যুক্তরাষ্ট্রে সোয়াইন ফ্লুকে জাতীয় দুর্যোগ ঘোষণা

মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা সোয়াইন ফ্লুকে জাতীয় দুর্যোগ হিসেবে ঘোষণা করেছেন। গত শুক্রবার সন্ধ্যায় এ সম্পর্কিত ঘোষণাপত্রে সই করেন তিনি। এই ঘোষণার জন্য সে দেশে এখন চিকিত্সক ও হাসপাতালগুলো আমলাতান্ত্রিক জটিলতা কমিয়ে আরও দ্রুততার সঙ্গে সোয়াইন ফ্লুতে আক্রান্ত রোগীদের চিকিত্সাসেবা দিতে পারবে।
গত সপ্তাহে মার্কিন কর্মকর্তারা জানান, যুক্তরাষ্ট্রে এ পর্যন্ত কয়েক লাখ নাগরিক সোয়াইন ফ্লুতে আক্রান্ত হয়েছে। দেশের ৪৬টি অঙ্গরাজ্যে এইচ১এন১ ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে। এই রোগে এ পর্যন্ত এক হাজারের বেশি লোক মারা গেছে। তাঁরা আরও জানান, এই ফ্লুতে সংক্রমণের হার এখন ফ্লুর মৌসুমের সর্বোচ্চ সংক্রমণের হারের কাছাকাছি পর্যায়ে রয়েছে। সাধারণত সেখানে নভেম্বরের শেষ ভাগ থেকে মার্চের শুরু পর্যন্ত ফ্লুর সংক্রমণের ‘পিক’ সময় ধরা হয়। অর্থাত্ ওই সময় ফ্লুর সর্বোচ্চ সংক্রমণ হয়।
এই ঘোষণার আগের দিন মার্কিন স্বাস্থ্যমন্ত্রী ক্যাথলিন সেবলিয়াস সতর্ক করে জানিয়েছিলেন, সোয়াইন ফ্লুর প্রতিষেধকের চাহিদা সরবরাহের তুলনায় বেড়ে যাচ্ছে। ঘোষণাপত্রে ওবামা বলেন, ২০০৯ সালে এইচ১এন১ ভাইরাসের সংক্রমণ অব্যাহত রয়েছে। ওবামা বলেন, জনগণের স্বাস্থ্য রক্ষায় সরকার বিভিন্ন প্রতিরক্ষামূলক পদক্ষেপ নিয়েছে। এই রোগের একটি কার্যকর প্রতিষেধক আবিষ্কার করা হয়েছে।
তবে মার্কিন সরকার স্বীকার করেছে, প্রতিষেধক সরবরাহে দেরি হচ্ছে। মধ্য অক্টোবরের মধ্যে তারা ১২ কোটি ডোজ প্রতিষেধক সরবরাহ করার আশা করেছিল। কিন্তু এখন মধ্য নভেম্বর পর্যন্ত পাঁচ কোটি ডোজ প্রতিষেধক সরবরাহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্রের (সিডিসি) প্রধান টমাস ফ্রিডেন বলেন, ‘আমরা সেখানে পৌঁছেছি, যেখানে আরও আগে পৌঁছাব বলে আশা করেছিলাম।’ সিডিসি জানিয়েছে, শুক্রবার পর্যন্ত তাদের কাছে এক কোটি ৬১ লাখ ডোজ প্রতিষেধক তৈরি রয়েছে। আরও এক কোটি ১০ লাখ ডোজ এরই মধ্যে সরবরাহ করা হয়েছে।
গত এপ্রিল মাসে মেক্সিকোতে প্রথম সোয়াইন ফ্লু ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। এরপর তা শতাধিক দেশে ছড়িয়ে পড়ে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসাবে বিশ্বে এ পর্যন্ত প্রায় পাঁচ হাজার মানুষ সোয়াইন ফ্লুতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে।

No comments

Powered by Blogger.