আত্মহত্যার ঝুঁকিতে সেমেনিয়া

কাস্টার সেমেনিয়ার ভেতর দিয়ে কী ঝড় যাচ্ছে, সেটি শুধু তিনিই অনুভব করছেন। এ তো তাঁর অস্তিত্বের শেকড় ধরে টান মারা। পরিচয়ের সংকটে ফেলে দেওয়া। এত দিন ধরে লালন করে আসা ‘নারী’ পরিচয়টা নিয়ে তৈরি করা সংশয়ের ধূম্রজাল। অসহ্য মানসিক চাপ সহ্য করতে না পেরে সেমেনিয়া না শেষ পর্যন্ত আত্মহত্যাই করে বসেন! এখন এমনই আশঙ্কা করছেন দক্ষিণ আফ্রিকার নীতিনির্ধারকেরা। তাই মনোবিশেষজ্ঞরা বিশেষ যত্ন নিচ্ছেন গত বার্লিন বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে মেয়েদের ৮০০ মিটার দৌড়ে সোনা জেতা এই ১৮ বছর বয়সীর।
এদিকে আন্তর্জাতিক অ্যাথলেটিক সংস্থার (আইএএএফ) বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ তুলেছেন সেমেনিয়ার মা ডরকাস সেমেনিয়া। তাঁর দাবি, সেমেনিয়ার অজান্তেই করা হয়েছে তাঁর লিঙ্গ পরীক্ষা, ‘ওকে নিয়ে কে কী বলল তাতে আমার কিছুই আসে যায় না। কারণ আমি তো ওর মা। কিন্তু একটা বিষয় আমাকে খুবই ক্ষুব্ধ করেছে যে, ওকে যে পরীক্ষা করা হবে সেটা অভিভাবক হিসেবে আমাদের জানানোর প্রয়োজন বোধ করেনি কেউ। ওরা চোরের মতো আচরণ করছে, যেন এই মাত্র ঘরে ঢুকে যা খুশি নিয়ে গেল। সবচেয়ে কষ্টদায়ক ব্যাপার হলো, আমার মেয়েকে এই পরীক্ষার ব্যাপারে কিছু বলাই হয়নি।’
এদিকে দক্ষিণ আফ্রিকার সানডে টাইমস জানিয়েছে, আগস্টের শুরুতে নিজস্ব উদ্যোগে লিঙ্গ পরীক্ষার পর সেমেনিয়াকে বার্লিন বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপের দলে না রাখার পরামর্শ দিয়েছিল দলের চিকিত্সকেরা। কিন্তু এই পরামর্শ অ্যাথলেটিকস সাউথ আফ্রিকা (এএসএ) শোনেনি। কারণ সেমেনিয়া ছিল তাদের কাছে একটি সোনার নিশ্চয়তা।
তবে দক্ষিণ আফ্রিকানদের ক্ষোভের কারণ, গত কয়েক বছরে চার-পাঁচজনের লিঙ্গ পরীক্ষা করা হয়েছে। এর আগে এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সতর্কতা অবলম্বন করা হয়েছে। কোনো ঘটনাই জনসমক্ষে প্রকাশ করা হয়নি। কিন্তু সেমেনিয়ার ব্যাপারে সেই গোপনীয়তা কেন পালন করা হলো না! কীভাবে ফাঁস হয়ে গেল সব?

No comments

Powered by Blogger.