স্বামীকে খুন করে গোয়ালঘরে পুঁতে রাখে স্ত্রী!

স্বামী হত্যার দায়ে আটক ফাতেমা বেগম
নিখোঁজের ৩৮ দিন পর গোয়ালঘর থেকে এক শ্রমিকের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। রোববার বেলা ১১টার দিকে চিনিকলের স্টাফ কোয়ার্টাররের একটি গোয়ালঘর থেকে তার গলিত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ । এ ঘটনায় নিহত মোবারকগঞ্জ চিনিকলের মেকানিক রফিউদ্দিন (৫০)-এর স্ত্রীসহ দুইজনকে আটক করেছে পুলিশ।
কালীগঞ্জ থানার ওসি মো: আনোয়ার হোসেন জানান, শনিবার বিকালে স্ত্রী ফাতেমাকে ( ৪৫) আটকের পর তার দেয়া তথ্যমতে রোববার চিনিকলের স্টাফকোয়ার্টারের একটি গোয়াল ঘরের মেঝেতে পুতে রাখা রফিউদ্দিনের গলিত লাশ উদ্ধার করা হয়। তিনি আরো জানান রফিউদ্দিনকে পরিকল্পিতভাবে হত্যার পরে দুই পা কেটে একটি পলি ব্যাগে ভরে নিজ কোয়ার্টারের সামনের গোয়াল ঘরের মেঝেতে গর্ত খুঁড়ে পুতে রাখা হয়। এরপর গর্তের ওপরের অংশে সিমেন্ট বালু দিয়ে প্লাস্টার করে দেয়া হয় । জিজ্ঞাসাবাদের জন্য  আনিচ ভুইয়া নামে চিনিকলের আরো এক শ্রমিককে আটক করা হয়েছে ।
চিনিকলের উপ ব্যবস্থাপক পরিবহণ বিভাগ মো: কামরুল ইসলাম জানান গত ২৬ মার্চ বাড়ি থেকে বের হওয়ার পরে নিখোঁজ হন ম্যাকানিক মাগুরা জেলার শ্রীপুর উপজেলার বারুইপাড়া গ্রামের মৃত তাইজুদ্দিন শেখের ছেলে ৩ সন্তানের পিতা মো: রফিউদ্দিন শেখ । এরপর চিনিকল কর্তৃপক্ষ থানায় একটি ডায়রি করেন । নিখোঁজ সংবাদ প্রকাশ করা হয় স্থানীয় একটি পত্রিকায় । একপর্যায়ে গতকাল শনিবার রফিউদ্দিনের স্ত্রী ফাতেমাকে আটক করে পুলিশ । এরপর তার লাশ পাওয়া যায় । ফাতেমা নিহতের নিজ গ্রামের মৃত হাবিবর রহমানের মেয়ে । তাদের বিয়ে হয়েছে প্রায় ১৮ বছর আগে।  দুই ছেলে এক মেয়ের জনক জননী তারা । এক মাত্র মেয়ের বিয়ে হয়েছে ।
সংশ্লিষ্ট প্রাথমিকভাবে পারিবারিক দ্বন্দ্বের জের ধরে এ হত্যার ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে জানান তিনি ।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ঘটনার দিন (২৬ মার্চ) ঘটনার দিন রাতে কথাকাটাকাটির এক পর্যায়ে শাবল দিয়ে তার মাথায় আঘাত করা হয় । এতেই মারা যায় সে । এরপর পেশাদার কিলার দিয়ে রফিউদ্দিনের দুই পা কেটে বডি ছোট করা হয় । লাশ একটি বড় পলি ব্যাগে ভরে বাড়ির সামনের গোয়াল ঘরের মেঝেতে বিশাল একটি গর্ত খুঁড়ে পুতে রাখা হয় । আগে থেকেই আনা হয় বালি ও সিমেন্ট । পরিকল্না মোতাবেক গর্তের উপরিভাগ প্লাষ্টার করে দেয়া হয় । ঘাতক স্ত্রী সহ পরিবারের সদস্যরা স্বাভাবিকভাবে চলাচল করতে থাকে । শনিবার নিহতের ছোট ভাই বাবর আলী ঘটনা জানতে পারেন এবং সে পুলিশকে খবর দেয় । এরপর পুলিশ প্রথমে স্ত্রী ফাতেমা ও তার সহযোগি নবাবগঞ্জ উপজেলার চৌকিখাটা গ্রামের মৃত দাগন ভুইয়ার ছেলে চিনি কলের শ্রমিক আনিচ ভুইয়াকে আটক করে । এ ঘটনায় থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে । দুপুরে নিহতের  লাশ ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ময়না তদন্ত শেষে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

No comments

Powered by Blogger.