ঝাড়খন্ডে ‘ডাইনি’ অভিযোগে পাঁচ নারীর ওপর নির্যাতন

ভারতের ঝাড়খন্ডে ‘ডাইনি’ সন্দেহে পাঁচজন নারীর ওপর ন্যক্কারজনক নির্যাতন চালিয়েছে গ্রামবাসী। উগ্র গ্রামবাসী তাঁদের বিবস্ত্র করে শত শত লোকের সামনে হাঁটতে বাধ্য করেছে। এ সময় বেদম পেটানো হয়েছে তাঁদের। শুধু তাই নয়, ওই পাঁচজন নারীকে মানুষের মল খেতে বাধ্য করেছে গ্রামবাসী। স্থানীয় পুলিশ বলেছে, নির্যাতিত ওই নারীরা মুসলিম বিধবা। স্থানীয় পুরোহিতেরা এসব নারীকে ‘ডাইনি’ বলে ঘোষণা দেওয়ার পরপরই তাঁদের ওপর এই অমানুষিক নির্যাতন চালানো হয়।
ঝাড়খন্ডের দেওঘর জেলার প্রত্যন্ত গ্রাম পাথরঘাটিয়ায় গত রোববার এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ ওই গ্রামে গিয়ে ঘটনার সঙ্গে জড়িত চারজনকে প্রেপ্তার করেছে। এ ঘটনায় ১১ জন গ্রামবাসীর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। ওই গ্রামে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
পুলিশের কর্মকর্তা মুরারি লাল মিনা জানান, রোববার সকালে ওই পাঁচজন নারীকে একটি খেলার মাঠে নেওয়া হয়। সেখানে এই ন্যক্কারজনক ঘটনা দেখতে শত শত লোক ভিড় করে। তিনি বলেন, যখন নারীদের বিবস্ত্র করে পেটানো হচ্ছিল, তখন কেউ তাঁদের উদ্ধারে এগিয়ে আসেনি। নির্যাতিত নারীরা এখন পুলিশের হেফাজতে রয়েছেন।
পুলিশ জানিয়েছে, পাথরঘাটিয়া গ্রামের লোকজন বিশ্বাস করে যে ওই গ্রামের কিছু নারীর মধ্যে ‘পবিত্র আত্মা’ রয়েছে। তাঁরা ‘ডাইনি’ শনাক্ত করতে পারেন। এসব নারীই সম্প্রতি ওই পাঁচজন বিধবাকে ‘ডাইনি’ বলে চিহ্নিত করেন। তাঁদের এই ঘোষণার পর গ্রামবাসী ওই পাঁচজন নারীর বাড়িতে ছুটে যায়। গ্রামবাসী তাঁদের টেনেহিঁচড়ে পিটিয়ে পাশের একটি খেলার মাঠে নিয়ে যায়।
ভারতে ‘ডাইনি’ সন্দেহে এর আগে শত শত নারীকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, কুসংস্কারই হচ্ছে এসব নির্যাতনের পেছনের মূল কারণ। কিন্তু এই নির্যাতনের জন্য সাধারণত বিধবা নারীদের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করা হয়। কারণ, বিধবাদের মেরে ফেললে তাঁদের জমি ও সম্পদ সহজেই স্বার্থান্বেষী মহল দখল করে নিতে পারে।

No comments

Powered by Blogger.