মোহাম্মদপুরে অভিশপ্ত কালচার
রোববার মোহাম্মদপুর থানায় গিয়ে দেখা যায়, আগের দিন রাতভর চলা যৌথবাহিনীর অভিযানে ৩৪ জনকে আটক করে নিয়ে আসা হয়েছে। তার মধ্যে নবোদয় হাউজিং এলাকার স্বামী-স্ত্রী আল আমিন ও রিয়াও রয়েছেন। রোববার সকালে আদালতে পাঠানোর জন্য ৩৩ জন পুরুষকে প্রিজনভ্যানে ওঠানো হলেও রিয়াকে নেয়া হয় আলাদা গাড়িতে। এ সময় রিয়া বলেন, নবোদয় হাউজিং এলাকায় আমাদের বাসা। স্বামীর সঙ্গে যৌথবাহিনীর সদস্যরা আমাকেও আটক করেছে। তিনি বলেন, আমি বা আমার স্বামী কিছুই করিনি। আমরা রাতে খাবার খেতে বের হয়েছিলাম। সেখান থেকেই আমাদের আটক করে নিয়ে আসা হয়। এ সময় প্রিজনভ্যানের মধ্য থেকে রিয়ার স্বামী চিল্লাইয়ে বলছিল- আমার স্ত্রী কিছু করেনি। আমাদের কাছ থেকে কিছুই পাইনি।
মোহাম্মদপুরের ছিনতাইয়ের ঘটনা নিয়ে গতকাল মোহাম্মদপুর থানায় সংবাদ সম্মেলন করেছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) রুহুল কবির খান। ডিসি বলেন, মোহাম্মদপুরে কিশোর গ্যাং একটি অভিশপ্ত কালচার। ৫ই আগস্টের আগে থেকে এ কালচার বহুদিন ধরে চলমান ছিল। তবে কিশোর গ্যাং এখন অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে। তারপরেও তাদের অস্তিত্ব ফেরাতে রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা বা রাজনৈতিক মদতদাতাদের বিরুদ্ধে যথোপযুক্ত আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। মোহাম্মদপুরে পুলিশ, র?্যাব ও সেনাবাহিনী জনগণের মাঝে স্বস্তি ফিরিয়ে আনতে দিন-রাত কাজ করছে। তিনি বলেন, মোহাম্মদপুরের শের শাহ্ শুরি রোড থেকে দু’জন অস্ত্র বানানো কারিগরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের কাছ থেকে আমরা ৪০টি সামুরাই এবং বিভিন্ন ধারালো অস্ত্র উদ্ধার করেছি। এ ছাড়া বুদ্ধিজীবী কবরস্থান এলাকায় ডাকাতির প্রস্তুতিকালে ৯ জনকে গ্রেপ্তার করেছি। তাদের কাছ থেকে ডাকাতির বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়েছে। এ ছাড়াও সম্প্রতি মোহাম্মদপুর হাউজিং লিমিটেড এলাকায় নেসলে কোম্পানির গাড়ি থামিয়ে ডাকাতির ঘটনায় জড়িত চারজনের মধ্যে দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের একজন ১৬৪ ধারায় আদালতে জবানবন্দি প্রদান করেছেন। মোহাম্মদপুর থানা এলাকায় অপরাধ প্রতিরোধে এবং মোহাম্মদপুরবাসীর শান্তি-স্বস্তি ও নিরাপত্তাবোধ বৃদ্ধি করার জন্য বিভিন্ন পেট্রোলিং, স্পেশাল অপারেশন ও ব্লক রেড দেয়া হচ্ছে। আশা করছি দ্রুতই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে।
অপরদিকে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে- গত ২ দিনের বিশেষ অভিযানে বেশ কিছু চিহ্নিত সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজ গ্রেপ্তার হওয়ায় নিরাপত্তাহীনতায় থাকা মোহাম্মদপুরবাসীর মনে স্বস্তি ফিরে আসছে। সন্ত্রাস দমন এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়নে সেনাবাহিনীর কঠোর অবস্থান অব্যাহত থাকবে।
মোহাম্মদপুরে অভিযানকালে গ্রেপ্তারকৃত ছিনতাইকারী চক্র -ছবি নিজস্ব |
No comments