সিলেটে যৌথবাহিনীর সঙ্গে মাঠে আরিফ by ওয়েছ খছরু
৫ই আগস্টের প্রেক্ষাপট পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে নগরের হকার্স মার্কেট মাঠে থাকা হাজারো হকার আগের মতো সড়কে নেমে আসেন। নগরের ফুটপাথে বসান অস্থায়ী বাজারও। এতে নগরে বিশৃঙ্খল অবস্থা দেখা দেয়। বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনিক উদ্যোগ শুরু হয়। এতে হস্তক্ষেপ করেন পুলিশ কমিশনার মো. রেজাউল করিম। শনিবার হকারসহ সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তাদের নিয়ে বৈঠক করেন। সেখানে হকাররা কথা দিয়েছিলেন ফুটপাথ ছেড়ে হকার্স মাঠে চলে যাবেন। তাদের কথার সত্যতা পুরোপুরি মিলছে না। এখনো সড়কে রয়েছে হকারদের অবস্থান। বিকাল হলেই নগরের গুরুত্বপূর্ণ বন্দরবাজার, জিন্দাবাজার সহ কয়েকটি এলাকায় হকাররা সড়কে নেমে আসে। এতে নগরের পরিবেশে যেমনি বিশৃঙ্খলা হচ্ছে তেমনি যানজটও প্রকট হচ্ছে। বিশেষ করে বন্দরবাজার এলাকা পুরোপুরি অচল হয়ে পড়ে। হকাররা কথা না রাখায় রোববার থেকে নগরের ফুটপাথ উচ্ছেদে অভিযান শুরু করে যৌথবাহিনী। সঙ্গে ছিলেন সিলেট সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তারাও। যৌথবাহিনীর সদস্যরা মাঠে নামায় সড়কে থাকা হকাররা দিনের বেলা পিছু হটলেও সন্ধ্যার পর থেকে সড়ক দখলে নেয়। গতকাল সকাল থেকে যৌথবাহিনীর সদস্যরা ফের অভিযানে নামেন। সেই অভিযানে যোগ দেন সিলেটের সাবেক মেয়র ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আরিফুল হক চৌধুরী। তিনি সিলেট সিটি করপোরেশন ও যৌথবাহিনীর সহযোগী হিসেবে এসে মাঠে নামেন। এ সময় মাঠে সাবেক এই মেয়রকে দেখে কয়েকটি মার্কেটের ব্যবসায়ীরাও এগিয়ে আসেন। নগরের সিটি সুপার মার্কেট এলাকায় তারা অভিযান চালান। এ সময় দেখা যায় ওই মার্কেটের নিচতলার রাস্তা অবৈধভাবে দখল করে মালামাল রেখেছেন। পাশাপাশি দোকানের সামনের বিস্তৃত অংশও দখলে রেখে ব্যবসা করছিলেন। সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী এ সময় ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গে কথা বলেন। পরে আলোচনাক্রমে অবৈধ অংশটি সরিয়ে ফেলা হয়। অভিযানের সময় সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (অতিরিক্ত দায়িত্ব ট্রাফিক) বিএম আশরাফউল্লাহ তাহের সাংবাদিকদের জানিয়েছেন- ‘নগর পরিষ্কার করতে যৌথবাহিনীর সঙ্গে পুলিশও কাজ করছে। আমরা চাইছি নগরীর ফুটপাথ হকারমুক্ত হোক। এ কারণে সিটি করপোরেশন, সেনাবাহিনী ও পুলিশ একসঙ্গে অভিযান চালাচ্ছে।’ তিনি বলেন- ‘সিটি করপোরেশনের মার্কেটের অবৈধ অংশ ব্যবসায়ীরাই সরিয়ে ফেলেছেন। তাদের সহযোগিতা করা হয়েছে। এদিকে নগরের এই জঞ্জাল দূর করতে পুলিশের ভূমিকা অগ্রণী বলে জানিয়েছেন সিলেট সিটি করপোরেশনের বিদ্যুৎ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রুহুল আলম।
তিনি মানবজমিনকে জানিয়েছেন- পুলিশের অ্যাকশন ঠিক থাকলে হকাররা সড়কে বসতে পারবে না। এজন্য পুলিশকে কঠোর হওয়ার আহ্বান জানান তিনি। বলেন- হকার নেতারা পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে বৈঠকে যে কথা দিয়ে এসেছিলেন- সে কথা কিছু কিছু দৃশ্যমান হচ্ছে। কয়েকজন ফুটপাথ ছেড়ে মাঠে গেলেও এখনো সড়কে অধিকাংশ হকারই রয়ে গেছেন। সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী নূর আজিজুর রহমান জানিয়েছেন- সিলেটের জঞ্জাল দূর করতে আমরা নগরবাসীর সহযোগিতা কামনা করেছি। এতে সাড়া দিয়ে সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী সহযোগিতা করতে এগিয়ে এসেছেন। তিনিও অভিযানে সঙ্গে ছিলেন। সঙ্গে স্থানীয় ব্যবসায়ীরাও সহযোগিতা করেছেন। এ অভিযানে সিটি করপোরেশনের এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মতিউর রহমান সহ সিটি করপোরেশনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ছিলেন। তিনি বলেন- সিলেট সিটি করপোরেশনের হকার্স মার্কেট মাঠে হকারদের জন্য স্থান বরাদ্দ রয়েছে। ইতিমধ্যে হকাররা যেসব দাবি করেছিলেন সেসব দাবি পূরণ করা হয়েছে। সর্বশেষ নতুন একটি রাস্তা বের করার কাজ চলছে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে সে কাজও শেষ হয়ে যাবে।
No comments