১৫০০ মিটার সাঁতার কেটে ‘শতবর্ষী তরুণী’র বিশ্বরেকর্ড

বয়সটা সত্যি কোন বাধা নয়। শরীর বুড়িয়ে গেলেও, মনটা যদি চিরতরুণ থাকে তবে হিমালয়সম বাধা অতিক্রমের সামর্থ্য না থাকুক, প্রাণ খুলে হাসতে তো পারবেন! অপরূপ প্রকৃতির মধ্য দিয়ে হেঁটে সৌন্দর্যটাকে নিজের মধ্যে ধারণ তো করতে পারবেন! জাপানের এক শতবর্ষী নারী সেটাই করে দেখিয়েছেন। নতুন করে শিখিয়েছেন চিরতরুণ বা চিরতরুণীর সংজ্ঞা। বিশ্বাস করুন বা নাই করুন, ফ্রিস্টাইল সাঁতারে জাপানের ১০০ বছর বয়সী ‘তরুণী’ মিয়েকো নাগাওকা সাঁতার কেটে ১,৫০০ মিটারের দূরত্ব পাড়ি দিয়েছেন। আর তা করতে তিনি সময় নিয়েছেন মাত্র ১ ঘণ্টা ১৬ মিনিট। বিশ্বরেকর্ড তিনি গড়ে ফেলেছেন। এখন শুধু আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতির অপেক্ষা। গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস কর্তৃপক্ষ তার এ অসামান্য কৃতিত্বকে বিশ্বসেরার মর্যাদা দেবে অচিরেই, এমনটা আশা করা হচ্ছে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন গার্ডিয়ান। শহুরে কয়জন তরুণ বা তরুণী এ কাজটি করার সামর্থ্য দেখাতে পারবেন, সেটাও বোধ হয় প্রশ্নবোধক ও বিস্ময়-চিহ্নের আড়ালে থেকে যাবে। হ্যাঁ, তিনি যা করেছেন, সেরকম দম রেখে সাঁতার কাটা আজকের দিনের শহুরে তরুণ-তরুণীদের জন্যও বড় চ্যালেঞ্জ। গত শনিবার জাপানের পশ্চিমাঞ্চলীয় এহিম এলাকার একটি সুইমিং পুলে এ কৃতিত্ব গড়েন ‘শতবর্ষী তরুণী’ মিয়েকো। ১০০-১০৪ বছর বয়সী ক্যাটিগরিতে একমাত্র প্রতিযোগী হিসেবে অংশ নেন তিনি। শুধু তাই নয়। মিয়েকো বলেছেন, যদি ১০৫ বছর পর্যন্ত বাঁচি, আমি সাঁতার কাটতে চাই। এখানেই শেষ নয়। লেখালেখির মতো অসামান্য ধৈর্য্যরে কাজও তিনি করে চলেছেন এ বয়সে। মিয়েকো নাগাওকার একটি বইও গত বছর প্রকাশিত হয়। সেখানে তিনি লিখেছিলেন, আমার বয়স ১০০ বছর এবং আমি বিশ্বের সেরা সক্রিয় সাঁতারু। আত্মবিশ্বাসেও বলীয়ান এ ‘শতবর্ষী তরুণী’। অলিম্পিকের যে ধরনের বড় সুইমিং পুল থাকে, ৯৯ বছর বয়সে সে ধরনের একটি সুইমিং পুলেও আয়োজিত ফ্রিস্টাইল সাঁতার প্রতিযোগিতায় ১,৫০০ মিটার দূরত্ব অতিক্রম করেছিলেন। ৮০ বছর বয়স থেকে সাঁতার প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে শুরু করেন তিনি। বিশ্বে নারীদের গড় আয়ুর দিক থেকে এগিয়ে জাপান। ২০১৩ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, জাপানে নারীদের গড় আয়ু ছিল ৮৬ দশমিক ৬১ বছর। সে বছর জাপানের পুরুষদের গড় আয়ু ছিল ৮০ দশমিক ২১ বছর। বিশ্বের সবচেয়ে প্রবীণ ব্যক্তিও ছিলেন জাপানের মিসাও ওকাওয়া নামের এক নারী। সম্প্রতি তিনি মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ১১৭ বছর। জাপানের সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত বছরের সেপ্টেম্বরে জাপানে প্রায় ৫৯,০০০ শতবর্ষী মানুষ ছিলেন। যার অর্থ, জাপানের প্রতি ১ লাখ মানুষের মধ্যে ৪৬ জনের বয়স ১০০ বছর বা তার বেশি।

No comments

Powered by Blogger.