কারাগারে বন্দি ৭৭ হাজার ১২৪

দেশের ৬৮টি কারাগারে ৭৭ হাজার ১২৪ বন্দি রয়েছে। এরমধ্যে প্রায় ৩৬ শতাংশ মাদকসেবী। যে কারণে অভিনব কায়দায় কারাগারে ঢুকছে মাদক। পুরান ঢাকার বকশীবাজার কারা অধিদপ্তরে ‘কারা সপ্তাহ’ এবং ‘বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের স্বীকৃতি অর্জনের ঐতিহাসিক সাফল্য উদযাপন’ উপলক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে কারা মহাপরিদর্শক (আইজি প্রিজন) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ ইফতেখার উদ্দিন এসব কথা বলেন। আইজি প্রিজন বলেন, অভিনব কায়দায় কারাগারে ঢুকছে মাদক। শুকনা মরিচের ভেতরে করে মাদক আনছে। কেউ আনছে পেঁয়াজের ভেতরে করে। এতে কারা অধিদপ্তরের কতিপয় সদস্য জড়িত রয়েছে জানিয়ে সৈয়দ ইফতেখার বলেন, আমাদেরও অনেক ভুল-ত্রুটি আছে। এসব অপরাধে গত এক বছরে কমপক্ষে ২০ জনকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মাদক প্রতিরোধে বেশ কয়েকটি কারাগারে লাগেজ স্ক্যানার স্থাপন করা হয়েছে। দেশে প্রথমবারের মতো কারাগারে বডি স্ক্যানারও বসানো হচ্ছে। কারা সপ্তাহ উপলক্ষে বিভিন্ন কর্মসূচি সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘সংশোধন ও প্রশিক্ষণ, বন্দির হবে পুনর্বাসন’ এই স্লোগানে দেশের ৬৮টি কারাগারে শুরু হতে যাচ্ছে কারা সপ্তাহ। আগামী মঙ্গলবার কাশিমপুর কারা কমপ্লেক্সে এই কারা সপ্তাহের উদ্বোধন করবেন প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদ। কারা সপ্তাহ চলবে ২৬শে মার্চ পর্যন্ত। সেবার মান বৃদ্ধিসহ কারা কর্মচারী, কারাবন্দি এবং তাদের আত্মীয়-স্বজনদের মধ্যে সেতুবন্ধন সৃষ্টি করাই কারা সপ্তাহের অন্যতম লক্ষ্য। দেশের ৬৮টি কারাগারে একসঙ্গে ‘কারা সপ্তাহ’ এবং ‘বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের স্বীকৃতি অর্জনের ঐতিহাসিক সাফল্য উদযাপন’ উপলক্ষে বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছে কারা কর্তৃপক্ষ। প্যারেড, রক্তদান, কারাগারে কয়েদিদের তৈরি উন্নতমানের পণ্য নিয়ে প্রদর্শনী ও দেশের ৬৮টি কারাগারে সচেতনতামূলক সভাসহ বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।
কারাপ্রধান বলেন, সোয়াশ’ বছরের পুরনো কারাবিধি থেকে বের হচ্ছে বাংলাদেশ কারাগার। ১৮৮৪ সালে প্রণীত বৃটিশ কারাবিধি থেকে বের হয়ে নতুনভাবে কারা আইন ও কারাবিধি প্রণয়নের কাজ চলছে। ১৫৯টি পুরনো বিধির মধ্যে ইতোমধ্যে ৮০টির পর্যালোচনাও শেষ হয়েছে। সব প্রক্রিয়া শেষ হলে এ বছরই নতুন কারাবিধি কার্যকর হবে বলে আশা করছি।
কারাগারে সাজাপ্রাপ্ত বন্দিরা ২৮শে মার্চ থেকে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে বাড়িতে থাকা তাদের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলতে পারবেন। প্রাথমিকভাবে টাঙ্গাইল জেলা কারাগার থেকে এ কর্মসূচি চালু হবে। পর্যায়ক্রমে তা সারাদেশে ছড়িয়ে দেয়া হবে। কারারক্ষী ও কারাবন্দিদের বিশেষ দরবার অনুষ্ঠিত হবে। কারাবন্দিদের জীবিকা নির্বাহের জন্য আত্মবিশ্বাসী করে তোলা হচ্ছে।

No comments

Powered by Blogger.