্রুপ অব ডেথের বলি বললে ১৯৯৮ বিশ্বকাপে স্পেন ও ২০০২ বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনা। দুদলই শিরোপার অন্যতম দাবিদার হয়েও বিদায় নিয়েছিল প্রথম রাউন্ডেই। বাকি সব ক্ষেত্রে র্যাঙ্কিং অনুযায়ী যাদের পরের রাউন্ডে যাওয়ার কথা, গিয়েছিল তারাই।
বিশ্বকাপে ‘গ্রুপ অব ডেথ’ প্রবচনের প্রথম ব্যবহার হয় ১৯৭০ বিশ্বকাপে। ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড, এর আগের দুবারের (১৯৬২ ও ১৯৫৮) চ্যাম্পিয়ন ব্রাজিল, ’৬২ বিশ্বকাপের রানার্সআপ চেকোস্লোভাকিয়া ও রুমানিয়া এক গ্রুপে পড়ার পর মেক্সিকান সংবাদমাধ্যম এটির নাম দিয়েছিল ‘el grupo de la muetre.’
দুর্বোধ্য লাগছে? এটি ‘গ্রুপ অব ডেথ’-এর মেক্সিকান সংস্করণ।

No comments

Powered by Blogger.