ধর্ষণের পর শ্বাসরোধে হত্যা, লাশ ঝুলিয়ে রাখে ফ্যানে

নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় ষষ্ঠ শ্রেণীর মেধাবী ছাত্রী মোনালিসাকে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধে হত্যা করে মৃতদেহ ফ্যানের সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। মোনালিসার রক্ত দিয়ে পাশের বাড়ির একটি দেয়ালে তার নাম লিখে যায় ঘাতক। এ ঘটনায় শনিবার বিকালে মোনালিসার বাবা শাহীন বেপারি বাদী হয়ে পাশের বাড়ির ইকবাল হোসেনের ছেলে দুবাই প্রবাসী সাইদের (৩০) বিরুদ্ধে একটি মামলা করেছেন। সাইদ ঘটনার পর তার স্ত্রী ইভাকে (২৫) একই এলাকায় শ্বশুরবাড়িতে রেখে আত্মগোপন করে। শাহীন বেপারি জানান, নিহত মোনালিসা তার বড় মেয়ে এবং শাহেদ হাসান (৯) নামে ছোট আরেক ছেলে আছে। মোনালিসা স্থানীয় উজির আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্রী। তিনি ওই দুই সন্তানকে বাসায় রেখে শুক্রবার সকালে নরসিংদীর মাধবদী এলাকায় স্ত্রী মরিয়ম বেগমকে নিয়ে শ্বশুরবাড়ি যান। তিনি জানান, একই দিন সন্ধ্যার সময় শ্বশুরবাড়ি থেকে বাড়িতে ফেরার পথে ভাড়াটিয়া রবতন বেগম আমাকে ফোন করে জানায়, সাইদ আমার ঘরে ঢুকেছে এবং কিছুক্ষণ পর বের হয়ে গেছে।
তখন রবতন বেগমকে বলি মোবাইলটি নিয়ে মোনালিসাকে দাও। ওই সময় রবতন বেগম আমার ঘরে গিয়ে মোনালিসাকে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলতে দেখে আমাকে জানায়। এর আগে সাইদ আমার ঘর থেকে বের হয়ে যাওয়ার সময় রবতন বেগম জিজ্ঞাস করলে তাকে হুমকি দিয়ে চলে যায়। খেলার মাঠে আমার ছেলে শাহেদকে বলে, তোমার বোন তোমাকে ডাকছে বাসায় যাও। আমার ছেলে বাসায় এসে ঘরের দরজা খুলে রবতন বেগমসহ আশপাশের লোকজনকে নিয়ে ফ্যানে বাঁধা গামছা কেটে মোনালিসাকে নামিয়ে শহরের ভিক্টোরিয়া হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে চিকিৎসক মোনালিসাকে মৃত ঘোষণা করেন। ফতুল্লা মডেল থানার ওসি কামাল উদ্দিন জানান, মোনালিসাকে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে বলে প্রাথমিক তদন্তে প্রমাণ পাওয়া গেছে। ঘাতক মোনালিসার রক্ত দিয়ে পাশের বাড়ির একটি দেয়ালে তার নাম লিখে গেছে। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে। আরও জানান, ঘাতক সাইদ ঘটনার পরপরই তার স্ত্রী ইভাবে একই এলাকায় শ্বশুরবাড়িতে রেখে আত্মগোপন করেছে। তাকে গ্রেফতার করা হলে এবং ময়নাতদন্ত রিপোর্ট এলে হত্যার কারণ জানা যাবে। সাইদকে গ্রেফতারের জন্য চেষ্টা চলছে। উজির আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হুমায়ন কবীর রতন জানান, মোনালিসা অত্যন্ত মেধাবী ছাত্রী ছিল। তার এই মৃত্যু আমরা মেনে নিতে পারি না। হত্যাকারীকে দ্রুত গ্রেফতার ও ন্যায়বিচার চাই।

No comments

Powered by Blogger.