লোকসান গুনছে ‘মিনি-বাংলা’
রেজেন বিশ্বাসের কথায়, ‘আমার আগে থেকেই ভিসা ছিল, তাই কলকাতায় ভ্রমণ করতে পারছি। কিন্তু এখন যারা আবেদন করছেন তাদের জন্য, মেডিকেল ইমার্জেন্সি না থাকলে ভিসা দেয়া হচ্ছে না। সম্ভবত বাংলাদেশের অস্থিতিশীল পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে এখানে।
তার জেরেই ভারতীয় কর্তৃপক্ষ ভিসা নিয়ে এত কঠোর নীতি নিয়েছেন। ডিসেম্বর-জানুয়ারির মধ্যে একবার ভিসার বৈধতা শেষ হয়ে গেলে, ১০%-১৫% আন্তঃসীমান্ত ভ্রমণও বন্ধ হয়ে যাবে। ‘নিউমার্কেটের দোকানদাররা, যারা সাধারণত কলকাতার বিভিন্ন অংশের তুলনায় বাংলাদেশ থেকে বেশি ক্রেতা পান, তারাও খুব হতাশ। তারা উদ্বিগ্ন এই ভেবে যে, বাংলাদেশে এই অস্থিতিশীলতা আরও কয়েক বছর চলতে থাকলে এবং ভারতের জারি করা ভিসা নিষেধাজ্ঞা বজায় থাকলে এই অঞ্চলের মাইক্রো-ইকোনমি ভেঙে পড়বে।
চকো নাট, নিউ মার্কেটের একটি জনপ্রিয় দোকান যা চকলেট, বাদাম, মসলা এবং প্রসাধনী বিক্রি করে। তারা একচেটিয়াভাবে বাংলাদেশি গ্রাহকদের জন্য এই পণ্য সরবরাহ করে, আগে যেখানে দিনে ৩.৫ লাখ টাকা আয় হতো এখন তা কমে দাঁড়িয়েছে ৩৫,০০০ টাকা। দোকানের মালিক মো. শাহাবুদ্দিন জানাচ্ছেন, ‘মেডিকেল ভিসায় এখানে থাকা কয়েকজন গ্রাহক এখন দোকানে আসেন। তবে ট্রিপার বা যারা নিউমার্কেট থেকে পণ্য কিনে ঢাকায় বিক্রি করতেন তাদের আসা পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে। ‘প্রসাধনী দোকান রয়্যাল স্টোরের পঞ্চম প্রজন্মের মালিক অজয় বলছেন, ‘পরিস্থিতি শুধুমাত্র আমাদের মতো ১২৪ বছরের পুরনো দোকানের জন্য নয়, পুরো বাজারের জন্যই ভয়াবহ।’ ২০০৮-০৯ সালের দিকে বাজারের চরিত্র বদলে যায় যখন স্থানীয় গ্রাহকের সংখ্যা কমে যায়। নিউমার্কেট তখন থেকে বাংলাদেশিদের মধ্যে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে এবং প্রায় সব দোকানই তাদের চাহিদা মেটাতে শুরু করে। কিন্তু বাংলাদেশে চলমান সমস্যা এবং ভিসা ইস্যুতে গ্রাহকদের ভিড় কমে গেছে। অজয় বলছেন, প্রতিদিন গড়ে ২৫-৩০ জন বাংলাদেশি গ্রাহক দোকানে আসতেন এবং প্রায় ১৫,০০০ টাকা খরচ করতেন। এখন একদিনে হয়তো সর্বসাকুল্যে পাঁচজন বাংলাদেশি এখানে আসেন। খরচ কমে দাঁড়িয়েছে ১০,০০০ টাকা।
সূত্র: টাইমস অফ ইন্ডিয়া
No comments