আবগারি শুল্ক ও ভ্যাট প্রত্যাহারের দাবি বিএনপির

ব্যাংক আমানতের ওপর অন্যায় ও অনৈতিক বর্ধিত শুল্ক আরোপ বাতিল ও বিভিন্ন প্রয়োজনীয় পণ্যের ওপর আরোপিত ১৫ শতাংশ ভ্যাট ভোক্তাদের সহনীয় পর্যায়ে হ্রাস করার দাবি জানিয়েছে বিএনপি। রোববার রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক বাজেট প্রতিক্রিয়ায় দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ দাবি তুলে ধরেন। তিনি বলেন, অর্থমন্ত্রী ব্যাংকে আমানতকারীদের জমানো আমানতের ওপর বিভিন্ন স্লাবে শুল্ক বাড়িয়েছেন। এক লাখ টাকার উপর এবার শুল্ক আরোপের প্রস্তাব করা হয়েছে ৮০০ টাকা। আবার সঞ্চয়কারীর আমানতের পরিমান ডেবিট-ক্রেডিট প্রক্রিয়ায় তার একাউন্টে বছরের যে কোনো সময় ১ লাখ টাকা থাকলেই ৮০০ টাকা কেটে রাখা হবে। একদিকে বর্তমানে আমানতের উপর সুদের হার হ্রাস করা হয়েছে। তার ওপর বর্ধিত হারের এই শুল্ক। ফখরুল বলেন, আমানতকারীরা এখন শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন, তারা কোথায় যাবে।
সুদ কমছে, মূল্যস্ফীতির ফলে প্রকৃত সুদের হার ঋণাত্মক হয়ে পড়ছে, এর ওপর বাড়ছে কর। এছাড়া রয়েছে ব্যাংকের লেনদেন জনিত কর্তন। এর ফলে ১ লাখ টাকার আমানতকারী দিনের শেষে টাকা উঠাতে গিয়ে দেখবে মুনাফা তো দূরের কথা, তার মূল আমানত ১ লাখ টাকাও পাচ্ছেন না।  আমরা ব্যাংক আমানতের ওপর এ অন্যায় ও অনৈতিক বর্ধিত শুল্ক আরোপ বাতিল এবং ব্যাংক ব্যবস্থার পরিপূর্ণ সংস্কার দাবি করছি। ভ্যাটের বিষয়ে বিএনপির এ নেতা বলেন, এ বাজেটে প্রস্তাবিত ১৫% ভ্যাট দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সর্বোচ্চ । ভারতে ভ্যাটের হার ১২.৫%, নেপালে ১৩%। মালদ্বীপে সব ক্ষেত্রে ৬% ও পর্যটন খাতে ১২%। তাছাড়া বাংলাদেশের প্রতিযোগী ভিয়েতনাম, কম্বোডিয়া, ইন্দোনেশিয়া ও মিয়ানমারে এর হার ১০%। উচ্চহারে ভ্যাট আহরণের ফলে দ্রব্যমূল্য বাড়বে, মূল্যস্ফীতির চাপ বাড়বে, জীবন যাত্রার ব্যয় বাড়বে, বিশেষ করে মধ্যবিত্ত, নিম্নবিত্ত, ও দরিদ্র মানুষ ভয়ানক দুর্ভোগের মধ্যে পড়বে।  আমরা বিভিন্ন প্রয়োজনীয় পণ্যের উপর আরোপিত ১৫% ভ্যাটের হার ভোক্তাদের সহনীয় পর্যায়ে হ্রাস করার দাবি জানাচ্ছি। মির্জা ফখরুল বলেন, ২০১৭-১৮ অর্থবছরের জন্য ৪ লক্ষ ২৬৬ কোটি টাকার এই বাজেট বাংলাদেশের জন্য সর্বকালের বৃহত্তম বাজেট। এই বাজেট বিশ্লেষণ করে আমরা যুগপৎ বিস্মিত, ক্ষুব্ধ এবং হতাশ হয়েছি। অতীত অভিজ্ঞতার আলোকে আমরা বলেতে পারি এই বাজেট বাস্তবায়নযোগ্য নয়। কেবলমাত্র অলীক স্বপ্ন-কল্পনাই এই প্রস্তাবিত বাজেটের ভিত্তি।

No comments

Powered by Blogger.