নুরুল হাসানের‘শিক্ষাসফর’by রানা আব্বাস

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে নুরুলের সুযোগ হয়নি একটি ম্যাচও খেলার।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সুপার টেনে ব্যর্থতায় বাংলাদেশ দলের সবাইকে সমালোচনার কাঠগড়ায় দাঁড় করালেও একজনকে অবশ্য পারবেন না—নুরুল হাসান। যে পুরো টুর্নামেন্টে মাঠেই নামতে পারেননি, তাঁর পারফরম্যান্স বিশ্লেষণ করবেন কীভাবে? নাসির হোসেনের তবুও সান্ত্বনা, খেলেছেন ১ ম্যাচ। নুরুলের সান্ত্বনা কি? দলের সবাই ফিরেছে ব্যর্থতার হতাশা নিয়ে। নুরুলের ক্ষেত্রে দলের ব্যর্থতার হতাশার সঙ্গে যোগ হয়েছে খেলতে না পারার আক্ষেপ। অবশ্য তাঁর নিষ্পাপ চেহারায় সেই আক্ষেপ কিংবা হতাশা খুঁজে পাওয়া কঠিনই। মিষ্টি হাসিটা যে লেগেই থাকে তাঁর মুখে। সেই হাসিটা আরও একবার হেসেই বললেন, ‘টিম ম্যানেজমেন্ট যা ভালো মনে করেছে, তাই করেছে।’ বছরটা তাঁর শুরুটা অবশ্য হয়েছিল এন্তার সুসংবাদ দিয়ে। জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে ডাক পেলেন বাংলাদেশ দলের প্রাথমিক দলে। বেশ চমকে দিয়ে সুযোগ পেলেন জিম্বাবুয়ে সিরিজেও। দুর্দান্ত উইকেটকিপার, লোয়ার মিডল অর্ডারে চটপটে ব্যাটসম্যান—তাঁকে দলে নেওয়ার পেছনে এই ছিল প্রধান যুক্তি। নিজের শহর খুলনায় হয়ে গেল আন্তর্জাতিক অভিষেক। শুরুটা একেবারে মন্দ হয়নি। জিম্বাবুয়ে সিরিজে ৪ ম্যাচে ৫২ গড়ে করলেন ৫২ রান। এশিয়া কাপে খেললেন শ্রীলঙ্কা ও আরব আমিরাতের বিপক্ষে ম্যাচ দুটিও। কিন্তু টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সুযোগই হলো না নুরুলের। দলের সঙ্গে এ ভেন্যু, ও ভেন্যু করেই কেটেছে পুরো টুর্নামেন্ট। সব মিলে ‘ভারত-ভ্রমণ’টা ভালোই হয়েছে নুরুলের! ভ্রমণের অভিজ্ঞতা বলতে গিয়ে ধর্মশালার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে মুগ্ধতার কথা শোনালেন। বেঙ্গালুরুতে ঘোরাঘুরিটা মন্দ হয়নি। কলকাতায় অবশ্য বেশিরভাগ সময় থাকতে হয়েছে হোটেলবন্দী হয়ে। এই প্রথম বাংলাদেশ দলের হয়ে গেলেন বিদেশ সফরে। টুর্নামেন্টকে তিনি দেখছেন ‘শিক্ষাসফর’ হিসেবেই, ‘মাঠে নামতে না পারলেও এত বড় আসরে প্রথম যাওয়ার অভিজ্ঞতা হলো। অনেক কিছু শিখেছি। কোচের কাছ থেকে নানা পরামর্শ পেয়েছি। সিনিয়র খেলোয়াড়দের কাছে থেকেও অনেক কিছু জানতে পেরেছি, যেগুলো ভবিষ্যতে কাজে দেবে।’ বাংলাদেশ দলের এই উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যানের কাছে দলের প্রয়োজনই বড়। সমন্বয়, প্রতিপক্ষ, মাঠ, কন্ডিশন—নানা বিবেচনায় থেকেছেন একাদশের বাইরে। তবে দলের ব্যর্থতা ভীষণ স্পর্শ করছে তাঁকেও, ‘ভারতের সঙ্গে ম্যাচটা হেরে আসলে সবারই মন খারাপ। ভারতকে হারাতে পারলে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচটি অন্যরকম হতে পারত। দল হিসেবে ভালো করলে অনেক বেশি ভালো লাগত। আমার ম্যাচ না খেলার আফসোসও পুষিয়ে যেত।’ না খেলেও ব্যর্থতার অংশীদার হওয়া কতটা যন্ত্রণার, নুরুলের চেয়ে ভালো বুঝবে কে! তবে তিনি নিশ্চয় চাইবেন, ভবিষ্যতে একাদশে নিজের জায়গাটা আদায় করে নিয়েই দলের সাফল্যের সারথি হতে।

No comments

Powered by Blogger.