বাংলাদেশসহ এ অঞ্চলে বাজার সম্প্রসারণে আগ্রহী ক্যানন

নাউহিকো হায়াসি
বাংলাদেশে ঐতিহ্যগতভাবে জাপানি পণ্যের ব্যাপক কদর রয়েছে। সেই বিবেচনায় এটি খুবই সম্ভাবনাময় একটি বাজার, যেখানে আছে ১৬ কোটি মানুষ। বিশাল জনগোষ্ঠীর এ দেশ দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বাজারের অংশ। সে জন্য এই অঞ্চলে বাজার সম্প্রসারণে আগ্রহী বিশ্বের অন্যতম নামী ব্র্যান্ড ক্যানন। জাপানের বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান ক্যাননের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নাউহিকো হায়াসি সম্প্রতি ঢাকা সফরকালে প্রথম আলোকে এসব কথা বলেছেন। তিনি বলেন, ‘ক্যাননের তৈরি ক্যামেরা, ইমেজিংসহ বিভিন্ন ধরনের প্রযুক্তিপণ্য গুণে-মানে সেরা। প্রতিটি পণ্যের পেছনেই আমরা প্রচুর গবেষণা ও পরিশ্রম করে থাকি।’ নাউহিকো হায়াসি বর্তমানে ক্যানন সিঙ্গাপুরের জ্যেষ্ঠ পরিচালক ও মহাব্যবস্থাপক এবং কনজ্যুমার ইমেজিং অ্যান্ড ইনফরমেশন প্রোডাক্টস গ্রুপের প্রধান হিসেবে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ১৪টি দেশে বিক্রয় ও বিপণন কার্যক্রমের তত্ত্বাবধান করছেন। এক প্রশ্নের জবাবে নাউহিকো হায়াসি বলেন, ‘এশিয়াতে এখন মধ্যবিত্ত শ্রেণির উত্থান হচ্ছে। তাই এ অঞ্চলের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়েই আমরা বিনিয়োগ করে যাচ্ছি। ভবিষ্যতের ভোক্তাদের কথা মাথায় রেখেই ক্যানন “ইমেজ স্কয়ার” নামে নতুন একটি রিটেইল কনসেপ্ট বা ধারণা চালু করবে। ফলে আমাদের কর্মীরা ক্যাননের পণ্য সম্পর্কে ক্রেতাদের বিস্তারিত ধারণা দিতে পারবেন।’ নাউহিকো হায়াসি বলেন, ‘আমরা এ অঞ্চলে খুবই ভালো ব্যবসা করছি। দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বাজারে ৪১ শতাংশ মার্কেট শেয়ার বা বাজার অংশীদারি নিয়ে ক্যানন এখন শীর্ষস্থানে আছে। আর সার্বিকভাবে বিশ্ববাজারে ক্যাননের মার্কেট শেয়ার হলো ৩৮ শতাংশ।’ নির্দিষ্টভাবে বাংলাদেশের বাজার সম্পর্কে নাউহিকো হায়াসির মূল্যায়ন হলো, এখানে আমদানি শুল্ক অনেক বেশি, ৩৬ শতাংশ। এ কারণে নিয়ম মেনে অনেক পণ্য বাজারজাত করা যায় না। আমরা আশা করছি, সরকার আমদানি শুল্ক কমাবে। ফলে ক্রেতারা কম দামে পণ্য কিনতে পারবেন। বাজারে পণ্যের চাহিদা আরও বাড়বে। এতে অনেকেই ফটোগ্রাফির চর্চা করে এটাকে জীবিকা নির্বাহের উপায় হিসেবেও নিতে পারবেন। বর্তমানে স্মার্টফোনে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন ক্যামেরা যুক্ত হচ্ছে, এতে কি ক্যাননের ক্যামেরা বিক্রিতে কোনো প্রভাব পড়ছে? এ প্রশ্নের জবাবে নাউহিকো হায়াসি বলেন, ‘আমি মনে করি, স্মার্টফোনের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধির ফলে অনেক সাধারণ মানুষ ফটোগ্রাফির প্রতি আগ্রহী হচ্ছেন। এতে ভালো মানের ডিএসএলআর (ডিজিটাল সিঙ্গল-লেন্স রিফ্লেক্স) ক্যামেরার বিক্রি বাড়ছে। বাংলাদেশেও এ ধরনের উন্নতমানের ক্যামেরার চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ভবিষ্যতে উন্নতমানের কমপ্যাক্ট ও ডিএসএলআর ক্যামেরার বাজার আরও সম্প্রসারিত হবে।’ বাংলাদেশে ক্যাননের ব্যবসায়িক অংশীদার হলো জে এ এন অ্যাসোসিয়েটস। প্রতিষ্ঠানটি ২১ বছর ধরে ক্যাননের পণ্য দেশের বাজারে আমদানি ও ডিলার নেটওয়ার্কের মাধ্যমে বাজারজাত করে আসছে। নাউহিকো হায়াসি জানান, ক্রেতাদের ক্যানন ব্র্যান্ডের পণ্য কিনতে আগ্রহী করে তুলতে জে এ এন অ্যাসোসিয়েটসকে সঙ্গে নিয়ে রোড শো, আলোকচিত্র প্রতিযোগিতাসহ বিভিন্ন ধরনের প্রমোশন অর্থাৎ উন্নয়নমূলক কার্যক্রম হাতে নেওয়া হবে।

No comments

Powered by Blogger.