জাপানে নির্বাচনী ফলাফলে সরকার গঠনে অনিশ্চয়তা by রাহমান মনি

২৭ অক্টোবর অনুষ্টিত জাতীয় নির্বাচনে জাপানের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষের কোনো দলই প্রয়োজনীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিশ্চিত করতে পারেনি। ফলে এককভাবে তো নয়ই জোটগতভাবেও সরকার গঠনে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। ভোটাররা দেশটির বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবার ক্ষমতাসীন জোটকে ব্যাপকভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে।

ইশিবার লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি) এবং তাদের জোটের সহযোগী দল কোমেইতো পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষের নির্বাচনে সম্মিলিতভাবে ২১৫টি আসন পেয়েছে। আগের বারের চেয়ে তাদের আসন সংখ্যা কমেছে। এর আগে পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষে তাদের আসন সংখ্যা ছিল ২৭৯।

নির্বাচনে প্রধান বিরোধীদল কনস্টিটিউশনাল ডেমোক্রেটিকপার্টি অব জাপান (সিডিপিজে) সবচেয়ে বেশি আসন পেয়েছে। তাদের আসন সংখ্যা বেড়ে ১৪৮ হয়েছে। আগে তাদের আসন সংখ্যা ৯৮ ছিল। জাপানকে শাসন করতে ৪৬৫ আসন বিশিষ্ট নিন্মকক্ষের যেকোনো দল বা জোটের ২৩৩টি আসনে সংখ্যাগরিষ্ঠতার প্রয়োজন।

সাংবিধানিক বিধি অনুযায়ী সরকার গঠন করতে জোট গঠনের জন্য দলগুলো হাতে ৩০ দিন সময় পাবে। এক মাসেরও আগে প্রধানমন্ত্রী হওয়া শিগেরু ইশিবা কতোদিন ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারবেন, তা নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। নির্বাচনে ছোট দলগুলোর অর্জনও উল্লেখযোগ্য। আলোচনায় তাদের ভূমিকাও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে। হবে দর কষাকষি। যার সুযোগ নিবে ছোট ছোট দলগুলি।

নির্বাচনী ফলাফলের পর সিডিপিজের নেতা ইয়োশিহিকো নোদা বলেছেন, ক্ষমতাসীন জোটকে উৎখাত করার চেষ্টা করতে তিনি অন্য দলগুলোর সঙ্গে কাজ করবেন।

গত এক দশকের মধ্যে এটিই এলডিপি’ নেতৃত্বাধীন জোটের জন্য সবচেয়ে খারাপ ফলাফল। তহবিল জনিত কেলেঙ্কারি ও জীবনযাপন ব্যয় জনিত সংকটকে কেন্দ্র করে ভোটারদের অনেকে তাদের প্রত্যাখ্যান করেছেন বলে বিশ্লেষকদের অভিমত।

মাত্র একমাস আগে ক্ষমতাসীন জোটের অন্যতম প্রধান শরীক লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি) প্রধান হয়ে ফুমিওকিশিদার স্থলাভিষিক্ত হন শিগেরুইশিবা।

প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেয়ার কয়েকদিন আগে এলডিপি’র নতুন নেতা শিগেরুইশিবা এই নির্বাচনের ঘোষণা দেন। কিন্তু নির্বাচনী ফলাফলে তার দলের সংসদীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারানোয় তার সিদ্ধান্ত নিজ এবং দলের জন্য বুমেরাং হয়েছে। এতে তার রাজনৈতিক ভবিষ্যতও প্রশ্নের মুখে পড়েছে। সোমবার এক বক্তৃতায় শিগেরুইশিবা বলেছেন, এলডিপি এবারের নির্বাচনে ‘কঠোর রায়’ পেয়েছে। তবে নির্বাচনের ফলাফল যাই আসুক তা মেনে নেয়ার ঘোষণাও দিয়েছেন তিনি। ২৮ অক্টোবর রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম এনএইচকে-তে প্রচারিত ভাষণে শিগেরু বলেছেন, ভোটাররা আমাদের একটি কঠোর রায় দিয়েছেন এবং আমাদের এই ফলাফল বিনীতভাবে মেনে নিতে হবে।

রোববারের নির্বাচনে ইশিবার লিবার‌্যাল ডেমোক্রেটিক পার্টি তাদের ইতিহাসে সবচেয়ে খারাপ ফল করেছে। ১৯৫৫ থেকে জাপানের শাসনভার বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এককভাবে এলডিপির কাছেই থেকেছে।

mzamin

No comments

Powered by Blogger.