জ্বলে উঠলেন সুয়ারেজ, ঝলসে উঠল বার্সেলোনা

বার্সার মুখে ফিরল হাসি!
বার্সেলোনা যেন শ্যাম্পেনের বোতল। তীব্র ঝাঁকুনিতে এত দিন ছিপির মুখে গিয়ে আটকে ছিল সব। এবার শেষ ধাক্কায় একেবারে ছিটকে বেরোল। যেন এত দিন জমিয়ে রাখা সব গোলও একসঙ্গে করে ফেলতে চাইলেন লুইস সুয়ারেজ। দেপোর্তিভো লা করুনিয়াকে কাল ৮-০ গোলে হারিয়ে কক্ষপথে ফিরল বার্সা। আট গোলের সাতটিতেই সুয়ারেজের নাম। নিজে চারটি গোল করেছেন, তিনটি করিয়েছেন। বার্সার বাকি চার গোলদাতার নাম ইভান রাকিতিচ, লিওনেল মেসি, মার্ক বার্ত্রা ও নেইমার।  দিনের অন্য দুই ম্যাচের মাদ্রিদের দুই ক্লাবও জয় তুলে নেওয়ায় পয়েন্ট টেবিলে গা ঘেঁষাঘেঁষি অবশ্য চলছে। ফার্নান্দো তোরেসের একমাত্র গোলে অ্যাথলেটিক বিলবাওকে হারিয়েছে অ্যাটলেটিকো। বার্সার সমান পয়েন্ট নিয়েও মুখোমুখি লড়াইয়ে পিছিয়ে থেকে দুইয়ে ডিয়েগো সিমিওনের দল। ওদিকে সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে করিম বেনজেমা, লুকাস ভাসকুয়েজ ও লুকা মডরিচের গোলে ভিয়ারিয়ালকে ৩-০ গোলে হারিয়েছে রিয়াল। ১ পয়েন্ট পেছনে আছে জিদানের দল। লা লিগায় বাকি আর চার ম্যাচ। টানা তিন ম্যাচ হেরে, চার ম্যাচে ১১ পয়েন্ট খুইয়ে অবশেষে জয় পেল বার্সা। ১১, ২৪, ৫৩ ও ৬৪ মিনিটে গোলগুলো করেছেন সুয়ারেজ। মজার ব্যাপার হচ্ছে, বার্সার আট গোলে ছয়টিই দ্বিতীয়ার্ধে। দলকে ২-০ গোলে এগিয়ে দেওয়ার পর দ্বিতীয়ার্ধের দ্বিতীয় মিনিটে সুয়ারেজের ক্রস থেকে রাকিতিচের দুর্দান্ত ভলি ৩-০ করে দেয়। মেসির ডিফেন্স চেরা পাত থেকে ৫৩ মিনিটে এই মৌসুমে নিজের ষষ্ঠ হ্যাটট্রিক পূর্ণ করেন সুয়ারেজ। নিঃস্বার্থ নেইমার নিজে গোল না করে সুয়ারেজকে বল বাড়িয়ে দিলে মৌসুমে নিজের ৪৯তম গোলটিও করে ফেলেন এই উরুগুইয়ান। পরে ৭৩ ও ৮১ মিনিটে বন্ধু মেসি ও নেইমারকে গোল করিয়ে কৃতজ্ঞতা স্বীকারও করেছেন সুয়ারেজ। এর মধ্যে ৭৯ মিনিটে বার্ত্রার গোল আরও একবার সমর্থকদের হাহাকার বাড়িয়ে দিল, রক্ষণে কেন আরও বেশি সুযোগ পেলেন না এই তরুণ ডিফেন্ডার! সাত গোলে এভাবে নাম লিখিয়ে অতিমানবীয় এক পারফরম্যান্সের পর সুয়ারেজ কিন্তু অতি জরুরি কথাটাই বললেন, ‘আমারও তো মানুষ, যন্ত্র নই। আমাদেরও ভুল হয়, আমরাও বাজে খেলি। তবে আজ আমরা দেখিয়ে দিয়েছি এই দল কতটা একতাবদ্ধ, লিগ জিততে আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে কতটা মরিয়া। সবকিছুই এখনো আমাদের হাতে আছে।’ তা হয়তো আছে। বড় দলগুলোর সাময়িক হোঁচট কাটিয়ে ছন্দে ফিরতে এমন ম্যাচই দরকার। যদিও মাদ্রিদের দুই দলও জানিয়ে দিয়েছে, কচ্ছপের কামড় আলগা হচ্ছে না। বিশেষ করে রিয়াল তো কাল রাতে খেলল দুর্দান্ত। কী পাস আর কী গতি! তবে কাল দুই মাদ্রিদই শুনেছে দুঃসংবাদ। ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো আর ডিয়েগো গডিন পড়েছেন ইনজুরিতে।

No comments

Powered by Blogger.