বিএনপির সমর্থককে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করল আ.লীগের নেতাকর্মীরা

কুমিল্লার দেবিদ্বারে বিএনপির এক সমর্থককে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করেছে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। শুক্রবার (১৬ আগস্ট) সকাল ৮টার দিকে উপজেলার ফতেহাবাদ ইউনিয়নের সাইচাপাড়া বাজারে আ.লীগ-বিএনপির সংঘর্ষে এ ঘটনা ঘটে। এর পর থেকে ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনী ও পুলিশের যৌথ টিম মোতায়েন করা হয়েছে।

এ ঘটনায় দুপক্ষের আহত হয়েছে অন্তত ২০ জন। এর মধ্যে গুরুতর আহত অবস্থায় ছিদ্দিকুর রহমানকে উদ্ধার করে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

নিহত ছিদ্দিকুর রহমান (৪৫) সাইচাপাড়া গাবুদ্ধি বাড়ির মৃত আ. কুদ্দুস মিয়ার ছেলে। সে পেশায় একজন অটো রিকশাচালক। ছিদ্দিক বিএনপির সমর্থক বলে দাবি করেন পরিবারের লোকজন।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় বাসিন্দা মো. আনোয়ার হোসেন, মামুন ভুঁইয়া ও মো. আয়েজ মিয়া বলেন, গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর এলাকার ছাত্র-জনতা ও সাধারণ মানুষ আনন্দ মিছিল বের করেন। আনন্দ মিছিলের এক পর্যায়ে সাইচাপাড়া বাজারে স্থানীয় ইউপি সদস্য আমির হোসেনের ব্যক্তিগত অফিস থেকে শেখ মুজিবুর রহমান, শেখ হাসিনা ও স্থানীয় এমপি আবুল কালাম আজাদের ছবি ভাঙচুর করেন। ছবি ভাঙচুরের জেরে দুই দিন পর গাবুদ্ধি বাড়ির সামাউল নামে এক ছাত্রকে এলোপাতাড়ি মারধর করে আমির মেম্বারের ছেলে জুয়েল ও তার লোকজন।

পরে সামাউলের লোকজন দেবিদ্বার থানায় আমির মেম্বার ও তার ছেলের বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ দেন। ওই অভিযোগের খবর পেয়ে আমিরের লোকজন আরও ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। এ ঘটনা মীমাংসার জন্য স্থানীয় ময়নাল হাজারীর মধ্যস্থতায় শুক্রবার সকাল ৮টায় সাইচাপাড়া বাজারে দুই পক্ষকে সালিশ বৈঠকে ডাকেন।

বাজারের সালিশ বৈঠকে গাবুদ্ধি বাড়ির চারজন মুরুব্বি উপস্থিত হলে আমির মেম্বার তার ২০-৩০ জন লোক নিয়ে ওই সালিশ বৈঠকে উপস্থিত হয়ে গাবুদ্ধি বাড়ি থেকে আসা চার সালিশদারকে বেদম মারধর করেন। সালিশে মারধরের খবর পেয়ে গাবুদ্ধি বাড়ির ৪৫-৫০ জন বাজারে জড়ো হন।

পরে আমির মেম্বার ও লোকজনদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে আমিরের লোকজন প্রকাশ্যে ছিদ্দিকুর রহমানকে কুপিয়ে হত্যা করে। এ ঘটনায় দুই পক্ষের ২০ থেকে ২৫ জন আহত হয়েছেন। আহতরা দেবিদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

এ ঘটনায় অভিযুক্ত আমির হোসেন মেম্বার বলেন, ঘটনার সময় আমি এলাকায় ছিলাম না। এখন শত্রুতা করে সবাই আমার নাম বললে আমি কী করব। আমি বর্তমানে ব্রাহ্মণপাড়ায় আছি।

দেবিদ্বার থানার ওসি মো. নয়ন মিয়া বলেন, গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর আনন্দ মিছিল থেকে আ.লীগ সমর্থিত স্থানীয় আমির মেম্বারের অফিস ভাঙচুরের ঘটনার জেরে শুক্রবার (১৬ আগস্ট) সকাল ৭টার দিকে একটি সালিশ বৈঠকে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ছিদ্দিক নামে বিএনপির এক সমর্থক নিহত হয়েছেন। ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনী ও পুলিশের যৌথ টিম রয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.