কাঁচামরিচের ঝাঁজে পুড়ছে বাজার, মাছ-মাংস-সবজির দাম স্থিতিশীল

রাজধানীর বাজারে আবারও বেড়েছে কাঁচামরিচের দাম। সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি কেজি কাঁচামরিচে ৪০ থেকে ৬০ টাকা বেড়েছে। কিছুটা সহনীয় হয়েছে সবজির বাজার, তবে মাছ, মুরগি ও ডিম বিক্রি হচ্ছে আগের দামেই।

শুক্রবার (১৬ আগস্ট) রাজধানীর পাইকারি সবজি বাজার শ্যামবাজার, নয়াবাজার, রায়সাহেব বাজার, বাবুবাজার, কারওয়ানবাজার, হাতিরপুল বাজার ও নিউমার্কেট কাঁচাবাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা যায়।

বিক্রেতারা বলছেন, বাজারে নিত্যপণ্যের সরবরাহ তুলনামূলক স্বাভাবিক হয়েছে। এর আগে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন ও সরকার পরিবর্তনের পর সৃষ্ট সহিংস পরিস্থিতিতে এক মাস ধরে জিনিসপত্রের দাম বেশ ওঠানামা করছিল। এখন অধিকাংশ পণ্যের ক্ষেত্রে দাম অনেকটা স্থিতিশীল পর্যায়ে এসেছে। গত সপ্তাহে প্রতি কেজি কাঁচামরিচ বিক্রি হয়েছিল ২২০ থেকে ২৪০ টাকায়। তবে শুক্রবার সে দাম ২৬০-৩০০ টাকা। তবে বাজারগুলোতে স্থিতিশীল আছে মাছ, মুরগি ও ডিমের বাজার।

নয়াবাজারের সবজি ব্যবসায়ী তোফাজ্জেল হোসেন কালবেলাকে বলেন, ছাত্র আন্দোলন, কারফিউ ও সরকার পতনের অস্থিরতার মধ্যে এক মাস ধরে বাজার ছিল অস্থিতিশীল। তবে এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক, তাই অধিকাংশ সবজির দাম স্থিতিশীল। কিন্তু হঠাৎ করে আজ বাজারে বেড়ে গেছে কাঁচামরিচের দাম। এর কারণ চাহিদার তুলনায় জোগান কম।

রায়সাহেব বাজারে আসা মানিক বণিক বলেন, এখন তুলনামূলক বাজার স্থিতিশীল অবস্থায় আছে। কিন্তু সবজি, মাছ-মাংসের দাম আরও কম হওয়া উচিত। তাহলে আমাদের মতো সাধারণ মানুষ একটু শান্তিতে বাচঁতে পারত।

এদিন ঢাকার বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বেগুন প্রতি কেজি মানভেদে ৬০ থেকে ৭০, ঢেঁড়শ, চিচিঙ্গা, পটল, ধুন্দল, পেঁপে বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকায়। পাকা টমেটোর কেজি প্রকারভেদে ১৬০ থেকে ১৮০ এবং গাজরের কেজি ২০০ টাকা। লেবুর হালি ১৫ থেকে ৩০ টাকা, ধনে পাতার কেজি ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা, কলার হালি ৪০ টাকা, মিষ্টিকুমড়ার কেজি ৪০ থেকে ৫০ টাকা।

বয়লার মুরগির প্রতি কেজি ১৬০ থেকে ১৭০ টাকা, সোনালি মুরগি ২৬০ থেকে ২৮০ টাকা এবং দেশি মুরগি ৫৫০ টাকা থেকে ৬০০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। ডিম ডজনপ্রতি ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। এসব বাজারে গরুর মাংসের কেজিপ্রতি ৬৫০ থেকে ৭৫০ টাকা, মাথার মাংস ৪৫০ টাকা, ছাগলের মাংসের কেজিপ্রতি ১০০০ থেকে ১২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

মাছের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, দেড় কেজি ওজনের রুই মাছ প্রতি কেজি ৩৪০ থেকে ৩৫০ টাকায়, আড়াই কেজি ওজনের রুই মাছ প্রতি কেজি ৪০০ থেকে ৪২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দাম কমে প্রতি কেজি পাঙাশ সাইজভেদে ১৮০ থেকে ২০০ টাকায় এবং তেলাপিয়া মাছ প্রতি কেজি ২২০ থেকে ২৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

নিউমার্কেট কাঁচাবাজারের মাছ ব্যবসায়ী মো. বাবুল হোসেন বলেন মাছের দাম তুলনামূলক কমেছে। গত এক মাস ধরে বাজারে সরবরাহ সংকটের কারণে রাজধানীতে বেড়েছিল মাছের দাম। কিন্তু বাজার এখন স্বাভাবিক। হাতিরপুল বাজারে বাজার করতে আসা কর্মজীবী নারী মালিহা বেগম বলেন, গত এক মাসের চেয়ে আজকের বাজারে সবজি, মাছ-মাংসের দাম কিছুটা কমেছে। তবে আজ মরিচের দাম বেড়েছে। সবজি ও মাছের দাম সহনশীল হলেও আগের মতো উচ্চ দরেই বিক্রি হচ্ছে চাল, আলু ও পেঁয়াজ।

চালের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাজারে মিনিকেট ৭২ টাকা, আটাশ চাল ৫৮ টাকা, মোটা চাল ৫২ টাকা, লাল বোরোধানের চাল ৯০ টাকা, সুগন্ধী চিনিগুড়া পোলাওর চাল ১৪০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে।

বাজারে দীর্ঘ সময় ধরে উচ্চ দামে বিক্রি হচ্ছে পেঁয়াজ ও আলু। প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ এখন ১১০-১২০ টাকা ও আলু ৬০-৬৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

No comments

Powered by Blogger.