শেষ পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়ার হাসি

অস্ট্রেলিয়াকেও হারানো হয়নি ভারতের
মহেন্দ্র সিং ধোনি যখন ব্যাটিং পাওয়ার প্লে নিলেন, তখনো ম্যাচে ভালোভাবেই আছে ভারত। ৯৬ বলে প্রয়োজন ১২৬, হাতে ৭ উইকেট। উইকেটে অধিনায়কের সঙ্গে গৌতম গম্ভীর, দুজনেই সেট। পাওয়ার প্লের ৫ ওভারে ভারত তুলতে পারল মাত্র ৩২, উইকেট হারাল ৩টি। দুই সেট ব্যাটসম্যানই আউট, সঙ্গে সুরেশ রায়নাও। খেলা তো ওখানেই শেষ!
তবে এটা ধরে নিয়ে যাঁরা এই ম্যাচ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিলেন, তাঁরা ম্যাচের আসল অংশটুকুই পাননি। শেষ ১০ ওভারে ৯২ রান প্রয়োজন, উইকেট মাত্র ৩টি। অষ্টম উইকেটে হরভজন সিং ও প্রাভিন কুমারের ৮৪ রানের এক জুটি মরা ম্যাচে এনে দিল প্রাণের ছোঁয়া। শেষ ওভারে প্রয়োজন ছিল ৯ রানের, রুদ্ররুপে দুই ব্যাটসম্যান—ম্যাচ তখন ভারতেরই হাতে। কিন্তু এর আগে ম্যাচে একদমই নিষ্প্রভ পিটার সিডল নিজেকে ফিরে পেলেন আসল সময়েই। প্রথম বলেই বোল্ড হরভজন। আগের ওভারেই দিয়েছিলেন ১৩ রান, শেষ ওভারে দিলেন মাত্র ৩ (আর লেগ বাই ১)। ৪ রানে ম্যাচ জিতে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললেন রিকি পন্টিং।
এর আগে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ২৭২ রানের বেশি তাড়া করে জেতেনি ভারত। কাল করতে হতো ২৯৩। ভারত তাকিয়ে ছিল শেবাগ-টেন্ডুলকারের ওপেনিং জুটির দিকে। শুরুটা তাঁর মতোই করেছিলেন শেবাগ, ব্রেট লির করা ইনিংসের প্রথম দুই বলেই চার। প্রথম ২ ওভারে ২০। তবে বেশিদূর যেতে পারেননি দুজনের কেউই। লির অফ স্টাম্প-ঘেঁষা একটি বল মিড উইকেটে খেলতে গিয়ে আউট শেবাগ। টেন্ডুলকারের আউটটি পুরো পরিকল্পিত, ক্রমাগত অফ স্টাম্পের বাইরে বল করে যাচ্ছিলেন ওয়াটসন। ধৈর্য হারিয়ে একটিতে ড্রাইভ করলেন টেন্ডুলকার, শর্ট কভারে দুর্দান্ত ক্যাচ নিলেন পন্টিং।
কোহলির সঙ্গে গম্ভীরের ৫৮ ও ধোনির সঙ্গে ৬৪ রানের দুটি জুটিতে অবশ্য ম্যাচে ছিল ভারত, কিন্তু ৪ ওভারের মধ্যে ৩ উইকেট হারিয়ে পথ হারিয়ে ফেলে ভারত। এর পরই হরভজন-প্রাভিনের সেই জুটি, অষ্টম উইকেটে ভারত-অস্ট্রেলিয়া সিরিজেরই রেকর্ড। ৪৯ রানে আউট হয়ে ম্যাচের মতো ওয়ানডেতে প্রথম ফিফটিও হারিয়েছেন হরভজন, আগের সর্বোচ্চ ৪৬-ও ছিল অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে।
টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামা অস্ট্রেলিয়া বড় সংগ্রহ গড়ে পন্টিং, মাইক হাসি, টিম পেইন ও ক্যামেরন হোয়াইটের হাফ সেঞ্চুরিতে। ভারতের বিপক্ষে এই প্রথম চারটি ফিফটি করল কোনো দল। দ্বিতীয় ওভারে ওয়াটসন আউট হওয়ার পর পেইন-পন্টিং গড়েন ৯৭ রানের জুটি। ব্রাড হাডিনের ইনজুরিতে দলে এসেছেন। পেইন নিজেই বলছেন, হাডিন ফিরলে জায়গা ছেড়ে দিতে হবে। তবে যেভাবে খেলছেন (১৪ ম্যাচে ১ সেঞ্চুরি, ৩ হাফ সেঞ্চুরি), তাতে হাডিন ফিরলেও নির্বাচকেরা নিশ্চিতভাবেই দ্বিতীয়বার ভাববে তাঁকে নিয়ে। পন্টিং শুরু থেকেই ছিলেন সপ্রভিত, যে বলে আউট হলেন, তার আগে একবারও মনে হয়নি আউট হতে পারেন। ধীর সূচনার পর হাত খুলে খেলেছেন হোয়াইট। আর ৫৪ বলে ৭৩ রান করে শেষটা করেছেন ম্যাচ-সেরা মাইক হাসি।

No comments

Powered by Blogger.