সুন্দরবনে এক দশকে বাঘ কমেছে ৩৩৪ টি

প্রাকৃতিক অপরুপ সৌন্দর্যের লীলাভূমি বিশ্ব ঐতিহ্য ম্যানগ্রোভ ফরেষ্ট সুন্দরবনের অতন্দ্র প্রহরী রয়েল বেঙ্গল টাইগার আজ নানা সংকটে দিন দিন কমছে। চোরা শিকারীদের অপতৎপরতা, প্রাকৃতিক দূর্যোগ, লবনাক্ততা বৃদ্ধি,আবাসস্থল নষ্ট,খাদ্য সংকটসহ আন্তর্জাতিক ষঢ়যন্ত্রে মনুষ্যসৃষ্ট নানা প্রতিকূলতায় গত কয়েক বছরে বাংলাদেশের সুন্দরবন থেকে আশংকাজনকভাবে হ্রাস পেয়েছে বাঘের সংখ্যা। শুমারী অনুযায়ী গত মাত্র ১ দশকের ব্যবধানে বাঘ কমেছে ৩৩৪ টি। ২০০৪ সালের শুমারিতে যেখানে বাঘের সংখ্যা ছিল ৪৪০ টি ২০১৫ সালের শুমারিতে তার সংখ্যা নেমে দাঁড়িয়েছে মাত্র ১০৬ টিতে। তবে বনবিভাগ টাইগার কনজারভেশন এ্যাক্টিভিটি প্রকল্পের আওতায় বাঘের সংখ্যা ও তার জীবন যাপন জানতে সম্প্রতি ২ কোটি ৮০ লাখ টাকা ব্যয়ে দ্বিতীয়বারের মত ক্যামেরা ট্রাপিংয়ের মাধ্যমে বাঘ গণনা কার্যক্রম সম্পন্ন করেছে। বাঘের সঠিক সংখ্যা পেতে তারা এবার দেশী-বিদেশী গবেষকদের পাশাপাশি সর্বোচ্চ প্রযুক্তির ব্যবহার করেছে। যার ফলাফল জানতে অপেক্ষা করতে হবে চলতি বছরের আগষ্ট পর্যন্ত এমনটাই জানিয়েছে বনবিভাগ। বাঘ রক্ষায় সরকার বিভিন্ন সময় নানামুখি ব্যাপক পদক্ষেপ নিলেও বহুবিধ সংকটে কার্যত তা বাঘ বিলুপ্তিতে বিশেষ কোন প্রভাব পড়েনি। তবে কেন বাঘের এই কমে যাওয়া ? কারা মারছে, কেন মারছে আর যাচ্ছেই বা কোথায়? এমন প্রশ্ন থেকে সরকারি বা আন্তর্জাতিকভাবে বিভিন্ন গোষ্ঠী বা সংস্থা বিভিন্ন সময় ব্যাপক অনুসন্ধানও চালিয়েছে। এনিয়ে সর্বশেষ পুলিশের আন্তর্জাতিক সংস্থা ইন্টারপোল বাংলাদেশ সরকারের কাছে তাদের এক প্রতিবেদনও পাঠিয়েছিল। যাতে উঠে এসেছে বাঘ নিধনে জানা অজানা চাঞ্চল্যকর সব তথ্য। বিশ্লেষকদের আশংকা, এমনটি চলতে থাকলে অদূর ভবিষ্যতে একেবারে বিলুপ্ত হয়ে যেতে পারে ম্যনগ্রোভ সুন্দরবনের বিশ্ব ঐতিহ্য ডোরাকাটা রয়েল বেঙ্গল টাইগার। তবে সর্বশেষ আশার কথা, সুন্দরবনের নীলকমল, কটকা, কচিখালি ও সাতক্ষীরা রেঞ্জে বাঘের বাচ্চা দেখা যাচ্ছে। ২০২২ সালের মধ্যে বাঘের সংখ্যা দ্বিগুণ করতে বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় নানা পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার। সেজন্য প্রজনন ক্ষমতা বাড়াতে সুন্দরবনে নতুন করে তৈরী করা হচ্ছে আরো ১৮ টি অভয়ারণ্য। আর ঠিক এমন অবস্থায় বিশ্ববাসীকে জানান দিতে গত বছরের ১ ডিসেম্বর থেকে বনবিভাগ সুন্দরবনে দ্বিতীয়বারের মত ক্যামেরা ট্রাফিংয়ের মাধ্যমে বাঘ মনিটরিং কার্যক্রম শুরু করে। যা ইতেমধ্যে শেষ হয়েছে। ইন্টাপোলের তথ্য সহ বিভিন্ন দায়িত্বশীল সূত্র থেকে জানাযায়, চোরা শিকারি ও ডাকাত দলের সমন্বয়ে পরিচালিত নিধন অভিযানে তারা আগ্নেয়াস্ত্র ও বিষ-ফাঁদ দিয়ে বাঘ হত্যা করে থাকে। এর পর বাঘের চামড়া থেকে শুরু করে বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সুন্দরবন সংলগ্ন সংশ্লিষ্ট চক্ররা বিভিন্ন মাধ্যমে ক্রেতাদের কাছে পাঠিয়ে দেয়। ইন্টারপোল ঐ ৩ চক্রের মোট ৩২ জন সদস্যকে চিহ্নিত করে ঐপ্রতিবেদনে। যার তথ্যানুযায়ী, বাঘের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বিক্রির মূলত তিনটি বাজার রয়েছে, ভারত, মিয়ানমার ও মালয়েশিয়া। এসব এলাকা থেকে আবার কখনো কখনো তা চীন ও দক্ষিণ কোরিয়াতেও পাচার হয়।
এছাড়া দেশের অভ্যন্তরেও নাকি বাঘের এসব অংগ-প্রত্যঙ্গ ও মাংসের বাজার রয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাঘ হত্যার পর সুন্দরবন থেকে ছোট্ট নৌকা বা স্পিড বোট সহ বিভিন্ন মাধ্যমে ভারতীয় সীমান্তে সেদেশের চোরা চালানীদের কাছে পৌঁছে দেয়া হয়। কখনো বাংলাদেশ থেকে চীন, মালয়েশিয়া, ভারত ও দক্ষিণ কোরিয়ায় কাঁকড়া ও মাছের চালানের সাথেও লুকিয়ে বাঘের চামড়া ও অংগ-প্রত্যঙ্গ পাচার হয় বলেও ঐ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের অভিমত,বন ও জলদস্যুদের হাতে পরোক্ষভাবে সুন্দরবনের নিয়ন্ত্রন চলে যাওয়ায় এ পর্যন্ত তাদের হাতে শতাধিক বাঘ শিকার হয়েছে। খাদ্য ও আবাসস্থল সংকটে বহু বাঘ পাড়ি জমিয়েছে সুন্দরবনের ভারতের অংশে। স্থানীয়রা অবশ্য বাঘের সংখ্যা আশঙকাজনকহারে হ্রাস পাওয়ার পেছনে ৮টি কারণ চিহ্নিত করেছে। যার মধ্যে রয়েছে প্রাকৃতিক দুর্যোগ (ঝড়,বন্যা,জলোচ্ছ্বাস), লবনাক্ততা বৃদ্ধি, খাদ্য সংকট, আবাসস্থল ধ্বংস ও বিশেষ করে চোরা শিকারিদের অপতৎপরতা। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে যে, ৮ কারণে বাঘের মৃত্যু হতে পারে তা হল, বয়স্ক বাঘের স্বাভাবিক মৃত্যু,পুরুষ বাঘ কতৃক বাচ্চা খেয়ে ফেলা, পর্যাপ্ত খাদ্যাভাব, লোনা পানি গ্রহনে লিভার সিরোসিস রোগে আক্রান্ত,প্রাকৃতিক দূর্যোগ,ব্যাবস্থপনাজনিত সমস্যা বিদেশী বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বনবিভাগের দায়িত্বহীনতা, বাঘের প্রতি উদাসহীন দৃষ্টিভঙ্গি এবং শিকারীদের অপতৎপরতার কারনে সুন্দরবন থেকে হারিয়ে যাচ্ছে বাঘ। বন বিভাগ ও এলাকাবাসী জানায়, ১৯৯৮ সালের ২৬ মার্চ শ্যামনগরের দাতনিখালি গ্রামে একটি বাঘ ঢুকে পড়লে এলাকাবাসী বাঘটিকে গুলি করে হত্যা করে। এর মাত্র এক দিন পরে একই এলাকায় আরো একটি বাঘ গণ পিটুনিতে মারা যায়। ২০০৮ সালের ২০ জুন সন্ধ্যায় সাতক্ষীরার শ্যামনগরের দক্ষিণ কদমতলা গ্রামে একটি বাঘ প্রবেশ করে। ঐ সময় বাঘটির আক্রমনে ১ গৃহবধূ সহ ৩ জনের মৃত্যু হয়। আহত হয় আরো ২ জন। এঘটনায় এলাকাবাসী পরের দিন বাঘটিকে পিটিয়ে হত্যা করে। ২০০৯ সালের ২জুন সুন্দরবনের চুনা নদী পার হয়ে শ্যামনগরের খলিশাবুনিয়া গ্রামের কালীবাড়ি এলাকায় একটি বাঘ ঢুকে পড়ে। এসময় তার আক্রমনে ৩ জন আহত হয়। ঘটনার প্রায় ১০ ঘন্টা পর এলাকাবাসী গলায় ফাঁস দিয়ে বাঘটিকে হত্যা করে। ২০১০ সালের জানুয়ারিতে লোকালয়ে প্রবেশ করে চন্ডিপুরের খোরশেদ আলীর রান্না ঘরের চালের উপর অবস্থান নেয়। গ্রামবাসী বাঘটিকে ঘেরাও করে বনবিভাগ ও পুলিশে খবর দেয়। যার ১২ ঘন্টা অতিবাহিত হলেও বনবিভাগ কোন ব্যবস্থা না নেয়ায় গ্রামবাসী এক প্রকার বাধ্য হয়ে বাঘটিকে পিটিয়ে হত্যা করে। ২০১১ সালের ২৫ মার্চ শ্যামনগরের ভোলা খালী গ্রামে জনতার গণপিটুনিতে মারা যায় আরো একটি বাঘ। ২০১৩ সালের ২১ জুলাই কৈখালি এলাকায় এলাকাবাসী আরো একটি বাঘকে মৃত অবস্থায় দেখতে পায়। এভাবে প্রতি বছর শীত মওসুম এলে সুন্দরবনের পার্শ্ববর্তী লোকালয়ে বাঘের আনাগোনা দেখা গেলেও গত কয়েক বছরে লোকালয়ে বাঘের অনুপ্রবেশ বা আক্রমণ দেখা যায়নি। সেখানকার মানুষের ধারণা, সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা একেবারে কমে গেছে সে জন্য বর্তমানে আর বাঘের দেখা মিলছেনা। যার প্রমাণ, ১৫’ সালের ক্যামেরা ট্রাপিং পদ্ধতিতে পরিচালিত শুমারিতে সুন্দরবনের বাংলাদেশ অংশে বাঘের সংখা ১০৬ টিতে নেমে এসেছে। সূত্র জানায়, সুন্দরবন থেকে পাচার হওয়া ৩ টি বাঘের শাবক ২০১২ সালের ১১ জুন ঢাকার শ্যমলী থেকে উদ্ধার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী র‌্যাব। পরে শাবকগুলোকে ডুলহাজরা সাপারী পার্কে অবমুক্ত করা হয়। সুন্দরবন বিভাগের তথ্যানুযায়ী, ২০১১ সালের আগষ্ট মাসে শিকারী দলের মংলা এলাকার সদস্য জামাল উদ্দীন সাতক্ষীরা এলাকায় বাঘের চামড়া বিক্রি করতে গিয়ে ধরা পড়ে। শিকারী দল ২০১০ ও ২০১১ সালে বেশ তৎপর ছিল। বন বিভাগের তথ্যমতে, ১৯৭১ থেকে এ পর্যন্ত মোট ৭ বার বাঘ শুমারী হয়েছে। তার মধ্যে ১৯৭১ সালের শুমারীতে বাঘের সংখ্যা ছিল ৩২০ টি,১৯৭৫ সালে ৩৫০ টি, ১৯৮০ সালে বাঘের সংখ্যা ছিল ৪৩০ থেকে ৪৫০ টি,১৯৯২ সালে ৩৫৯ টি,১৯৯৩ সালে ৩৬২ টি,২০০৪ সালে ৪৪০টি ও সর্বশেষ ২০১৫ সালে ১০৬ টি বাঘ রয়েছে সুন্দরবনের বাংলাদেশ অংশে। শুমারীগুলোতে দেখা যায়, কখনো বাঘের সংখ্যা কমেছে আবার কখনো বেড়েছে। তবে সর্বশেষ ১৫’ সালের শুমারীর তথ্যানুযায়ী বাঘের সংখ্যা আশংকাজনকহারে হ্্রাস পেয়েছে। তাহলে কি সেখানে বাঘের বংশ বিস্তার ঘটেনি? নাকি বংশবৃদ্ধি হলেও তাদেরকে হত্যা করা হয়েছে ? নাকি নানা প্রতিকূলতায় তারা চলে গেছে সুন্দরবনের ভারতের অংশে? অথচ বিশেষজ্ঞদের মতে বাংলাদেশের সুন্দরবনের পরিবেশ অনুযায়ী সেখানে বাঘ বৃদ্ধির উত্তম কেন্দ্র। এরই মধ্যে সুন্দরবনের নীলকমল,কটকা,কচিখালী ও সাতক্ষীরা রেঞ্জে নাকি বাঘের বাচ্চার দেখা মিলছে। তবে কি নতুন করে বাঘের বংশবিস্তার হচ্ছে? এমন প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে সর্বশেষ বনবিভাগের টাইগার কনজারভেশন এ্যাক্টিভিটি প্রকল্পের আওতায় শেষ হল গণনা প্রকল্প। সুন্দরবনের পশ্চিম বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মুহাম্মদ সাঈদ আলী জানান, প্রকল্পে ৪৫ জন বন কর্মী ৯টি দলে বিভক্ত হয়ে সুন্দরবনের দু’টি অভয়ারণ্য অঞ্চল সহ প্রায় ২ হাজার বর্গফুট এলাকায় ৩৪০টি পয়েন্টের গাছের সাথে সাড়ে ৪শ’ ক্যামেরা স্থাপন করে ১০৩ দিনের তথ্য সংগ্রহ ও মনিটরিং করে। বাঘদের আকৃষ্ট করতে টোপ হিসেবে ব্যবহার করা হয় পাহাড়ি শুটকির গুড়া। মনিটরিংয়ে বিশেষজ্ঞরা বাঘের খাদ্য শৃঙ্খল,প্রজনন,শিকারীদের তৎপরতা সহ বিভিন্ন বিষয়ে মনিটরিং করেন। এজন্য ওয়াশিংটন ডিসির কনজার্ভেশন বায়োলজি ইনস্টিটিউশনের ২ জন বিশেষজ্ঞ গ্যারি এফ কলিন্স ও ক্যাথি ওয়াচয়ালা প্রকল্পের পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন বলে এর আগে জানিয়েছিলেন বনবিভাগের সুন্দরবন সার্কেলের বন সংরক্ষক জহির উদ্দীন আহম্মেদ। সর্বশেষ জরিপে সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা বাড়বে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করে সংশ্লিষ্টরা বলেন, ২০২২ সালের মধ্যে বাঘের সংখ্যা দ্বিগুণ করতে বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় ইতোমধ্যে নানা পদক্ষেপ হাতে নেয়া হয়েছে। বাঘের প্রজনন বাড়াতে আরো ১৮ টি নতুন অভয়ারণ্য করা হচ্ছে। অনুসন্ধানে জানাযায়,একটি পুরুষ বাঘের দৈর্ঘ্য মাথা থেকে লেজ সহ প্রায় সাড়ে ৩ মিটার পর্যন্ত হয়ে থাকে। যার লেজের দৈর্ঘ্য ৮৫ থেকে ৯৫ সেঃমিঃ। গড় ওজন ২০০ থেকে ২৩৬ কেজি পর্যন্ত। এযাবৎ সবচেয়ে বড় বাঘের ওজন ৩৮৮.৭ কেজি পর্যন্ত রেকর্ড করা হয়েছে। স্ত্রী বাঘ আকারে ছোট হয়। দৈর্ঘ্য ৩ মিটার থেকে তার কিছু বেশী হতে পারে। বাঘের পায়ের ছাপ গোলাকৃতির আর বাঘিনীর ছাপ লম্বাটে হয়। বাঘের সারা শরীর হলুদ-কমলা-বাদামি এবং সাদা-কালো লম্বাটে ডোরাকাটা ঢেউ খেলানো দাগ থাকে। প্রচন্ড শক্তিশালী ও ভয়ঙ্কর হিংস্র এই প্রাণী গভীর অরণ্যে নির্জনে থাকতে ভাল বাসে। প্রতিটি বাঘ একেক লাফে ৭/৮ মিটার অতিক্রম ও ৩ মিটার উচুতে উঠতে পারে। এছাড়া এরা ভাল সাঁতার কাটতে পারে। প্রণীটির খাদ্য তালিকায় রয়েছে, হলিণ,শূকর,বনগরু,গয়াল,নীল গাই,হাতি বা গন্ডারের বাচ্চা,মহিষ,কুমির,অজগর এমনকি তারা মাছও খেয়ে থাকে। বাঘ প্রতি সপ্তাহে অন্তত একবার শিকার করে থাকে। তবে শিকারের ওজন ৩০/৪০ কেজির কম হলে আবারো বের হতে হয় তাদের। প্রতিদিন এদের গড় ৭ কেজি খাদ্যের প্রয়োজন হয়। সে জন্য প্রতিটি বাঘের খাদ্য চাহিদা পূরণ করতে বছরে ৩ হাজার ৬৫০ কেজি মাংসের প্রয়োজন। যার ওজন ৭৩ টি চিত্রা হরিণের সমান। প্রায় সব প্রজাতির বাঘ প্রজননক্ষম হয় আড়াই থেকে ৩ বছর বয়সে। বাঘিণীর বাচ্চা ধারণের সময়সীমা ১০৮ দিন। একটি বাঘিণী এক সাথে ২ থেকে ৬ টি পর্যন্ত বাচ্চা প্রসব করে থাকে। বাঘের জীবনকাল ১৪ থেকে ২০ বছর পর্যন্ত হয়ে থাকে। বাংলাদেশ সীমানায় অবস্থিত ১০ হাজার বর্গ কিঃমিঃ এলাকা জুড়ে বিস্তৃত সুন্দরবনের উপর থেকে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলায় সুন্দরবন ব্যবস্থাপনার জন্য ইতোমধ্যে সরকার ৫ হাজার ৬শ’ ৭৯ কোটি ৭৩ লাখ টাকার একটি সহায়তা প্রকল্প হাতে নিয়েছে। যার ১ হাজার ২শ’ ৬৫ কোটি ২৩ লাখ টাকা জিওবি এবং প্রকল্প সাহায্য থেকে ৪ হাজার ৪ শ’ ১৪ কোটি ৫০ লাখ টাকা অর্থায়ন হবে। যা বাস্তবায়ন হবে ২০১৫ সালের মে থেকে শুরু করে ২০১৯ সালের এপ্রিল মাসের মধ্যে বলে টিটিপিতে উলে¬খ করা হয়েছে। প্রকল্পের আওতায় থাকছে, বেজ লাইন সার্ভে ও মনিটরিং,অফিস ভবন/প্যাট্রোল পোষ্ট সংষ্কার,পন্টুন ও গ্যাংওয়ে মেরামোত,কমিউনিটিভিত্তিক সংরক্ষণ কার্যক্রম পরিচালনা,৬০ হাজার কিঃমিঃ বাঁধ নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণ,আন্তর্জাতিক সেবা,দেশি-বিদেশি প্রশিক্ষণ ও ষ্টাডি ট্যুর,যানবাহন ও যন্ত্রপাতি ক্রয়,প্রশিক্ষণ,ওয়ার্কশপ,সেমিনার ও মিটিং আয়োজন করা। ইতোমধ্যে প্রকল্পের প্রায় দু’বছর অতিবাহিত হতে চলেছে। সর্বশেষ ১৫’সালের জরীপে গত ১ দশকে সুন্দর বনের বাঘ কমেছে ৩৪০টি। এর মাত্র ১ বছরের ব্যাবধানে বনবিভাগের দ্বিতীয় দফার ক্যামেরা ট্রাফিংয়ে বাঘের সংখ্যা বাড়বে কিনা এমন প্রশ্নের উত্তর জানতে অপেক্ষা করতে হবে চলতি বছরের আগষ্ট পর্যন্ত, এমনটাই জানিয়েছেন বন বিভাগ।

No comments

Powered by Blogger.