জরুরি ভিত্তিতে কামারুজ্জামানের মৃত্যুদণ্ড স্থগিতে ইইউ ও জাতিসংঘের আহ্বান

জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার জরুরি ভিত্তিতে জামায়াতে ইসলামীর নেতা মুহাম্মদ কামারুজ্জামানের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর স্থগিতের আহ্বান জানিয়েছেন। গতকাল জেনেভায় আয়োজিত এক প্রেস-ব্রিফিংয়ে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাই-কমিশনারের মুখপাত্র রাভিনা শামদাসানি এ আহ্বান জানান। ওই ব্রিফিংয়ে মুখপাত্র বলেন, আমরা বাংলাদেশ সরকারকে জরুরি ভিত্তিতে জামায়াতে ইসলামীর নেতা মুহাম্মদ কামারুজ্জামানের মৃত্যুদ- স্থগিতের আহ্বান জানাচ্ছি। এতে বলা হয়, রিপোর্ট অনুযায়ী, সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ কামারুজ্জামানের রিভিউ (রায় পুনর্বিবেচনা) আবেদনটি খারিজ করে দেয়ায় তার ফাঁসি আসন্ন। হাইকমিশনারের মুখপাত্র বলেন, বিচারের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক মানদ- অনুসরণ না করা এবং অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। বাংলাদেশে বিদ্যমান মৃত্যুদন্ডের যে বিধান রয়েছে, সেটারও বিরোধিতা করেন জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক কমিশনার। ওই ব্রিফিংয়ে বলা হয়, আন্তজাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে (আইসিটি) যুদ্ধাপরাধ মামলাসমূহ পরিচালনার ক্ষেত্রে স্বচ্ছতার বিষয়ে গুরুতর উদ্বেগের পরিস্থিতি বিবেচনায় বাংলাদেশ সরকারের মৃত্যুদন্ডের রায়সমূহ কার্যকর করা উচিত নয় বলে জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় দীর্ঘদিন থেকেই সতর্ক করছে। তিনি বলেন, ২০১০ সালে যুদ্ধাপরাধের বিচার শুরু হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত আইসিটি বিরোধী দল জামায়াতে ইসলামী ও বিএনপি’র সদস্যদের বিরুদ্ধে ১৬টি রায় প্রদান করেছে, যার মধ্যে ১৪টিই মৃত্যুদন্ডের রায়।
ফাঁসি মুলতবি করার আহ্বান ইউরোপীয় ইউনিয়নের
জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ কামারুজ্জামানের শাস্তি  বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট মৃত্যুদন্ড নিশ্চিত করার প্রেক্ষিতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন সব মামলা ও যেকোন অবস্থায় সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ডের বিরোধিতা করেছে। তারা এর বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে আবারও তাদের অবস্থান পরিষ্কার করেছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের এক বিবৃতিতে এ কথা বলা হয়েছে। এতে বলা হয়, বাংলাদেশে মুহাম্মদ কামারুজ্জামানের ফাঁসি অত্যাসন্ন হওয়ার প্রেক্ষিতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের মুখপাত্র ওই বিবৃতি দিয়েছেন। এতে বলা হয়, বিশ্বজুড়ে মৃত্যুদন্ড বাতিল করার আহ্বান জানিয়ে আসছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। এতে বলা হয়, সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ড কোন অপরাধের প্রতিকার নয় এবং এতে সুষ্ঠু বিচার করতে আদালতের যে ব্যর্থতা তা অপরিবর্তনীয় থেকে যায়। তাই ইউরোপীয় ইউনিয়ন সব রকমের মৃত্যুদ- শিথিল করতে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে। একই সঙ্গে সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসি বাতিলের প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে বাংলাদেশ সরকারকে মৃত্যুদন্ড মুলতবি করার আহ্বান জানানো হয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.