তিন পাকিস্তানির ৯৬ সন্তান

তিন পাকিস্তানি প্রায় ১০০ সন্তানের জন্ম দিয়েছেন। দেশটিতে চলমান এক আদমশুমারিতে এ তথ্য উঠে এসেছে। গত ১৯ বছরের মধ্যে প্রথমবারের জন্য এটাই কোনো আদমশুমারি। দক্ষিণ এশীয় অনেক দেশের মতোই পাকিস্তানেও জনসংখ্যার বিস্ফোরণ ঘটছে। খবর এএফপির। বিশেষজ্ঞরা হুশিয়ারি দিয়ে বলছেন, পাকিস্তান তার দ্রুত বর্ধনশীল জনসংখ্যার মৌলিক চাহিদা ও বিভিন্ন সামাজিক সেবা নিশ্চিত করতে হিমশিম খাচ্ছে। জন্মহারের দিক দিয়ে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে পাকিস্তান শীর্ষে রয়েছে। দেশটিতে বেশি সন্তান গ্রহণের কারণে জনসংখ্যা ঊর্ধ্বগতিতে বাড়ছে। গত ১৯ বছরের মধ্যে এবারই সবচেয়ে বেশি হারে জনসংখ্যা বেড়েছে। ১৯৯৮ সালে পাকিস্তানের জনসংখ্যা সাড়ে ১৩ কোটি ছিল। এখন তা ২০ কোটি ছুঁইছুঁই। প্রায় ছয় কোটি মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করছে। ৩৬ সন্তানের জনক ৫৭ বছর বয়সী গুলজার খান। আরও এক সন্তান আসন্ন। তবে এত সন্তান নিয়ে মোটেও বিচলিত নন তিনি। তিনি বলেন, আল্লাহ ভরণপোষণের ব্যবস্থা করবেন। তা ছাড়া পারিবারিকভাবে শক্তিশালী হওয়ার জন্য বেশি সন্তান প্রয়োজন। তার মতোই ভাবনা বড় ভাই ৭০ বছর বয়সী মাস্তান খান ওয়াজিরের। ছোট ভাইয়ের মতো তারও তিন স্ত্রী। তবে ভাইয়ের তুলনায় তার সন্তান কম। তাদের সংখ্যা মাত্র ২২ জন। তবে তার নাতি-নাতনির সংখ্যা এত বেশি যে সংখ্যায় ঠিক কত তা তিনি বলতে পারেন না। আর এ দু’জনের সঙ্গে আত্মীয়তার সম্পর্ক নেই এমন আরেকজন হচ্ছেন জান মোহাম্মেদ।
তারও তিন স্ত্রী। সন্তান সংখ্যা ৩৮। তার লক্ষ্য আরেকটি বিয়ে করে সন্তানসংখ্যা ১০০-তে উন্নীত করা। পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখাওয়ার দক্ষিণাঞ্চলের জেলা বানুর বাসিন্দা ৩৬ সন্তানের জনক গুলজার খান বলেন, ‘আল্লাহ এ পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন। মানুষ সৃষ্টি করেছেন। তাই কেন আমি শিশু জন্মের প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে বাধা দেব?’ ইসলাম জন্মনিয়ন্ত্রণ সমর্থন করে না বলেও তিনি মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, ‘আমরা শক্তিশালী হতে চেয়েছি।’ তিনি বলেন, তার এত সন্তান হওয়ায় সবাই মিলেই একটি পুরো ক্রিকেট ম্যাচ খেলতে পারে। তাদের খেলার জন্য কোনো বন্ধুরও প্রয়োজন হয় না। তার তৃতীয় স্ত্রী এখন অন্তঃসত্ত্বা বলেও তিনি জানান। গুলজার খানের ১৫ ভাইবোনের একজন মাস্তান খান ওয়াজির বলেন, ‘আল্লাহ আমাদের খাবার ও সম্পদ দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। কিন্তু লোকজনের বিশ্বাস কম।’ ৩৮ সন্তানের জনক জান মোহাম্মেদ বাস করেন বেলুচিস্তান প্রদেশের কোয়েটায়। গত বছর এএফপির সঙ্গে আলাপচারিতায় তিনি জানিয়ে ছিলেন চতুর্থ বিয়ে করে সন্তানসংখ্যা ১০০-তে উন্নীত করা তার আকাক্সক্ষা। তিনি বলেন, তাকে বিয়ে করতে এখনও কেউ রাজি হয়নি। কিন্তু তিনি আশা ছেড়ে দেননি। তিনি বলেন, ‘যত মুসলিম জন্মাবে, তত শত্রুরা ভয় পাবে। মুসলিমদের বেশি বেশি সন্তান জন্ম দেয়া উচিত।’ নারীদের মতামত দেয়ার অধিকার থাকলে এ সমস্যা সমাধান করা সহজ হতো বলে মন্তব্য করেছেন দেশটির নারী আন্দোলনের সক্রিয় কর্মী আয়েশা সারওয়ারি।

No comments

Powered by Blogger.