ক্লাইস্টার্সকে ডাকছে ইতিহাস

একটা সময় ছিল যখন জয় ছাড়া অন্য কিছু ভাবতে পারতেন না। কোনো ম্যাচ হারলেই তাঁর মনে হতো সবকিছুই বুঝি শেষ। অথচ এখন জয়-পরাজয় খুব বেশি স্পর্শ করে না কিম ক্লাইস্টার্সকে। কোনো ম্যাচে জয়ের চেয়ে বাড়ি ফিরে স্বামী-সন্তানের মুখের হাসি দেখতেই আকুল থাকেন এই বেলজিয়ান। এমন নির্ভার হয়ে খেলার কারণেই হয়তো দুই বছর পর কোনো গ্র্যান্ড স্লামে নেমেই কোয়ার্টার ফাইনালে উঠে গেছেন ক্লাইস্টার্স।
চতুর্থ রাউন্ডে বিপুল জনপ্রিয়, তৃতীয় বাছাই ভেনাস উইলিয়ামসকে স্বাগতিক দর্শকদের সামনেই হারিয়ে দিয়েছেন ২৬ বছর বয়সী ক্লাইস্টার্স। উত্থান-পতনে ভরা ম্যাচটির স্কোরলাইন ৬-০, ০-৬, ৬-৪। এমন জয়ের পরও ক্লাইস্টার্সের মাথাজুড়ে রয়েছে পরিবার, ‘আগে শুধু জিততেই চাইতাম, কখনো কখনো একটু বেশিই চাইতাম। কিন্তু এখন আমি জানি টেনিসের বাইরেও অন্য জীবন আছে। অনুশীলন বা ম্যাচ শেষে আমি যখন বাড়ি ফিরি, আমি হারলাম কি জিতলাম—আমার স্বামী ও মেয়ের কাছে এর কোনো মূল্য নেই।’ ক্লাইস্টার্সকে হাত ইশারায় ডাকছে ইতিহাস। এই টুর্নামেন্ট জিতলে ইভোন গুলাগং ও মার্গারেট কোর্টের পর তিনিই হবেন গ্র্যান্ড স্লাম বিজয়ী একমাত্র ‘মা’।
ইতিহাস গড়ার হাতছানি আছে ক্লাইস্টার্সের কোয়ার্টার ফাইনাল প্রতিপক্ষ লি নার সামনেও। তৃতীয় চীনা খেলোয়াড় হিসেবে গ্র্যান্ড স্লামের শেষ আটে উঠেছেন তিনি, ক্লাইস্টার্সকে হারাতে পারলে দ্বিতীয় চীনা হিসেবে পাবেন শেষ চারে ওঠার স্বাদ। একের পর এক ফেবারিটদের বিদায়ী মিছিলের পাশেও অবশ্য এগিয়ে চলেছে সেরেনা উইলিয়ামসের জয়রথ। ড্যানিয়েলা হানতুচোভাকে মাত্র ৬৪ মিনিটে ৬-০, ৬-২ গেমে উড়িয়ে দিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে উঠেছেন দ্বিতীয় বাছাই। এ বছর সেরেনার গ্র্যান্ড স্লাম রেকর্ড ২২-১, একমাত্র পরাজয়টি ফ্রেঞ্চ ওপেনের কোয়ার্টার ফাইনালে সভেত্লনা কুজনেতসভার কাছে। সেমিফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে সেরেনা মুখোমুখি ইতালির ফ্লাভিয়া পেনেত্তার। দশম বাছাই পেনেত্তার কাছে হেরে এবারের টুর্নামেন্টে রুশ দুঃস্বপ্নের ধারায় যোগ হয়েছে সপ্তম বাছাই ভেরা জভোনারেভার নাম।
পুরুষদের বিভাগে অবশ্য অব্যাহত ফেবারিটদের জয়যাত্রা। ক্যারিয়ার-বিনাশী ইনজুরিকে জয় করে কোর্টে ফেরা টেলর ডেন্টকে চতুর্থ রাউন্ডেই থামিয়ে দিয়েছেন দ্বিতীয় বাছাই অ্যান্ডি মারে। সহজ জয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে উঠেছেন তৃতীয় বাছাই রাফায়েল নাদালও। তবে তৃতীয় সেটে পেশির ইনজুরিতে পড়ে ট্রেনারের সাহায্য নেওয়ায় সদ্য ইনজুরি কাটানো এই স্প্যানিয়ার্ডকে নিয়ে আবারও জেগেছে শঙ্কা। তবে ক্যারিয়ার গ্র্যান্ড স্লামের চক্র পূরণের আশায় আসা নাদাল এ নিয়ে কোনো মন্তব্যই করতে চাননি, ‘ইনজুরি নিয়ে আমি কোনো কথা বলতে চাই না। আমি তিন সেটে জিতেছি, প্রতিদিনই নিজের সেরাটা খেলার চেষ্টা করি।’ মারে-নাদালের সঙ্গে কোয়ার্টার ফাইনালে উঠেছেন হুয়ান কার্লোস ফেরেরো, জে-উইলফ্রায়েড সোঙ্গা, হুয়ান মার্টিন দেল পোত্রোও।

No comments

Powered by Blogger.