যেভাবে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ করতে যাচ্ছেন ট্রাম্প!
শুক্রবার (৮ নভেম্বর) ব্রিটিম সংবাদমাধ্যম ডেইলি মেইলের এক প্রতিবেদনে ট্রাম্প প্রস্তাবিত এই পরিকল্পনার বিস্তারিত তুলে ধরা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, ইউক্রেনে যুক্তরাষ্ট্র থেকে কোনো সেনা পাঠানো হবে না। বরং এই বাফার জোন প্রতিষ্ঠা করবে ইউরোপীয় ও ব্রিটেনের সেনারা।
ট্রাম্পের পরিকল্পনা অনুসারে, রাশিয়া ইউক্রেনের যে পরিমাণ ভূমি দখল করেছে এবং রুশ বাহিনী ইউক্রেনের রণক্ষেত্রে যে পরিমাণ অগ্রসর হয়েছে সেখানটাকেই সীমান্ত ধরে বাফার জোন প্রতিষ্ঠা করা হবে এবং ইউক্রেনকে ২০ বছরের জন্য ন্যাটোতে যোগদানের পরিকল্পনা স্থগিত রাখতে হবে।
রাশিয়া এবং ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা সীমিত করার পক্ষে ট্রাম্প। ইউক্রেনকে বাইডেন প্রশাসনের মতো একচেটিয়া সামরিক এবং অর্থনৈতিক সহায়তা করার পক্ষেও নন তিনি।
ট্রাম্পের মতে, রাশিয়ার বিরুদ্ধে ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাকি সদস্য দেশ এবং সামরিক জোট ন্যাটোর পদক্ষেপ যথেষ্ট নয়। শুধু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নির্ভরতা দিয়ে ইউক্রেন ইস্যু সমাধান করতে চান না ট্রাম্প।
পরিকল্পনার সাথে পরিচিত সূত্র বলছে, ৮০০ মাইল বাফার জোন প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে রাশিয়া এবং ইউক্রেনের মধ্যে একটি নিরস্ত্রীকরণ এলাকা তৈরি করা হবে। যা ভবিষ্যতে দুই পক্ষের সংঘর্ষের সম্ভাবনা কমাতে এবং কূটনৈতিক আলোচনার জন্য কাজে আসবে।
পরিকল্পনায় আরও বলা হয়েছে, এর বিনিময়ে যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র সরবরাহ করবে, যেন রাশিয়া আবারও যুদ্ধ শুরু করতে না পারে। যুক্তরাষ্ট্র এই মিশন পরিচালনা বা তদারকিতে কোনো সেনা পাঠাবে না এবং অর্থায়নও করবে না।
ট্রাম্পের এক সহকারী মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াল স্ট্রিট জার্নালকে জানিয়েছেন, ‘আমরা প্রশিক্ষণ ও অন্যান্য সহায়তা দিতে পারি, তবে বন্দুকের নল থাকবে ইউরোপিয়ানদের হাতে। আমরা মার্কিন পুরুষ ও নারীদের ইউক্রেনে শান্তি রক্ষায় পাঠাচ্ছি না। আর আমরা এর জন্য অর্থও ব্যয় করছি না বরং পোল্যান্ড, জার্মানি, যুক্তরাজ্য এবং ফ্রান্সকে এই দায়িত্ব নিতে বলা হবে।’
রাশিয়ার সঙ্গে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা এবং চুক্তির ওপর জোর দিয়ে আসছেন ট্রাম্প। তবে ইউক্রেন প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির অভিযোগ করে বলেছেন, ইউরোপকে রক্ষা করতে গিয়ে রাশিয়াকে তুষ্ট করার চেষ্টা আত্মহত্যার নামান্তর হবে। মূলত এই মন্তব্যের মাধ্যমে রাশিয়ার সঙ্গে শান্তিচুক্তির সম্ভাবনা কঠোরভাবে নাকচ করেছেন তিনি।
এদিকে ট্রাম্পের সিনিয়র উপদেষ্টা ব্রায়ান লানজা জানিয়েছেন, চলমান ইউক্রেন সংঘাতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের চিন্তা রাশিয়ার দখলকৃত অঞ্চল ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি না করে শান্তি অর্জনের দিকে হওয়া উচিত।
যদিও বাইডেন প্রশাসন এবং ন্যাটোর অনেকেই ক্রিমিয়া এবং ডনবাসের মতো অধিকৃত অঞ্চলগুলোকে ফিরিয়ে আনা সহ ইউক্রেনের সার্বভৌমত্বকে বহাল রাখতে হবে বলে জোর দিয়ে এসেছেন। তবে ট্রাম্পের উপদেষ্টারা আরও বাস্তববাদী অবস্থানের পক্ষে কথা বলছেন। ফলে ইউক্রেন যুদ্ধ শেষ পর্যন্ত কোন প্রক্রিয়ায় থামে তাই এখন দেখার বিষয়।
No comments