বাড়ির মালিকেরা সরিয়ে নিচ্ছেন অবৈধ অংশ

শেওড়াপাড়া বাসস্ট্যান্ড থেকে মধ্য পীরেরবাগ হয়ে সরকারি বাঙলা কলেজ পর্যন্ত সড়কটির নকশা অনুযায়ী প্রস্থ ৩০ ফুট। কিন্তু সড়কের দুই পাশের ভবনের মালিকেরা অবৈধ স্থাপনা গড়ে তোলায় বাস্তবে সড়কটির প্রস্থ এখন কোথাও ১০ ফুট, কোথাও ১৫ ফুট। সড়কটি দখলমুক্ত করতে গত ১৮ জানুয়ারি থেকে উচ্ছেদ শুরু করে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)। জানুয়ারিতে অভিযানে শেওড়াপাড়া থেকে আগারগাঁও ৬০ ফুট পর্যন্ত সড়কে উচ্ছেদ চালানো হয়। সড়কের পীরেরবাগ থেকে বাঙলা কলেজ পর্যন্ত অংশে মার্চ মাসে উচ্ছেদ চালানোর তারিখ নির্ধারিত আছে। তবে এর আগে বাড়ির মালিকেরা নিজেরা অবৈধ অংশ ভেঙে ফেলছেন। রাজউক সূত্রে জানা যায়, নকশা অনুযায়ী পশ্চিম শেওড়াপাড়া থেকে মধ্য পীরেরবাগ, আগারগাঁও ৬০ ফুট সড়ক, দক্ষিণ পাইকপাড়া, কল্যাণপুর নতুন বাজার হয়ে মিরপুর বাঙলা কলেজ পর্যন্ত একটি সংযোগ সড়ক আছে।
প্রায় সাড়ে তিন কিলোমিটার দীর্ঘ সড়কটির দুই পাশের ভবনমালিকেরা নকশাবহির্ভূতভাবে সড়কটির অংশ দখল করে রেখেছেন। রাজউক দীর্ঘদিন ধরে সড়কটি দখলমুক্ত করার চেষ্টা করছে। গত ২ জানুয়ারি ডিএনসিসির সঙ্গে চারটি সংস্থার সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় ডিএনসিসি এলাকার বেশ কিছু সড়কে নকশাবহির্ভূতভাবে বাড়ি নির্মাণ বিষয়ে আলোচনা হয়। এর মধ্যে কল্যাণপুর, পীরেরবাগ, শেওড়াপাড়া পর্যন্ত এই সড়কটিও ছিল। সভায় সড়কগুলো দখলমুক্ত করতে উচ্ছেদ চালানোর সিদ্ধান্ত হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে জানুয়ারি মাসে সড়কটির শেওড়াপাড়া থেকে আগারগাঁও ৬০ ফুট পর্যন্ত অংশে উচ্ছেদ চালানো হয়। উচ্ছেদে দুই শতাধিক ভবনের অংশ ভাঙা পড়ে। সড়কের বাকি অংশে মার্চ মাসে উচ্ছেদ চালানো হবে বলে রাজউকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। এ বিষয়ে রাজউকের অঞ্চল-৩-এর পরিচালক খন্দকার অলিউর রহমান বলেন, শেওড়াপাড়া বাসস্ট্যান্ড থেকে আগারগাঁও ৬০ ফুট সড়ক পর্যন্ত সড়কের জায়গা দখল করে গড়ে তোলা ভবনের অংশবিশেষ ভেঙে ফেলা হচ্ছে। ৬০ ফুট সড়কের অন্য পাশ থেকে বাঙলা কলেজ পর্যন্ত অংশে মার্চে উচ্ছেদ চালানো হবে। গতকাল মঙ্গলবার সড়কটির পীরেরবাগ, শিমুলতলা, ঝিলপাড়, দক্ষিণ পাইকপাড়া এলাকা ঘুরে দেখা যায়, সড়কের পাশের অধিকাংশ ভবনের দেয়াল ভাঙা। কোনো ভবনের সামনে দোকান ছিল, সেটিও ভেঙে ফেলা হয়েছে। বেশ কিছু ভবনের সামনের দেয়াল, দোকান ভাঙার কাজ করছিলেন শ্রমিকেরা।
একজন বাড়ির মালিক নাম না প্রকাশের শর্তে বলেন, সড়ক প্রশস্ত হলে সবাই এর সুবিধা পাবে। রাজউক বুলডোজার দিয়ে ভাঙলে মূল বাড়ির অংশও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে তাই নিজেরাই সরিয়ে নিচ্ছেন। তবে অনেকের বাড়ির নকশায় সামনে ২০ ফুট সড়কসহ অনুমোদন আছে। তাদেরও ৩০ ফুট ভাঙতে হলে সমস্যা হবে। সড়কের এ অংশটি ডিএনসিসির ১১ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্ভুক্ত। ওয়ার্ড কাউন্সিলর দেওয়ান আবদুল মান্নান প্রথম আলোকে বলেন, সড়কের পাশের বাড়ির মালিকেরা দেয়াল তুলে, দোকান তুলেছিলেন সড়কের জায়গায়। কতটুকু সড়কের জায়গা তা নির্ধারণ করে লাল কালি দিয়ে চিহ্নিত করে দেওয়া হয়। অধিকাংশ বাড়ির মালিকেরা নিজ উদ্যোগে সে অনুযায়ী ভেঙে ফেলছেন। গত ২ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত সমন্বয় সভার আলোচ্যসূচিতে দেখা যায়, এই সড়কটি ছাড়াও ডিএনসিসির ১১ নম্বর ওয়ার্ডের বিভিন্ন সড়কে অবৈধ দখল আছে। পুরো ১১ নম্বর ওয়ার্ডে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করা ভবনের সংখ্যা ১ হাজার ১২৩টি। বাকি সড়কগুলোও দখলমুক্ত করতে বাড়ির মালিকদের সঙ্গে আলোচনা হচ্ছে বলে স্থানীয় কাউন্সিলর জানিয়েছেন।

No comments

Powered by Blogger.