সেই গাছগুলোতে আবার কুড়ালের কোপ

বন বিভাগের অনুমোদন ছাড়াই রাজশাহী নগরে আবার গাছ কাটা শুরু হয়েছে। গত দুই দিনে বর্ণালির মোড় থেকে লক্ষ্মীপুর মোড় পর্যন্ত সড়কের নয়টি কড়ইগাছ কেটেছে সওজ। এই দফায় তারা মোট ১৭টি গাছ কাটবে বলে জানা গেছে। তিন বছর ধরে বিভিন্ন অজুহাতে নগরের বিভিন্ন সড়কের গাছ কাটা চলছে। শুরুতে সৌন্দর্যবর্ধন, পরিবেশ উন্নয়ন ও রাস্তা সম্প্রসারণের নামে সড়কের গাছ কেটেছে সিটি করপোরেশন। এবার গাছগুলোকে ঝুঁকিপূর্ণ বলে কাটছে রাজশাহী সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ। তাদের দাবি, গাছ কাটার জন্য বন বিভাগের অনুমোদনের প্রয়োজন পড়ে না তাদের।
তবে বন বিভাগ বলছে, সরকারি সব সংস্থাকেই বন বিভাগ থেকে মূল্য নির্ধারণ করে অনুমোদন নিতে হয়। সওজ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, তারা এবার বর্ণালির মোড় থেকে লক্ষ্মীপুর মোড় পর্যন্ত সড়কের ১৭টি বড় কড়ইগাছ কাটার জন্য দরপত্র আহ্বান করেছিল। প্রায় এক লাখ টাকায় গাছগুলো বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত নয়টি গাছ কাটা হয়েছে। এভাবে গাছ কাটা দেখে অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। রাজশাহী আবৃত্তি পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শরীফ আহাম্মেদ বলেন, সুন্দর এই গাছগুলো কেন কাটা হচ্ছে, তাঁরা তা বুঝতে পারছেন না। ঝড়ে কোথাও কোনো বাগানের ডাল ভেঙে কেউ আহত হলে বাগানের মালিক তো বাগান কেটে ফেলেন না! কাণ্ড দেখে মনে হচ্ছে, এরা রাজশাহী শহরটাকে মরুভূমি বানিয়ে ফেলছে। সিটি করপোরেশনের দায়িত্বপ্রাপ্ত মেয়র নিজাম-উল-আযীম বলেন, গাছগুলো আসলে সওজের। এর আগে মোসাদ্দেক হোসেন মেয়র থাকার সময়ে কিছু গাছ কেটেছিলেন। এবার সওজ কাটছে।
একটা গাছের ডাল ভেঙে দুর্ঘটনা ঘটেছিল। তারপর সওজ এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সওজ-রাজশাহীর নির্বাহী বৃক্ষপালনবিদ পলাশ সরকার বলেন, গাছগুলো ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যাওয়ায় সিটি করপোরেশন থেকে চিঠি দিয়ে কাটতে বলা হয়েছে। তাই তাঁরা কাটছেন। এরপর তাঁরা নতুন গাছ রোপণ করবেন। বন বিভাগের অনুমোদন প্রশ্নে পলাশ সরকার বলেন, তাঁদের অনুমোদনের প্রয়োজন পড়ে না। তবে রাজশাহী বিভাগীয় বন কর্মকর্তা ইমরান আহাম্মেদ বলেন, ২০১১ সালের বনজ দ্রব্য চলাচলের (ট্রানজিট পাস) বিধি অনুযায়ী বন বিভাগের অনুমোদন ছাড়া সরকারি কোনো সংস্থাই গাছ কাটতে পারবে না। ২০১৫ সালে বর্ণালির মোড় এলাকায় সড়কের বেশ কিছু কড়ইগাছ কাটা হয়। তার আগে ২০১৪ সালের ডিসেম্বর ও মার্চ মাসে সড়ক সম্প্রসারণের নামে বন বিভাগের অনুমতি ছাড়া শ্রীরামপুর এলাকার ফায়ার ব্রিগেড থেকে ভেড়ীপাড়ার মোড় পর্যন্ত প্রায় ৫০টি এবং অক্টোবরে ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের ১৪টি তাজা শিশুগাছ কেটে নেওয়া হয়।

No comments

Powered by Blogger.